১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের অপর সদস্যরা হল- ফ্রান্স, সুইডেন, মিশর, সেনেগাল ও কাজাখস্তান।
তারা আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ মহাসচিবকে বক্তব্য তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস।
সহিংসতার মুখে গত ২৫ অগাস্ট রাখাইন থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল নামার পর মিয়ানমারের প্রতি কয়েক দফায় সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কয়েক দশক ধরে চার লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ, গত প্রায় এক মাসে নতুন করে আরও সোয়া চার লাখ শরণার্থী এসেছে। এই প্রেক্ষাপটে সংকটের অবসানে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণে অবিলম্বে মিয়ানমারে ‘জাতিগত নিধন’ বন্ধের আহ্বান জানান। পাশাপাশি অধিবেশনের ফাঁকে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ও ফোরামে এই সংকটের সুরাহায় সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদের ‘বলিষ্ঠ ও দ্রুত’ পদক্ষেপ চেয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর এর আগে দুই দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। গেল সপ্তাহে রাখাইন পরিস্থিতির নিন্দা এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় তারা।
কূটনীতিকরা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়ার বিষয়ে ভাববে নিরাপত্তা পরিষদ। তবে চীন ও রাশিয়া এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব গ্রহণের মতো জোরাল পদক্ষেপে রাজি হবে না, তারা ভেটো দিতে পারে।
নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হওয়ার জন্য পক্ষে নয় সদস্য দেশের ভোটের পাশাপাশি পাঁচ স্থায়ী সদস্য চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের অনাপত্তি দরকার হয়।
এই মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদ তাদের বিরুদ্ধে যাতে কোনো পদক্ষেপ না নেয় সেজন্য চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার হলেও তাদের পক্ষে অবস্থান জানিয়ে আসছে চীন-রাশিয়া।