প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ২২ রানে জিতেছে সাকিব আল হাসানের দল।
Published : 27 Mar 2023, 01:40 PM
ইংল্যান্ডের সবশেষ সিরিজ নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে। হোয়াইটওয়াশ করেছে টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। এবার সাকিব আল হাসানদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির আয়ারল্যান্ড। নতুন সিরিজে বাংলাদেশের লক্ষ্য অবশ্য পুরনো, টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের আরও মানিয়ে নেওয়া।
শক্তি-সামর্থ্যে আইরিশদের চেয়ে বেশ এগিয়ে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সেই ব্যবধান আরও বাড়ারই কথা। তবে বরাবরের মতো এবার মিরপুরে স্পিন মঞ্চ বানিয়ে জেতার ভাবনা নেই বাংলাদেশের। সিরিজ খেলবে চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে। সোমবার প্রথম ম্যাচ শুরু হবে বেলা দুইটায়।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কীভাবে খেলা উচিত, এখনও সেই পথের সন্ধান করছে বাংলাদেশ। নিজস্ব ঘরানার খোঁজে থাকা দলটির আপাতত লক্ষ্য আগ্রাসী ক্রিকেট। সেটা কী রকম এর একটা ধারণা দিলেন কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে।
“আগ্রাসী ক্রিকেট মানে এমন নয় যে আমরা গিয়েই যত দূরে সম্ভব মারব। আগ্রাসী বলতে সবকিছুতে... দল বাছাই, ফিল্ড সাজানো, শরীরী ভাষা, ফিল্ডিং, ব্যাটিং। ট্যাকটিক্যালি আমরা আগ্রাসী হব। আমরা নিজেদের সেরাটাই খেলতে চাই। আমার মতে, যখন এমন আগ্রাসন ও স্বাধীনতা নিয়ে খেলে, এই দল সবসময় ভালো করে।”
সিলেটে ওয়ানডে সিরিজে পাত্তাই পায়নি আয়ারল্যান্ড। কোচ হাইনরিখ মালান মনে করেন, জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে স্বাগতিকদের চমকে দেওয়ার সামর্থ্য তাদের পুরোপুরিই আছে।
সংস্করণ বদলেছে, দুই দলের অধিনায়কও বদলেছে কিন্তু টস ভাগ্য একই রয়ে গেছে। বাংলাদেশ সফরে টানা চতুর্থ ম্যাচে টস জিতেছে সফরকারীরা। অ্যান্ড্রু বালবার্নির অনুপস্থিতে আয়ারল্যান্ডকে এই সিরিজে নেতৃত্ব দিতে যাওয়া পল স্টার্লিং নিয়েছেন ফিল্ডিং।
"চট্টগ্রামে প্রথমবার খেলছি। আমরা তাই দেখতে চাই কেমন আচরণ থাকে উইকেটের।"
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও হয়তো পরে ব্যাটিং করতে চাইতেন।
"বুঝতে পারছি না, এখানে ভালো স্কোর কত হতে পারে। আমাদের চেষ্টা থাকবে যত বেশি সম্ভব রান করার।"
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের একাদশে একটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। তানভির ইসলামের জায়গায় নেওয়া হয়েছে আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে।
এই সিরিজের স্কোয়াডেই নেই তানভির। তাই একাদশে একটি পরিবর্তন অনিবার্য ছিল।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, শামীম হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, রনি তালুকদার, তৌহিদ হৃদয়।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচের একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন এনেছে আয়ারল্যান্ড। ম্যাচের আগের দিন বিশ্রাম পাওয়া নিয়মিত অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি ছাড়াও এই ম্যাচে নেই স্টিভেন ডোহেনি, নেইল রক, ফিওন হ্যান্ড, ব্যারি ম্যাকার্থি।
তাদের জায়গায় এসেছেন পল স্টার্লিং, লরকান টাকার, ক্রেইগ ইয়াং, গ্রাহাম হিউম, গ্যারেথ ডেলানি।
আয়ারল্যান্ড একাদশ: মার্ক অ্যাডায়ার, রস অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, গ্রাহাম হিউম, পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট, ক্রেইগ ইয়াং।
শুরু থেকেই আইরিশ বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। তাদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ২৫ বলেই পঞ্চাশ ছুঁয়েছে শুরুর জুটি ও দলের রান।
৫ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৬১। ১৮ বলে তিনটি করে ছক্কা ও চারে ৩৯ রানে ব্যাট করছেন লিটন। ১২ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে রনির রান ১৯।
ম্যাচের চতুর্থ বলে হ্যারি টেক্টকরে ছক্কায় ওড়ান লিটন। পরের ওভারে দারুণ পুলে মার্ক অ্যাডায়ারকে ছক্কা মারেন রনি তালুকদার। ব্যাটের কানায় লেগে সেই ওভারে বাউন্ডারি পেয়ে যান লিটন।
চতুর্থ ওভারে ক্রেইগ ইয়াংকে চার মারেন রনি। লিটনের ব্যাট থেকে আসে ছক্কা ও চার। লংঅফের উপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ান গ্যারেথ ডেলানিকে।
মার্ক অ্যাডায়ারের স্লোয়ারে টাইমিং ঠিকঠাক করতে পারেননি লিটন দাস। ক্যাচ উঠে যায় শর্ট কভারে। কিন্তু সময়মতো লাফ দিতে না পারায় তা নিতে পারেননি হ্যারি টেক্টর। উল্টো ১ রান পেয়ে যান লিটন।
পরের চার বলে অ্যাডায়ারের ওপর দিয়ে ঝড় চালান রনি তালুকদার। টানা চার বলে ছক্কা ও তিন চার মারেন ডানহাতি ওপেনার। রনির ঝড়ে ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮১ রান।
নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ এটি। আগের সর্বোচ্চ ৭৬, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে।
নতুন রেকর্ড গড়ার পথে ১৯ বলে ৪০ রান করেছেন লিটন। রনি খেলছেন ১৭ বলে ৩৮ রানে।
দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়ে ফিরে গেলেন লিটন দাস। ক্রেইগ ইয়াংয়ের স্লোয়ার বল মিড অফের মাথার উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। ঠিক মতো খেলতে পারেননি লিটন, ক্যাচ নেন পল স্টার্লিং।
ভাঙে ৪৩ বল স্থায়ী ৯১ রানের জুটি।
২৩ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৪৭ রান করেন লিটন।
৮ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৯৬। ক্রিজে রনি তালুকদারের সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্ত।
অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ বল পেয়ে কভারের ওপর দিয়ে মারলেন রনি তালুকদার। চোখের পলকে বল চলে গেল। রনি পৌঁছে গেলেন পঞ্চাশে।
ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচে প্রথম ফিফটির জন্য তিনি খেলেছেন স্রেফ ২৪ বল। ৬টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মেরেছেন ৩২ বছর বয়সী ওপেনার।
রনির ঝড়ে প্রথম ১০ ওভারে ১১৬ রান করে ফেলেছে বাংলাদেশ। লিটন দাস আউট হয়েছেন ২৩ বলে ৪৭ রান করে। নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছেন ১৪ রানে।
অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পরপর দুই ওয়াইডে যেন ধৈর্য হারালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের বলটি ভেতরে ফেলে হালকা টার্ন করালেন হ্যারি টেক্টর। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারলেন না শান্ত।
বাকি কাজ অনায়াসেই সারলেন লরকান টাকার। স্টাম্পিংয়ে হয়ে ফিরলেন ১ ছয়ে ১৩ বলে ১৪ রান করা শান্ত।
চার নম্বরে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছেন শামীম হোসেন। ২৬ বলে ৫২ রান নিয়ে খেলছেন রনি তালুকদার।
আগের বল ওয়াইড না হলে এই বলটি হতোই না। সেই বাড়তি বলেই উইকেট এনে দিলেন গ্রাহাম হিউম। বোল্ড করে দিলেন দ্রুত এগোনো রনি তালুকদারকে।
স্টাম্প তাক করে করা অফ কাটারের লাইন পুরোপুরি মিস করেন রনি। এলোমেলো হয়ে যায় স্টাম্প। ভাঙে ২২ বল স্থায়ী ৩৬ রানে জুটি।
প্রথম ফিফটির স্বাদ পাওয়া রনি ৩৮ বলে তিন ছক্কা ও সাত চারে করেন ৬৭ রান।
১৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৫৪। ক্রিজে শামীম হোসেনের সঙ্গী তাওহিদ হৃদয়।
প্রমোশন পেয়ে চারে নেমে বড় শট খেলার চেষ্টায় ছিলেন শামীম হোসেন। বোলারদের উপর চড়াও হয়ে বাড়াচ্ছিলেন রান। চমৎকার এক স্লোয়ারে তাকে বিদায় করে দিলেন মার্ক অ্যাডায়ার।
অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া অফ কাটার ঠিক মতো খেলতে পারেননি শামীম। শরীরের বেশ দূরের বল খেলার চেষ্টায় ক্যাচ তুলে দেন এক্সট্রা-কাভারে। সেখানে কোনো ভুল করেননি পল স্টার্লিং।
শামীম ২০ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে করেন ৩০ রান।
ক্রিজ গিয়েই বোলারের মাথার উপর দিয়ে দারুণ বাউন্ডারিতে রানের খাতা খোলেন সাকিব আল হাসান।
১৭ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৮০। ৫ বলে সাকিবের রান ৮। ৩ বলে তাওহিদ হৃদয় খেলছেন ৩ রানে।
আগের বলে ছক্কা মেরে দলকে দুইশ রানে নিয়ে গেলেন তাওহিদ হৃদয়। পরের বলে এর পুনরাবৃত্তির চেষ্টায় ধরে পড়লেন সীমানায়।
ক্রেইগ ইয়াংয়ের আগের বলে লং দিয়ে ছক্কা মারেন হৃদয়। পরের বলে তুলে মারেন সুইপার কাভার দিয়ে। কিন্তু পার করতে পারেননি ফিল্ডারকে। মুঠোয় জমান গ্যারেথ ডেল্যানি। ভাঙে ১৭ বল স্থায়ী ২৯ রানের জুটি।
৮ বলে এক ছক্কায় ১৩ রান করেন হৃদয়।
বেশ কিছুক্ষণ ধরেই পড়ছিল বৃষ্টি। গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মাঝেই খেলা হয়েছে এক ওভারের বেশি। তবে এটি টানা চলতে থাকায় খেলা আর চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হলো না। বাংলাদেশের ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে বন্ধ হয়ে গেল খেলা।
১৯.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান করেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে তাদের সর্বোচ্চ ২১৫। আর ৯ রান করতে পারলেই সেটি ছাড়িয়ে যাব তারা। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে আর ব্যাটিংয়ে নামতে দেওয়া হবে কি না সেটিই দেখার।
মাঠে আপাতত বৃষ্টির জোর বেশি নেই। তবে গুড়িগুড়ি বৃষ্টিই চলছে অনেকক্ষণ ধরে। এরই মধ্যে উইকেট ও এর চারপাশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে কভার দিয়ে।
গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে ভেসে গেল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা। টানা বৃষ্টির কারণে চার বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান করেছে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ২১৫ রান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৮ সালে। আগে ব্যাট করে এটি ২১১ রান, একই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। বৃষ্টির কারণে কোনোটিই ছাড়ানোর সুযোগ পেল না বাংলাদেশ।
তবে জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টির দলীয় সর্বোচ্চের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এই মাঠের আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১৪ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ১৯৬ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ২০৭/৫ (লিটন ৪৭, রনি ৬৭, শান্ত ১৪, শামীম ৩০, হৃদয় ১৩, সাকিব ২০*, মিরাজ ৪*; টেক্টর ২-০-১৬-১, অ্যাডায়ার ৩.২-০-৪৮-১, হিউম ৪-০-৩৫-১, ইয়াং ৪-০-৪৫-২, ডেল্যানি ৩-০-২১-০, হোয়াইট ৩-০-৩৭-০)
চট্টগ্রামে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি যেন নাছোড়বান্দা হয়ে পড়েছে। এই থামে তো এই ঝরে। থামার পরিস্থতি দেখা দিলেই আবার শুরু হয় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। কখনও কখনও খালি চোখে বোঝাও দায় হচ্ছে আদৌ বৃষ্টি পড়ছে কি না। তাই থেমে আছে খেলা।
পূর্ব নির্ধারিত সূচিতে দ্বিতীয় ইনিংস চলতে পারে ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। তবে অনিবার্য কারণে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৬টা ১০ পর্যন্ত খেলা চালানো যাবে। এই সময় অনুযায়ী ন্যুনতম ৫ ওভারের জন্য খেলা শুরু করতে হবে ৫টা ৫০ মিনিটের মধ্যে।
মাঠে বৃষ্টির পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে। সরানো হচ্ছে সেন্টার উইকেট ও এর চারপাশের কভার। অবস্থা বোঝার জন্য মাঠে নেমেছিলেন দুই আম্পায়ার গাজী সোহেল ও মাসুদুর রহমান। তারা ফিরে গেলে আসেন রিজার্ভ আম্পায়ার তানভীর আহমেদ।
কভার সরিয়ে মাঠ থেকে পুরোপুরি বের করার আগেই আবার ফিরিয়ে হলো। ঢেকে দেওয়া হলো সেন্টার উইকেট ও এর চারপাশ।
গুড়িগুড়ি বৃষ্টি অল্প কয়েক মিনিটের জন্য থেমেছিল। যা দেখে গা গরমের জন্য মাঠেও নেমেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
কিন্তু আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ডাগআউটে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। কোচিং প্যানেলের সদস্যরা অবশ্য মাঠেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় আছেন বৃষ্টি থামার।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ৫টা ৪০ মিনিটে শুরু হচ্ছে খেলা। আয়ারল্যান্ডের সামনে নতুন লক্ষ্য ৮ ওভারে ১০৪ রান।
গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হওয়ায় খুব একটা পানি জমেনি মাঠে। তড়িঘড়ি করে খেলার জন্য প্রস্তুত করছেন মাঠকর্মীরা।
বাংলাদেশের ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে বেলা ৩টা ৩৭ মিনিটে বন্ধ হয় খেলা। প্রায় দুই ঘণ্টার এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতিতে আয়ারল্যান্ড ইনিংস থেকে কাটা গেছে ১২ ওভার।
প্রথম ওভারে চারটি বাউন্ডারি হজম করলেন নাসুম আহমেদ। ওভার থেকে এলো ১৮ রান। পরের ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান হজম করলে তিনটি চার। ওভার থেকে এলো ১৪ রান। উড়ন্ত সূচনা পেয়ে গেল আয়ারল্যান্ড।
২ ওভারে আইরিশদের রান বিনা উইকেটে ৩২।
প্রথম দুই ওভারে ৩২ রান নিয়ে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে দ্রুত এগোনো জুটি ভাঙলেন হাসান মাহমুদ। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দিলেন রস অ্যাডায়ারকে।
ওভারের প্রথম তিনটি বল ডট খেলেন অ্যাডায়ার। পরের বলটির সরে গিয়ে খেলার চেষ্টায় লাইন মিস করে হয়ে যান বোল্ড। ভাঙে ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি।
তিন চারে ১০ বলে ১৩ রান করেন অ্যাডায়ার।
৩ ওভারে আয়ারল্যান্ডের রান ১ উইকেটে ৩৮। ক্রিজে স্টার্লিংয়ের সঙ্গী লর্কান টাকার।
আক্রমণে এসে প্রথম বলেই সাফল্য পেলেন তাসকিন আহমেদ। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দিলেন লরকান টাকারকে। পরে মিলল আরও বড়শিকার। বোল্ড হয়ে বিদায় নিলেন পল স্টার্লিং।
বেরিয়ে এসে তাসকিনের উপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন আইরিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যাস। নিচু ফুলটস বলের লাইনেই যেতে পারেননি তিনি। এলোমেলো হয়ে যায় স্টাম্প।
২ বলে ১ রান করেন টাকার।
অনেকটা তার মতোই তাসকিনের স্টাম্প সোজা বল চালিয়ে দেন স্টার্লিং। বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যানও যেতে পারেননি লাইনে। হয়ে যান বোল্ড।
৮ বলে চারটি চারে ১৭ রান করেন স্টার্লিং।
গোল্ডের ডাকের তেতো স্বাদ পান জর্জ ডকরেল। অফ স্টাম্পের বাইরে বলে চালিয়ে দিয়ে তিনি ধরা পড়েন থার্ড ম্যানে, শামীম হোসেনের হাতে।
মুখোমুখি প্রথম বলে চার মেরে রানের খাতা খোলেন গ্যারেথ ডেল্যানি, ঠেকিয়ে দেন তাসকিনের হ্যাটট্রিক।
৪ ওভারে আইরিশদের রান ৪ উইকেটে ৪৪।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও জিতল বাংলাদেশ।
প্রথম দুই ওভারে নাসুম আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান খরুচে বোলিং করলেও পরে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা। শুরুটা করেন হাসান মাহমুদ, পরে যদিও এক ওভারে করেন খরুচে বোলিং।
এক ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে সুর বেঁধে দেন তাসকিন আহমেদ। এক ওভারে মোটে ৫ রান দেন সাকিব। সপ্তম ওভারে কেবল ৭ রান দিয়ে ম্যাচ মুঠোয় নিয়ে আসেন মুস্তাফিজ।
ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে জয়ের জন্য ৮ ওভারে ১০৪ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। প্রথম ২ ওভারে ৩২ রান তোলা দলটি শেষ পর্যন্ত করতে পারে ৮১ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ২০৭/৫ (লিটন ৪৭, রনি ৬৭, শান্ত ১৪, শামীম ৩০, হৃদয় ১৩, সাকিব ২০*, মিরাজ ৪*; টেক্টর ২-০-১৬-১, অ্যাডায়ার ৩.২-০-৪৮-১, হিউম ৪-০-৩৫-১, ইয়াং ৪-০-৪৫-২, ডেল্যানি ৩-০-২১-০, হোয়াইট ৩-০-৩৭-০)
আয়ারল্যান্ড: (লক্ষ্য ৮ ওভারে ১০৪) ৮ ওভারে ৮১/৫ (স্টার্লিং ১৭, রস অ্যাডায়ার ১৩, টাকার ১, টেক্টর ১৯, ডকরেল ০, ডেল্যানি ২১*, ক্যাম্পার ১*; নাসুম ১-০-১৮-০, মুস্তাফিজ ২-০-১৬-০, হাসান ২-০-২০-১, তাসকিন ২-০-১৬-৪, সাকিব ১-০-৫-০)