ঘুষের সত্যতা পেয়েছে দুদক, বাছিরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2019, 11:13 AM
Updated : 30 June 2019, 06:51 AM

ওই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা বুধবার বাছিরের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন।

‘এনামুল বাছির দেশত্যাগ করতে পারেন’- এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শককে একটি চিঠি দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা ফানাফিল্যা।

সেখানে বলা হয়, “ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (খন্দাকার এনামুল বাছির) ঘুষ লেনদেন ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের সত্যতা দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানের প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

“তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বক্তব্য গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। ইতোমধ্যে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য তার বরাবর নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে, তিনি সপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।"

অনুসন্ধান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বাছিরের বিদেশ গমন ঠেকানো জরুরি বলে মন্তব্য করা হয় ফানাফিল্যার চিঠিতে।

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় গত বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ডিআইজি মিজানুর রহমানকে।

এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।

সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত ৮ জুন দাবি করেন, দুদক কর্মকর্তা বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

এর পক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।

ডিআইজি মিজান গত ১০ জুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন ‘বাধ্য হয়ে’।

“তিনি (বাছির) যে একজন দুর্নীতিগ্রস্ত, তা প্রমাণ করতে, তাকে ফাঁসানোর জন্য করেছি এবং নিজের সেইফটির জন্য করেছি।”

অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাছির ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘সব বানোয়াট’।

‘ওয়ারেন্ট হলেই…’

মিজান দেশে আছেন, না ইতোমধ্যে পালিয়ে গেছেন- সেই প্রশ্ন বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সামনে রেখেছিলেন সাংবাদিকরা।

মন্ত্রী জবাবে বলেন, “ডিআইজি মিজান দেশে আছে কিনা না আছে সেটা তো… যদি তার নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়…।

“যে কোনো বিষয় আইনি প্রসেসে চলে। যেহেতু সে একজন উচ্চ পদস্থ অফিসার। সে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে, এখন তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে এগুলি তদন্তের পরে- আইনের মাধ্যমে এর সুরাহা হবে।”

ডিআইজি মিজানকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না- এই প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “ওয়ারেন্ট ইস্যু হলেই... মানে সে সারেন্ডার করবে কিংবা গ্রেপ্তার হবে।"