পিঠাপিঠি ম্যাচ হওয়ায় প্রথম ম্যাচের ভুল শুধরে নেওয়ার বেশি সময় পাচ্ছে না বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে হারের পরদিনই নুরুল হাসান সোহানের দলকে নেমে পড়তে হচ্ছে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে রোববার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর চার সিরিজ মিলিয়ে ৯ ম্যাচের আটটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। একমাত্র জয়টি এসেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে পেতে হয়েছে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার তেতো স্বাদ।
ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে হারের পর এসেছে অনেক পরিবর্তন। নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে বিশ্রাম দিয়ে অধিনায়ক করা হয়েছে সোহানকে। সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমদেরও বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।
তাদের অনুপস্থিতিতে প্রথম পরীক্ষায় উৎরাতে পারেনি সোহানের দল। দায় মূলত শেষের বাজে বোলিংয়েরই। শেষ ১০ ওভারে তারা দেন ১৩১ রান! ম্যাচ শেষে ৫-৬ ওভারে এলোমেলো বোলিংকেই হারের জন্য দায় দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে ব্যাটিংয়েও ঘাটতি ছিল বেশ।
ওভার প্রতি যেখানে শুরু থেকে ১০ রানের বেশি প্রয়োজন ছিল সেখানে এনামুল হক ২৭ বল খেলে করেন ২৬ রান! শেষ দিকে সোহানকে যথেষ্ট স্ট্রাইক দিতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন। ওপেনিংয়ে ফের ব্যর্থ মুনিম শাহরিয়ার।
তৃতীয় ম্যাচ পর্যন্ত সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার পথটা তাই সহজ নয় সোহানদের জন্য।
আবারও টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন ক্রেইগ আরভিন। এবারও ব্যাটিং নিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে।
আগের ম্যাচে খরুচে বোলিং করা বাংলাদেশ একাদশে দুটি পরিবর্তন এনেছে। দুটিই বোলিংয়ে। তাসকিন আহমেদের জায়গায় এসেছেন আরেক পেসার হাসান মাহমুদ। ২০২০ সালের মার্চে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিল তার। চোটপ্রবণ এই তরুণের সেটাই এই সংস্করণে একমাত্র ম্যাচ।
বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের জায়গায় ফিরেছেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান।
বাংলাদেশ দল: লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, শেখ মেহেদি হাসান।
রানের পাহাড় গড়ে প্রথম ম্যাচে ১৭ রানে জেতা জিম্বাবুয়ে একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব থেকে মোটামুটি একই দল নিয়ে খেলছে তারা।
জিম্বাবুয়ে দল: রেজিস চাকাভা, ক্রেইগ আরভিন, শন উইলিয়ামস, ওয়েসলি মাধেভেরে, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা, রায়ান বার্ল, তানাকা চিভাঙ্গা, লুক জঙ্গুয়ে, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, রিচার্ড এনগারাভা।
চার বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলা বাংলাদেশ বোলিং শুরু করে মোসাদ্দেক হোসেনকে দিয়ে। প্রথম বলেই এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার এনে দেন উইকেট!
এমন আহামরী কোনো ডেলিভারি ছিল না। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে সজোরে মারতে চেয়েছিলেন রেজিস চাকাভা। ঠিক মতো খেলতে পারেননি তিনি, ক্যাচ যায় নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।
টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম ম্যাচের প্রথম ওভারে বোলিং করলেন মোসাদ্দেক।
ক্রিজে ক্রেইগ আরভিনের সঙ্গী প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ভোগানো ওয়েসলি মাধেভেরে।
টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ইনিংসের প্রথম ওভার করতে এসে মোসাদ্দেক হোসেন ধরলেন জোড়া শিকার। প্রথম বলে রেজিস চাকাভাকে বিদায় করার পর ওভারের শেষ বলে নিলেন ওয়েসলি মাধেভেরের উইকেট।
ক্রিজে যাওয়ার একটু পরেই সুইপ করে চার মেরেছিলেন গত ম্যাচে বাংলাদেশকে ভোগানো এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। কিন্তু শেষ বলে বাজে শট খেলে উইকেট উপহার দিলেন মাধেভেরে।
অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ ডেলিভারি জায়গায় দাঁড়িয়ে চালিয়ে দেন তিনি। যতটা তুলতে চেয়েছিলেন ততটা পারেননি। কাভার পয়েন্টে ক্যাচ জমান মেহেদি হাসান।
৫ বলে চার রান করেন মাধেভেরে।
১ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ২ উইকেটে ৫। ক্রিজে ক্রেইগ আরভিনের সঙ্গী আগের ম্যাচে ঝড় তোলার সিকান্দার রাজা।
টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কখনও দুই উইকেটের বেশি না পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন প্রথম দুই ওভারে ধরলেন তিন শিকার। স্বাভাবিকভাবেই যা তার ক্যারিয়ার সেরা।
মোসাদ্দেক ও শেখ মেহেদি হাসানের ওভার মিলিয়ে টানা ৭ বল ডট খেলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। ওই চাপ মোসাদ্দেককে রিভার্স সুইপ করে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ক্রেইগ আরভিন। সেই চেষ্টায় বিপদ ডেকে আনেন স্বাগতিক অধিনায়ক। স্লিপে ক্যাচ নেন লিটন দাস।
দুই বল পর সুইপ করে রানের খাতা খোলেন শন উইলিয়ামস।
৩ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৩ উইকেটে ১০। ক্রিজে উইলিয়ামসের সঙ্গী সিকান্দার রাজা। প্রথম ৫ বলে তিনি খুলতে পারেননি রানের খাতা।
চার বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলায় মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়েই হয়তো বেশি চিন্তায় ছিল বাংলাদেশ। তবে এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারই শুরুতে নাড়িয়ে দিলেন স্বাগতিকদের।
প্রথম পাঁচ ওভারে চার উইকেট হারাল জিম্বাবুয়ে। সবকটি উইকেট নিলেন মোসাদ্দেক।
তার তৃতীয় ওভারের প্রথম বল সিকান্দার রাজার ব্যাটের কানায় লেগে ফাঁকা স্লিপ দিয়ে হয় চার। এক বল পর স্ট্রাইক পেয়ে বেরিয়ে গিয়ে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টা করেন উইলিয়ামস। তাকে এগোতে দেখে বল টেনে দেন মোসাদ্দেক। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পারেননি টাইমিং করতে, ফিরতি ক্যাচ নেন বোলার।
৭ বলে দুই চারে ৮ রান করেন উইলিয়ামস। আগের ম্যাচে ঝড় তোলা সিকান্দার রাজা এবার অষ্টম বলে খুলতে পারেন রানের খাতা।
৫ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৪ উইকেটে ২০। ক্রিজে রাজার সঙ্গী মিল্টন শুম্বা।
বল হাতে দুর্দান্ত এক দিন কাটল মোসাদ্দেক হোসেনের। চার ওভারের স্পেলের প্রতিটিতেই নিলেন অন্তত এক উইকেট। পেলেন পাঁচ উইকেটের অনির্বচনীয় স্বাদ।
নিজের শেষ ওভারে এসে মিল্টন শুম্বাকে বিদায় করেন মোসাদ্দেক। অফ স্টাম্পের বল সুইপ করেন জিম্বাবুয়ের বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে কিছুটা দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ এক ক্যাচ নেন হাসান মাহমুদ।
এই উইকেটে বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে পাঁচ উইকেট নিলেন মোসাদ্দেক। এই অফ স্পিনারের আগে পেয়েছিলেন ইলিয়াস সানি, সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান।
টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কোনো ম্যাচে ২ উইকেটের বেশি ছিল না মোসাদ্দেকের। এবার তিনি চার ওভারের টানা স্পেলে ২০ রানে পেলেন পাঁচটি। তার স্পিনেই বিপদে জিম্বাবুয়ে।
৭ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৫ উইকেটে ৩২। ক্রিজে সিকান্দার রাজার সঙ্গী রায়ান বার্ল।
মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ভীষণ চাপের মধ্যে রয়েছে জিম্বাবুয়ে। ১০ ওভার শেষে স্বাগতিকদের রান ৫ উইকেটে ৪৬। দুই চারে ২৬ বলে ২৪ রানে খেলছেন সিকান্দার রাজা। ৯ বলে ৩ রান নিয়ে তার সঙ্গী রায়ান বার্ল।
দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা জিম্বাবুয়ে লড়াই করছে সিকান্দার রাজা ও রায়ার্ন বার্লের ব্যাটে। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দুই জনে ৪৬ বলে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি।
১২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ছিল ৫ উইকেটে ৫৫।
ত্রয়োদশ ওভারে বোলিংয়ে এসে ১২ রান দেন আফিফ হোসেন। লেগ স্টাম্পে ফুলটস দিয়ে রাজার ব্যাটে হজম করেন ছক্কা। পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম দেন ৮ রান।
আগের দিন রান দেওয়ার ফিফটি করা মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম দুই ওভারে দেন কেবল ৮ রান। তার তৃতীয় ওভার থেকে আসে ১২ রান। এই ওভারেই সিঙ্গেল নিয়ে ৪৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন রাজা। সিরিজে এটি তার টানা দ্বিতীয় ফিফটি।
১৫ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৫ উইকেটে ৮৭। রাজা ৪৪ বলে ৫০ ও বার্ল ২১ বলে ১৮ রানে খেলছেন।
দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার পেলেন হাসান মাহমুদ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে নিজের শেষ ওভারে রায়ার্ন বার্লকে বোল্ড করে ভাঙলেন বিপজ্জনক জুটি।
অফ স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ ডেলিভারিতে টেনে খেলেতে চেয়েছিলেন বার্ল। ঠিক মতো পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান, হয়ে যান ‘প্লেইড অন।’ ভাঙে ৬৫ বল স্থায়ী ৮০ রানের জুটি। টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ উইকেটে জিম্বাবুয়ের এর চেয়ে বড় জুটি আছে কেবল দুটি।
৩১ বলে তিন চারে ৩২ রান করে বার্ল।
১৮ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৬ উইকেটে ১১৩। ক্রিজে সিকান্দার রাজার সঙ্গী লুক জঙ্গুয়ে।
এনামুল হক শর্ট ফাইন লেগে মিস ফিল্ডিং না করলে হয়তো স্ট্রাইকেই থাকা হতো না সিকান্দার রাজা। তবে এক রানের জায়গায় দুই রান হওয়ায় ধরে রাখলেন স্ট্রাইক। মুস্তাফিজুর রহমানের পরের বল ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ধরা পড়লেন মুনিম শাহরিয়ারের হাতে।
৫৩ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৬২ রান করেন রাজা।
১৯ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৭ উইকেটে ১২৩। ক্রিজে লুক জঙ্গুয়ের সঙ্গী ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
মোসাদ্দেক হোসেনের অসাধারণ বোলিংয়ের পর এগিয়ে আসতে পারলেন না আর কেউ। সিকান্দার রাজার ফিফটি ও রায়ান বার্লের সঙ্গে তার ৮০ রানের জুটিতে লড়াই করার মতো রান পেল জিম্বাবুয়ে। সিরিজে টিকে থাকতে বাংলাদেশ পেল ১৩৬ রানের লক্ষ্য।
ভীষণ বাজে শুরুর পর ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে করেছে ১৩৫ রান।
এই দুই ব্যাটসম্যানের বাইরে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন কেবল লুক জঙ্গুয়ে।
২০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মোসাদ্দেক। একটি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (চাকাভা ০, আরভিন ১, মাধেভেরে ৪, রাজা ৬২, উইলিয়ামস ৮, শুম্বা ৩, বার্ল ৩২, জঙ্গুয়ে ১০, মাসাকাদজা ৬, এনগারাভা ০*; মোসাদ্দেক ৪-০-২০-৫, মেহেদি ৩-০-১০-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩০-১, শরিফুল ৪-০-৩৭-০, হাসান ৪-০-২৬-১, আফিফ ১-০-১২-০)
প্রথম ওভারে বাউন্ডারি মারলেও খুব একটা স্বচ্ছন্দ ছিলেন না মুনিম শাহরিয়ার। রিচার্ড এনগারাভার স্লোয়ারে ফিরলেন বোল্ড হয়ে।
স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন মুনিম। যেতে পারেননি লাইন, এলোমেলো হয়ে যায় স্টাম্প। ভাঙে ৩৭ রানের জুটি।
৮ বলে এক চারে ৭ রান করেন মুনিম।
অন্য প্রান্তে ঝড় তুলেছেন লিটন দাস। প্রথম ৯ বলে কেবল ৪ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান তানাকা চিভাঙ্গার ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে নিয়েছেন ১৭ রান। পরে এনগারাভাকেও মেরেছেন চার।
৫ ওভারে বাংলাদেশের ১ উইকেটে ৪৩। ২০ বলে ৩১ রানে ব্যাট করছেন লিটন। ২ বলে এনামুল হকের রান ৫।
আগের ম্যাচে সম্ভাবনা জাগিয়েও আগেভাগেই থেমে যান লিটন দাস। এবার তিনি চার মেরে স্পর্শ করলেন পঞ্চাশ, ৩০ বলে।
টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ষষ্ঠ ফিফটি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয়।
দলকে দারুণ সূচনা এনে দেওয়ার পথে ছয় চারের পাশে লিটন মেরেছেন দুটি ছক্কা।
৮ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৭১। লিটন ৫১ ও এনামুল হক ১৩ রানে ব্যাট করছেন।
চমৎকার ব্যাটিংয়ে ফিফটি করার পর বেশিদূর যেতে পারলেন না লিটন দাস। শন উইলিয়ামসের বলে ফিরে গেলেন এলবিডব্লিউ হয়ে।
বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে ফুল লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করার চেষ্টা করেন লিটন। ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। বল হয়তো লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যেতে পারতো। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেওয়ায় ভীষণ হতাশ দেখায় ব্যাটসম্যানকে।
এনামুল হকের সঙ্গে ২৭ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন লিটন। তিনি ৩৩ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে করেন ৫৬ রান।
৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৭৮। ক্রিজে এনামুলের সঙ্গী আফিফ হোসেন।
রান রেটের কোনো চাপ নেই, সময় আছে যথেষ্ট। বড় শট খেলার কোনো প্রয়োজন নেই। ক্রিজে মোটামুটি থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। আগের ওভারে লিটন দাস আউট হয়ে যাওয়ায়, টিকে থাকাই তখন বেশি জরুরি। এমন সময়ে বাজে এক শটে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন এনামুল হক।
দশম ওভারে আক্রমণে এসেই উইকেট পান সিকান্দার রাজা। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডাররের লেগ স্টাম্পের ডেলিভারি গায়ের জোরে লেগে খেলার চেষ্টা করেন এনামুল। শট না ছিল জোর, না ছিল টাইমিং। সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
১৫ বলে দুই চারে ১৬ রান করেন এনামুল। আগের ম্যাচে ২৭ বলে দুই ছক্কায় করেছিলেন ২৬।
১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৮২। ক্রিজে আফিফ হোসেনের সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত। জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে ৫৪ রান চাই সফরকারীদের।
লিটন দাসের পর এনামুল হকের দ্রুত বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়া বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছেন আফিফ হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। চতুর্থ উইকেটে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি, ৪৩ বলে।
তাদের এই জুটিতে জয়ের দুয়ারে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে টানা পাঁচ হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পর লিটন দাসের ফিফটিতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে নুরুল হাসান সোহান।
জিম্বাবুয়ের ১৩৫ রান পেরিয়ে গেছে ১৫ বল বাকি থাকতে।
২৮ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন। ২১ বলে এক চারে ১৯ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
হার দিয়ে শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ের আনন্দে ভাসলেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। আগামী মঙ্গলবার সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে তার দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (চাকাভা ০, আরভিন ১, মাধেভেরে ৪, রাজা ৬২, উইলিয়ামস ৮, শুম্বা ৩, বার্ল ৩২, জঙ্গুয়ে ১০, মাসাকাদজা ৬, এনগারাভা ০*; মোসাদ্দেক ৪-০-২০-৫, মেহেদি ৩-০-১০-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩০-১, শরিফুল ৪-০-৩৭-০, হাসান ৪-০-২৬-১, আফিফ ১-০-১২-০)
বাংলাদেশ: ১৭.৩ ওভারে ১৩৬/৩ (লিটন ৫৬, মুনিম ৭, এনামুল ১৬, আফিফ ৩০*, শান্ত ১৯*; মাসাকাদজা ৩-০-২২-০, এনগাভা ৩-০-২৩-১, চিভাঙ্গা ১.৩-০-১৯-০, উইলিয়ামস ২-০-১৩-১, বার্ল ১-০-১২-০, রাজা ৩-০-১৮-১, মাধেভেরে ৩-০-১৮-০, জঙ্গুয়ে ১-০-৭-০)