অনাগত সন্তানের জন্য দুঃসাহস!

৯ মাসের গর্ভবতী এক ভারতীয় নারী হাসপাতালে নিজ সন্তানের জন্ম নিশ্চিত করার জন্য ভরা বর্ষার খরস্রোতা নদী পাড়ি দিয়েছেন।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2014, 11:33 AM
Updated : 6 August 2014, 11:33 AM

ভারতের কর্নাটক রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় ইয়াদগির জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে বুধবার জানিয়েছে বিবিসি।

নদী পাড়ি দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসার পর ইল্লেভা নামের ওই গর্ভবর্তীকে পরীক্ষার পর ওই নারী ও তার অনাগত সন্তান সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

নদী পাড়ি দিতে ইল্লেভাকে সাহায্য করেছেন তার বাবা ও ভাইয়েরা।

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কৃষ্ণা নদীর মধ্যবর্তী নিলাকান্তরায়ানাগাদ্দে চরে ২২ বছর বয়সী ইল্লেভাদের বাড়ি। ছোট এই চরটি ব্যাঙ্গালুরু থেকে ৪০০ কিলোমিটার উত্তরে।

চর থেকে মূল ভূমিতে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম একটি ভেলা। কিন্তু বৃষ্টিপাতের পর নদীতে পানির তোড় বেড়ে গেলে ভেলাটি ব্যবহার করা যায় না।

ইল্লেভাদের গ্রামে কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই এবং বাড়িতে তার সন্তানের জন্ম হোক তিনি তা চাচ্ছিলেন না। তিনি জানান, ভয় পেলেও নিজের সন্তানকে নিরাপদে জন্ম দিতে চেয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছিলাম, কিন্তু আমার সন্তানের জন্য সব ভয়কে দূর করে পানি বাড়তে থাকা নদী পাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই।”

নদী পাড়ি দেয়ার সময় ভেসে থাকার জন্য তিনি শুকনো লাউ ও কুমড়া ব্যবহার করেছেন। এ সময় খরস্রোতা নদীটির পানির উচ্চতা ১২ থেকে ১৪ ফুট বেশি ছিল।

এ সময় অভিজ্ঞ সাতারুরাও ওই নদীতে নামতে স্বস্থিবোধ করেন না বলে জানিয়েছেন অভিজ্ঞজনেরা।

ইল্লেভার সঙ্গে তার বাবা, আপন ও চাচাতো ভাইয়েরাও নদীটি পাড়ি দিয়েছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইল্লেভা বলেন, “আমার ভাই সামনে ছিল। তারপরেই ছিলাম আমি। আমার ভাইয়েরা শুকনা লাউ ও কুমরার খোল আমাদের শরীরের সঙ্গে বেঁধে দিয়েছিল। এতে ভেসে ছিলাম আমি।”

তার ভাই লক্ষণ বলেন, “বাবা ঠিক ওর পেছনেই ছিল। এমনিতে নদীটি আধা কিলোমিটার থেকে একটু বেশি চওড়া হলেও তাকে পার করতে আমাদের এক ঘন্টা সময় লেগেছে। নদীর মাঝখানে যখন পৌঁছলাম, সেখানে তখন প্রচণ্ড স্রোত।”

তাদের নদী পাড়ি দেয়ার এই সম্মিলিত দুঃসাহসকে বিস্ময়কর সাফল্য বলে বর্ণনা করেছেন গ্রামবাসীরা ও চিকিৎসকরা।

নদীর প্রবল স্রোত তাদের অনেকটা টেনে নিয়ে গিয়েছিল, তাই আধা কিলোমিটারের নদী পার হতে এক কিলোমিটার সাঁতার কেটেছেন তারা।

নদী পাড়ি দেয়ার পর তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ইল্লেভা। তবে তাকে পরীক্ষা করা চিকিৎসক ডাঃ ভিনা বলেছেন, “তিনি খুব ভাল আছেন, এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন।”

“আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে তার সন্তান জন্ম নেবে, সেও ভাল আছে।”