বাংলাদেশ

মিজান-বাছিরের সর্বোচ্চ সাজা চাইল দুদক

Byবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
মিজানুর রহমান ও খন্দকার এনামুল বাছির।
মিজানুর রহমান ও খন্দকার এনামুল বাছির।

মিজানুর রহমান ও খন্দকার এনামুল বাছির।

সোমবার ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এ দাবি জানান।

যুক্ততর্ক শুনানিতে তিনি বলেন, “মিজানুর রহমান ও এনামুল বাছির দুজনই ঘুষ নেওয়া ও দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এনামুল বাছির বলেছেন, ‘আমি ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছি’ আর মিজানুর বলেন, ‘আমি বাছিরের ষড়যন্তের শিকার’। সুতরাং দুজনেই দোষী। দুজনেরই সবোর্চ্চ সাজা হওয়া উচিৎ।”

শুনানিকালে ডিআইজি মিজান এবং এনামুল বাছিরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করা হয়। এরপর আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য সময় আবেদন করেন। আদালত আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ঠিক করেছে।

এ মামলার ধারা হলো ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২); যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছরের কারাদণ্ড, সঙ্গে জরিমানা হতে পারে।

অর্থপাচারের সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছরের কারাদণ্ড, জরিমানা, পাচার করা টাকা বাজেয়াপ্ত এবং দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছরের দণ্ড আর দণ্ডবিধির ১৬৫ ধারায় সাজা ২ বছরের কারাদণ্ড।

আইনজীবীরা আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের বলেন, যে গতিতে মামলার বিচার চলছে তাতে সামনের মাসেই রায় হওয়ার কথা।

আলোচিত এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ও আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এ আশা করছেন।

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ২০১৯ সালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানকে।

এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের তৎকালীন পরিচালক এনামুল বাছির।

সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির।

এর সপক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।

অভিযোগটি অস্বীকার করে বাছির দাবি তখন করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু ‘বানোয়াট’ রেকর্ড একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেছেন।

অন্যদিকে ডিআইজি মিজান বলেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন ‘বাধ্য হয়ে’।

এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে তিনি অভিযোগপত্র দেন।

গত বছর ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ হয়।

ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০২০ বছরের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। আরেক মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকেও পরে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মামলার ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২৩ ডিসেম্বর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আত্মপক্ষ শুনানির তারিখ ঠিক করেন।

গত ৩ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন মিজানুর রহমান ও এনামুল বাছির। ওইদিন তারা লিখিত বক্তব্য জমা দেওয়ার জন্য সময় চান। আদালত ১২ জানুয়ারি আসামিদের লিখিত বক্তব্য জমা দেয়ার তারিখ ধার্য করেন। ওইদিনই তারা লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দেন। ডিআইজি মিজান ৬ পৃষ্ঠা এবং এনামুল বাছির ১২ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য জমা দেন।

SCROLL FOR NEXT