পুঁজি স্রেফ ১৪৪ রানের। সেটা নিয়েই দারুণ লড়াই করছে বাংলাদেশ। জাগিয়েছে অভাবনীয় এক জয়ের আশা।
ভারতের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে জিততে আর ৬ উইকেট চাই সাকিব আল হাসানের দলের। সফরকারীদের করতে হবে আরও একশ রান।
তৃতীয় দিন শেষে ভারতের রান ৪ উইকেটে ৪৫। প্রমোশন পেয়ে চারে নামা আকসার প্যাটেল ৫৪ বলে তিন চারে খেলছেন ২৬ রানে। তার সঙ্গী নাইটওয়াচম্যান জয়দেব উনাদকাটের রান ৮ বলে ৩।
দুই ওপেনার শুবামান গিল ও লোকেশ রাহুল এবং দুই ব্যাটিং ভরসা চেতেশ্বর ও বিরাট কোহলি যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ৩৭ রানের মধ্যে তাদের ফিরিয়ে দিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে):
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২৭
ভারত ১ম ইনিংস: ৩১৪
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৩১
ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৪৫) ২৩ ওভারে ৪৫/৪ (গিল ৭, রাহুল ২, পুজারা ৬, প্যাটেল ২৬*, কোহলি ১, উনাদকাট ৩*; সাকিব ৬-২-২১-১, তাইজুল ৮-৪-৮-০, মিরাজ ৮-৩-১২-৩, তাসকিন ১-০-৪-০)
প্রথম ওভারেই মিলতে পারত উইকেট। আম্পায়ার্স কলে বেঁচে গেলেন জয়দেব উনাদকাট।
মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে স্পিন করে ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। আম্পায়ার জোরাল আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন সাকিব আল হাসান।
বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, স্টাম্পে স্পর্শ ছিল আম্পায়ার্স কল। লেগ স্টাম্প ছুঁয়ে যেত বল। বেঁচে যান ব্যাটসম্যান, টিকে যায় রিভিউ।
পরের বলেই ছক্কা মারেন উনাদকাট। ওভার থেকে আসে ৯ রান।
ভারতের রান ২৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৫৪।
দ্বিতীয় ওভারেই মিলল সাফল্য। দারুণ এক ডেলিভারিতে জয়দেব উনাদকাটকে ফিরিয়ে দিলেন সাকিব আল হাসান।
বাঁহাতি স্পিনারের একটু ভেতরে ঢোকা বল উনাদকাটের প্যাড ছুঁয়ে লাগে ব্যাটে। এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। আকসার প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
কোনো কাজ হয়নি, অফ স্টাম্পে আঘাত হানত বল। একটি রিভিউ নষ্ট করে ফিরে যান নাইটওয়াচম্যান উনাদকাট।
২৫ ওভারে ভারতের রান ৫ উইকেটে ৫৭। ক্রিজে আকসার প্যাটেলের সঙ্গী রিশাভ পান্ত। জয়ের জন্য এখনও ভারতের প্রয়োজন ৮৮ রান।
দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা রিশাভ পান্ত টিকতে পারলেন না বেশিক্ষণ। চমৎকার এক ডেলিভারিতে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ করে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজের।
অফ স্পিনারের ভেতরে ঢোকা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন পান্ত। ব্যাটে খেলতে পারেননি এই কিপার-ব্যাটসম্যান। জোরাল আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ না নিয়েই ফিরে যান তিনি।
এক চারে ১৩ বলে ৯ রান করেন পান্ত।
২৮ ওভারে ভারতের রান ৬ উইকেটে ৭১। ক্রিজে আকসার প্যাটেলের সঙ্গী শ্রেয়াস আইয়ার। জয়ের জন্য ভারতের চাই আরও ৭৪ রান।
চারে নেমে লম্বা সময় ধরে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন আকসার প্যাটেল। তাকে বোল্ড করে দিয়ে ভারতের বিপদ বাড়ালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে বাঁহাতি এই স্পিনার পেলেন নিজের পঞ্চম উইকেট।
স্পিন করে লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যাচ্ছিল বল। রান করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি আকসার। ব্যাক ফুটে ফ্লিক করার চেষ্টা করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ব্যাটে খেলতে পারেননি, প্যাডে লেগে ছোবল দেয় লেগ স্টাম্পে!
৬৯ বলে চারটি চারে ৩৪ রান করেন আকসার।
৩০ ওভারে ভারতের রান ৭ উইকেটে ৭৪। ক্রিজে শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গী রবিচন্দ্রন অশ্বিন। জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন আরও ৭১ রান।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হতে হতে বেঁচে গেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ শর্ট লেগে নিতে পারেননি মুমিনুল হক।
পরের বলেও আউট হতে পারতেন অশ্বিন। লেগ স্টাম্প ঘেঁষে বেরিয়ে যায় বল!
১ রানে জীবন পাওয়া অশ্বিন ও শ্রেয়াস আইয়ারের দিকে তাকিয়ে ভারত।
৩৪ ওভারে সফরকারীদের রান ৭ উইকেটে ৮১। জয়ের জন্য এখনও তাদের প্রয়োজন ৬৪ রান।
অভাবনীয় এক জয়ের লক্ষ্যে নামা বাংলাদেশ প্রথম ঘণ্টায় ফিরিয়ে দিয়েছে জয়দেব উনাদকাট, আকসার প্যাটেল ও রিশাভ পান্তকে।
চতুর্থ দিনের প্রথম পানি পানের বিরতির সময় ভারতের রান ৭ উইকেটে ৮৮। ২৮ বলে ১০ রানে খেলছেন শ্রেয়াস আইয়ার। ১ রানে জীবন পাওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিনের রান ২০ বলে ৪।
প্রথম ঘণ্টায় ৪৩ রান যোগ করেছে ভারত। জয়ের জন্য সফরকারীদের প্রয়োজন আরও ৫৭ রানে।
শুরুতেই জুটি ভাঙার সুযোগ এসেছিল, কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। মুমিনুল হকের ব্যর্থতায় ১ রানে বেঁচে যাওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েছেন শ্রেয়াস আইয়ার, ৯১ বলে।
এই দুই জনের জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত।
৪৫ ওভারে ভারতের রান ৭ উইকেটে ১২৫। জয়ের জন্য সফরকারীদের প্রয়োজন আর ২০ রান।
ম্যাচ জুড়ে অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ। শেষ ব্যর্থতাটাই হয়তো হয়ে গেছে সবচেয়ে বড়। ১ রানে জীবন পেয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সেই তিনিই মেহেদী হাসান মিরাজের ১ ওভারে ১৬ রান নিয়ে শেষ করে দিয়েছেন ম্যাচ।
১৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৩ উইকেটে জিতল ভারত।
চতুর্থ দিন প্রথম সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল ১০০ রান, বাংলাদেশের ৬ উইকেট। তিন উইকেট দ্রুতই নিয়েছিল স্বাগতিকরা। অশ্বিনকেও দ্রুত ফেরানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন মিরাজ কিন্তু শর্ট লেগে ক্যাচ নিতে পারেননি মুমিনুল হক।
শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ১০৫ বলে ৭১ রানের জুটিতে ভারতকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দেন অশ্বিন। ৬২ বলে এক ছক্কা ও চারটি চারে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
৪৬ বলে চারটি চারে শ্রেয়াস করেন ২৯ রান। তাদের জুটিতেই শেষ যায় বাংলাদেশের অভাবনীয় জয়ের আশা।
শর্ট লেগে মুমিনুল সেই ক্যাচ নিতে পারলে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতেই পারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২৭
ভারত ১ম ইনিংস: ৩১৪
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৩১
ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৪৫, আগের দিন ৪৫/৪) ৪৭ ওভারে ১৪৫/৭ (আকসার ৩৪, উনাদকাট ১৩, রিশাভ ৯, শ্রেয়াস ২৯*, অশ্বিন ৪২*; সাকিব ১৪-০-৫০-২, তাইজুল ১১-৪-১৪-০, মিরাজ ১৯-৪-৬৩-৫, তাসকিন ১-০-৪-০, খালেদ ২-০-১২-০)