শ্রীলঙ্কাকে তিনশ রানের নিচে থামিয়ে প্রথম দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ।
Published : 22 Mar 2024, 08:40 AM
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০
বাংলাদেশ ১ম ইনিং: ১০ ওভারে ৩২/৩
সাদা বলের দুই সিরিজের পর এবার টেস্ট ক্রিকেটে মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু হচ্ছে শুক্রবার। মাঠের লড়াই শুরু সকাল ১০টায়।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দুই দলেরই এটি দ্বিতীয় সিরিজ। প্রথম দুই ম্যাচে একটি করে জয়-পরাজয়ে ৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচই হেরে সবার নিচে শ্রীলঙ্কা।
মুখোমুখি পরিসংখ্যানে অবশ্য অনেক এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে ২৪ ম্যাচে তাদের জয় ১৮টি, ড্র ৫টি। বাংলাদেশের একমাত্র জয় ২০১৭ সালে। ঘরের মাঠে ১০ ম্যাচে ৭টি হেরেছে তারা, ড্র ৩টি।
নতুন সিরিজ শুরুর আগে চোটের ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশ দলে। আঙুলের চোটে ছিটকে গেছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। তার জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা তাওহিদ হৃদয়। এছাড়া এখনও অভিষেক না হওয়া দুই পেসার মুশফিক হাসান ও নাহিদ রানাও আছেন স্কোয়াডে।
টানা তিন ওয়ানডেতে টস হারের পর প্রথম টেস্টে আবার কয়েনভাগ্য পাশে পেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বৃষ্টিভেজা সকালে উইকেটের আর্দ্রতা কাজে লাগানোর পরিকল্পনার কথা বলেছেন শান্ত।
শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা বলেছেন, আগে ব্যাটিংয়ে সমস্যা নেই তাদের। তার মতে, চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা সহজ হবে না।
গতির বার্তা নিয়ে দলে ডাক পেয়ে প্রথম ম্যাচে টেস্ট ক্যাপও পেয়ে গেলেন নাহিদ রানা। শরিফুল ইসলাম ও সৈয়দ খালেদ আহমেদের সঙ্গে একাদশের তৃতীয় পেসার তিনি।
এই সংস্করণে বাংলাদেশের ১০৩তম ক্রিকেটার ২১ বছর বয়সী পেসার।
তিন পেসারের সঙ্গে একাদশে আছেন দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ একাদশ: জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুমিনুল হক, শাহাদাত হোসেন, লিটন কুমার দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, নাহিদ রানা।
তিন পেসার কাসুন রাজিথা, ভিশ্ব ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারার সঙ্গে বাঁহাতি স্পিনার প্রাবাথ জয়াসুরিয়াকে নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এছাড়া দলের প্রয়োজনে হাত ঘোরাতে দেখা যেতে পারে তিন অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসকে।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা (অধিনায়ক), কুসাল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), দিমুথ কারুনারাত্নে, নিশান মাদুশকা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দিনেশ চান্দিমাল, কামিন্দু মেন্ডিস, প্রাবাথ জায়াসুরিয়া, কাসুন রাজিথা, ভিশ্ব ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারা।
প্রায় ৯ বছর পর ঘরের মাঠে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলো বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে আগে বোলিং নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওই ম্যাচে ৩২৮ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
সব মিলিয়ে ঘরের মাঠে এর আগে সাত ম্যাচে টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। এর ৬টিতেই হারে তারা। ড্র হয় অন্যটি।
দিনের শুরুতেই সাফল্য পেল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারেই ভাঙল শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি।
প্রথম ওভারে ২ রান দেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় ওভার করতে এসে নিশান মাদুশকাকে ফেরান সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তার ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় লঙ্কান ওপেনারের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে।
তৃতীয় স্লিপে বাম দিকে হাত বাড়িয়ে দারুণ রিফ্লেক্সে ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ বলে ২ রান করে ফেরেন মাদুশকা।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান কুসাল মেন্ডিস।
২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩ রান।
শুরুতে নিশান মাদুশকার উইকেট হারানোর পর চাপ সামাল দিচ্ছেন দিমুথ কারুনারাত্নে ও কুসাল মেন্ডিস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝিতে জুটি ভাঙার সুযোগ এলেও সেটি কাজে লাগাতে পারলেন না তাইজুল ইসলাম।
নবম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আনা হয় অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানাকে। চতুর্থ বলে মিড অফের দিকে ড্রাইভ করে দ্রুত রানের জন্য ছোটেন কুসাল মেন্ডিস। তিনি পপিং ক্রিজের অনেকটা বাইরে থাকতেই বল ধরে থ্রো করেন তাইজুল। কিন্তু স্টাম্প ভাঙতে পারেননি। রিপ্লেতে দেখা যায়, তাইজুলের থ্রো স্টাম্পে লাগলে বিদায়ঘণ্টা বাজত মেন্ডিসের।
রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া হওয়া প্রথম ওভারে গতির প্রদর্শনী মেলে ধরেন নাহিদ। সর্বোচ্চ ১৪৫.৯ কিমি. প্রতি ঘণ্টা গতির ডেলিভারি করেন ২১ বছর বয়সী পেসার। ওভারের পাঁচটি ডেলিভারিই তিনি করেন ১৪০ কিমি. প্রতি ঘণ্টা ছোঁয়া গতিতে।
নাহিদ আক্রমণে আসার আগে প্রথম ৮ ওভারে সবুজ উইকেটের সুবিধা তেমন কাজে লাগাতে পারেননি শরিফুল ইসলাম ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। শুরুতে মাদুশকাকে ফেরালেও এরপর লাইন-লেংথ কিছুটা এলোমেলো হয়ে যায় দুই পেসারের। লেগ স্টাম্প ঘেঁষা লাইন ও শর্ট ডেলিভারিতে কারুনারাত্নে ও কুসালের কাজ সহজ করে দেন তারা।
৯ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৩ রান। কারুনারত্নে ২৩ বলে ১১ ও মেন্ডিস ২৩ বলে ১৫ রানে অপরাজিত।
শরিফুল ইসলামের বলে অন ড্রাইভ করতে গিয়ে অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়েছিলেন কুসাল মেন্ডিস। কয়েকবার শুশ্রূষা নিলেও অস্বস্তি নিয়েই ব্যাটিং চালিয়ে নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার কিপার-ব্যাটসম্যান।
তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দিলেন না সৈয়দ খালেদ আহমেদ। পানি বিরতির আগের ওভারে দারুণ বাউন্সারে মেন্ডিসকে ফেরালেন খালেদ। শরীর বরাবর আসা বাউন্সারে কাট করবেন নাকি ছেড়ে দেবেন এই দ্বিধায় শেষ পর্যন্ত ব্যাটে লেগে চলে যায় গালিতে। দুইবারের চেষ্টায় ক্যাচ নেন জাকির হাসান।
ফেরার আগে ২ চারে ২৬ বলে ১৬ রান করেন মেন্ডিস। দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় পূর্ণ হয় তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ৪ হাজার রান।
চার নম্বরে নেমেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ৩৪ বলে ১৭ রানে খেলছেন দিমুথ কারুনারাত্নে।
১১.২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪০ রান।
কুসাল মেন্ডিসের পর একই ওভারে দিমুথ কারুনারাত্নের উইকেটও নিলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন লঙ্কান ওপেনার। বলের লাইনে যেতে পারেননি তিনি, ব্যাট আর প্যাডে ফাঁক থেকে যায় অনেকটা। তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢুকে যাওয়া ডেলিভারিতে সেই ফাঁক দিয়ে আঘাত করে অফ স্টাম্পের চূড়ায়।
১ চারে ৩৭ বলে ১৭ রান করে ফিরলেন কারুনারাত্নে। শ্রীলঙ্কার টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে দিলেন খালেদ।
১২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪১ রান। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমাল।
দলকে আরও চাপে ফেলে রান আউট হয়ে ফিরলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। পঞ্চাশের আগে ৪ উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপদে শ্রীলঙ্কা।
সৈয়দ খালেদ আহমেদের হালকা লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারি কভারের দিকে খেলেই রানের জন্য ছোটেন দিনেশ চান্দিমাল। আলসেভাবে সাড়া দেন ম্যাথিউস। মিড অফ থেকে দৌড়ে এসে সরাসরি থ্রোয়ে স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিদায়ঘণ্টা বাজে ৭ বলে ৫ রান করা ম্যাথিউসের।
১৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪৯ রান। দিনেশ চান্দিমালকে সঙ্গ দিতে ছয় নম্বরে নেমেছেন লঙ্কান অধিনায়ক ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
১৫তম ওভারে শরিফুল ইসলামকে আক্রমণে ফেরানোর পরই লেগ স্লিপ রেখে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সেই জায়গায়ই ধরা পড়লেন দিনেশ চান্দিমাল।
শরিফুলের লেগ স্টাম্পের ওপর করা ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি গ্ল্যান্স করেন চান্দিমাল। লেগ স্লিপে সামনে ঝুঁকে দারুণ ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
১৩ বলে ৯ রান করে ফেরেন চান্দিমাল। স্রেফ ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে গভীর খাঁদে শ্রীলঙ্কা।
সপ্তম উইকেটে জুটি বাধার আশায় ক্রিজে এখন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস।
প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন কামিন্দু মেন্ডিস। শরিফুল ইসলামের বলে দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ ছাড়লেন মাহমুদুল হাসান জয়।
অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় কামিন্দুর ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে। ক্যাচ নেওয়ার মতো উচ্চতায়ই যায় জয়ের হাতে। তবে প্রথম দফায় হাতে নিলেও রাখতে পারেননি তিনি।
১৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৫৯ রান। ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ৭ বলে ৩ ও কামিন্দু ৪ বলে ২ রানে খেলছেন।
নাহিদ রানার লেগ স্টাম্পের ওপর ডেলিভারি গ্ল্যান্স করার চেষ্টায় ব্যর্থ কামিন্দু মেন্ডিস। লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে বল জমা পড়তেই জোরালো আবেদন। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
লিটনও খুব একটা আশাবাদী ছিলেন না। তবে নাহিদের আগ্রহে কিছুক্ষণ আলোচনার পর রিভিউ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায়, উইকেটের পেছনে যাওয়ার আগে কিছুতেই লাগেনি বল। বিফলে যায় বাংলাদেশের রিভিউ।
একই ওভারে নাহিদের শর্ট ডেলিভারিতে কবজিতে আঘাত পান কামিন্দু। শুশ্রূষা নিয়ে আবার খেলা শুরু করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
অভিষেক ম্যাচে এখন পর্যন্ত কিছু এলোমেলো ডেলিভারি করেছেন নাহিদ। তবে টানা ১৪০ কিমি. প্রতি ঘণ্টার বেশি গতিতে বোলিং করা ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখছেন ২১ বছর বয়সী পেসার।
বৃষ্টিভেজা কন্ডিশনে সিলেটের সবুজ উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম সেশনে চাপে রেখেছে বাংলাদেশ। ২২ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৯২ রান। তিন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা মিলে করেছেন সেশনের পুরোটা। যে কারণে ওভাররেটও হয়েছে মন্থর।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে নতুন বলে দারুণ শুরু করেন খালেদ ও শরিফুল। নিজের প্রথম ওভারে নিশান মাদুশকাকে ফেরান খালেদ। পরে একই ওভারে তিনি আউট করেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান কুসাল মেন্ডিস ও দিমুথ কারুনারাত্নেকে।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস রান আউট হলে আরও বাড়ে শ্রীলঙ্কার বিপদ। পরে শরিফুল ইসলামের বলে দিনেশ চান্দিমাল ফিরলে স্রেফ ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। এরপর ষষ্ঠ উইকেটের সম্ভাবনাও জাগান শরিফুল। স্লিপে কামিন্দু মেন্ডিসের ক্যাচ ছেড়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়।
জীবন পেয়ে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েছেন কামিন্দু। মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটির সংগ্রহ ৩৬ বলে ৩৫ রান। ধানাঞ্জয়া ২৪ বলে ২৫ ও কামিন্দু ১৯ বলে ১১ রানে অপরাজিত।
চাপ সামলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছেন দুজনই। এরই মধ্যে পূর্ণ হয়ে তাদের জুটির পঞ্চাশ রান, স্রেফ ৫৬ বলে।
২৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১১৮ রান। সৈয়দ খালেদ আহমেদের করা সবশেষ ওভারে ৩ চারে ১৫ রান নিয়েছে তারা। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৪ ওভারে এসেছে ২৬ রান।
এতে ২৭তম ওভারে প্রথমবারের মতো কোনো স্পিনারেকে আক্রমণে এনেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সিলেটে আগের ২ টেস্টে ২১ উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলাম নিজের প্রথম ওভারে দিয়েছেন ২ রান।
৩৮ বলে ৩৬ রানে খেলছেন ধানাঞ্জায়া। শূন্য রানে জীবন পাওয়া কামিন্দু মেন্ডিসের রান ৩৬ বলে ২৭।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়েছেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। এরই মধ্যে পঞ্চাশ করেছেন দুজন৷ পূর্ণ হয়েছে ষষ্ঠ উইকেট জুটির একশ রান।
৩২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৬৬ রান। দ্বিতীয় সেশনে এখন পর্যন্ত দশ ওভারে তারা করেছে ৭৪ রান! অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ৯৮ বলে ১০৯ রান।
৬ চার ও ১ ছক্কায় স্রেফ ৫২ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ধানাঞ্জয়া। কামিন্দু ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত।
অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানার ওপর দিয়ে গেছে মূল ঝড়। পরপর দুই ওভারে ১৬ ও ১১ রান দিয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ৮ ওভারে তার খরচ ৫৮ রান।
শুরুর ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণে বড় জুটি গড়েছেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের হতাশায় দ্বিতীয় সেশনের পুরোটা নির্বিঘ্নে কাটিয়েছেন তারা।
চা বিরতি পর্যন্ত ৪৯ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২১৭ রান। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ২৭ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১২৫ রান করেছে তারা। এর বেশিরভাগই প্রথম ঘণ্টায়। দ্বিতীয় ঘণ্টায় রানের গতিতে একটু বাধ দিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
ধানাঞ্জয়া ও কামিন্দুর অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এরই মধ্যে এসেছে ১৬০ রান। ১০৮ বলে ৮৩ রানে অপরাজিত ধানাঞ্জয়া। ৯৯ বলে ৭৫ রান করেছেন প্রায় দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নামা কামিন্দু।
অথচ খালি হাতেই ফিরতে পারতেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শরিফুল ইসলামের বলে স্লিপে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর আর কোনো ভুল করেননি কামিন্দু।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ঝড় তোলেন দুই ব্যাটসম্যান। প্রথম ১০ ওভারে তারা করে ফেলে ৭৪ রান। এরপর দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম মিলে রানের বানে বাধ সাধেন। তবে জুটি ভাঙার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।
তৃতীয় সেশনের শুরুতে জুটি ভাঙার বড় সুযোগ হাতছাড়া করল বাংলাদেশ। ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত।
৫৪তম ওভারে তাইজুল ইসলামের আর্ম ডেলিভারিতে পরাস্ত হন ধানাঞ্জয়া। ব্যাটের ভেতরের কানা ঘেঁষে বল আঘাত করে প্যাডে৷ জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস তখন শান্তকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, রিভিউ নিয়ে লাভ হবে না। তাই রিভিউ নেননি শান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি লাগত সোজা স্টাম্পে।
অর্থাৎ বাংলাদেশ রিভিউ নিলে বিদায়ঘণ্টা বাজত ৯৫ রানে থাকা ধানাঞ্জয়ার।
৫৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫০ রান। ধানাঞ্জয়া ৯৬ ও কামিন্দু মেন্ডিস ৯৫ রানে অপরাজিত।
একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করার পর চড়া মাশুল গুনে অবশেষে ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙল বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করা কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট নিলেন নাহিদ রানা।
নাহিদের বাড়তি বাউন্স করা ডেলিভারি খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে তুলে দিয়েছেন কামিন্দু। ফেরার আগে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১২৭ বলে ১০২ রান করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
তার বিদায়ে ভেঙেছে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে গড়া ২০২ রানের জুটি। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান প্রাবাথ জয়াসুরিয়া।
নাহিদ রানার পায়ের ওপর করা লেংথ ডেলিভারি ফ্লিক করলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। বল চলে গেল স্কয়ার লেগ দিয়ে সীমানার বাইরে। ধানাঞ্জয়া ছুঁয়ে ফেললেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।
চাপের মুখে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১২৭ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। বাংলাদেশের বিপক্ষে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। সবমিলিয়ে একাদশ।
৫৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৬৪ রান।
পরপর দুই ওভারে দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ফেরালেন নাহিদ রানা। তরুণ পেসারের বাউন্সারে পুল করার চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়লেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। ইনিংসে তৃতীয় ক্যাচ নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ফেরার আগে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩১ বলে ১০২ রান করেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। তার বিদায়ে এখন বাকি রইল শুধু লেজের সারির ব্যাটসম্যানরা।
৫৯ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৫ রান। ক্রিজে দুই ব্যাটসম্যান প্রাবাথ জয়াসুরিয়া ও কাসুন রাজিথা।
সৈয়দ খালেদ আহমেদের ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেন কাসুন রাজিথা। বল লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে জমা পড়তেই কট বিহাইন্ডের জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার।
সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন রাজিথা। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাট ও বলের মাঝে ছিল স্পষ্ট দূরত্ব। প্যাড ছুঁয়ে যাওয়ায় এলবিডব্লিউও চেক করেন টিভি আম্পায়ার। তাতে দেখা যায়, বল চলে যেত লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে।
ফলে সফল রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান রানের খাতা খোলার অপেক্ষায় থাকা রাজিথা।
৬০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৫ রান।
অভিষেকে শুরুতে এলোমেলো বোলিংয়ের পর শেষ দিকে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন নাহিদ রানা। পরপর তিন ওভারে ৩ উইকেট নিয়েছেন ২১ বছর বয়সী পেসার।
নাহিদের ফুল লেংথে করা গতিময় ডেলিভারি ড্রাইভ খেলার চেষ্টায় ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে কট বিহাইন্ড হলেন ১১ বলে ১ রান করা প্রাবাথ জয়াসুরিয়া।
৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে শ্রীলঙ্কা। ক্রিজে দুই ব্যাটসম্যান কাসুন রাজিথা ও ভিশ্ব ফার্নান্দো।
৬১ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৭০ রান।
উইকেট শিকারে নাম লেখালেন তাইজুল ইসলাম। তার ঝুলিয়ে করা ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হলেন ১৯ বলে ৯ রান করা ভিশ্ব ফার্নান্দো।
স্পিনে এটাই বাংলাদেশের প্রথম উইকেট।
২৭৮ রানে নবম উইকেট হারাল শ্রীলঙ্কা। ক্রিজে শেষ জুটি কাসুন রাজিথা ও লাহিরু কুমারা।
রান আউটে সমাপ্তি ঘটল শ্রীলঙ্কার ইনিংসের। কাসুন রাজিথার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে আউট হলেন লাহিরু কুমারা।
তাইজুলের ইসলামের বলে বড় শটের চেষ্টায় টাইমিং হয়নি কুমারার। বল মিড-অফের দিকে যাওয়ার পথে রানের জন্য বেরিয়ে যান তিনি৷ কিন্তু সাড়া দেননি রাজিথা। কুমারা ক্রিজে ফেরার আগেই ভাঙা হয় স্টাম্প।
২১ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮০ রানে থামল শ্রীলঙ্কা।
শেষের মতো শুরুতেও ধস নামে লঙ্কান ইনিংসে৷ স্রেফ ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারায় তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ২৪ টেস্টে কখনোই ১০০ রানের আগে ৫ উইকেট হারায়নি তারা।
ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ ২০২ রানের জুটি গড়েন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি ছুঁয়ে দুজনই আউট হন সমান ১০২ রান করে।
অভিষিক্ত নাহিদ রানা ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ নেন ৩টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২৮০ (মাদুশকা ২, কারুনারাত্নে ১৭, কুসাল ১৬, ম্যাথিউস ৫, চান্দিমাল ৯, ধানাঞ্জয়া ১০২, কামিন্দু ১০২, জয়াসুরিয়া ১, রাজিথা ৬*, ভিশ্ব ৯, কুমারা ০; শরিফুল ১৪-০-৫৮-১, খালেদ ১৭-২-৭২-৩, নাহিদ ১৪-২-৮৭-৩, তাইজুল ১৩-৬-৩১-১, মিরাজ ১০-১-২৫-০)
ভিশ্ব ফার্নান্দোর ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টায় পরাস্ত জাকির হাসান। প্যাডে লাগতেই জোরালো আবেদনে আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নিলেন জাকির।
রিপ্লেতে দেখা যায়, 'পিচিং' ও 'ইমপ্যাক্ট' ঠিক থাকলেও 'উইকেটস' এর বেলায় আম্পায়ার্স কল। অর্থাৎ মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকল। আম্পায়ার নট আউট দিলে বেঁচে যেতেন জাকির।
২ চারে ৮ বলে ৯ রান করে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার। তিন নম্বরে নেমেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ক্রিজে আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নিলেন ভিশ্ব ফার্নান্দো। জাকির হাসানের পর নাজমুল হোসেন শান্তকেও ফেরালেন ভিশ্ব ফার্নান্দো।
অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে হালকা নিচু হওয়া লেংথ ডেলিভারি শান্তর প্যাডে আঘাত করে৷ জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি বাংলাদেশ অধিনায়কের। ১০ বলে ৫ রান করে ফিরলেন তিনি।
৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৭ রান৷ ক্রিজে দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হক।
শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্তর পর ফিরলেন মুমিনুল হক।
কাসুন রাজিথার অফ স্টাম্পের বাইরে ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন মুমিনুল। ৭ বলে তিনি করেন ৫ রান।
নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমেছেন তাইজুল ইসলাম।
৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১ রান। মাহমুদুল হাসান জয় ৮ রানে অপরাজিত।
দিনের শুরুর উচ্ছ্বাস শেষে এসে রইলো না বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কাকে ২৮০ রানে অল আউট করার পর ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে স্বাগতিকরা৷
৭ উইকেট বাকি রেখে ২৪৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ।
শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই আম্পায়ার্স কলে কাটা পড়েন জাকির হাসান। ভিশ্ব ফার্নান্দোর পরের ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অভিজ্ঞ মুমিনুল হকও৷ ৩০ পেরোতেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
শেষ দিকে আর বিপদ হতে দেননি মাহমুদুল হাসান জয় ও তাইজুল ইসলাম। জয় ৩৪ বলে ৯ ও তাইজুল ১ বলে ০ রানে নতুন দিনের খেলা শুরু করবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০ ওভারে ৩২/৩ (জয় ৯*, জাকির ৯, শান্ত ৫, মুমিনুল ৫, তাইজুল ০*; ভিশ্ব ৫-১-৯-২, রাজিথা ৫-১-২০-১)