মসুল জয়ের দ্বারপ্রান্তে ইরাকি বাহিনী

ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত মসুল শহর থেকে জঙ্গিদের পুরোপুরি উৎখাতে আর মাত্র কয়েকদিন লাগবে বলে দাবি করেছে ইরাকি বাহিনী।

>>রয়টার্স
Published : 28 June 2017, 04:36 AM
Updated : 28 June 2017, 04:45 AM

সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ওয়েবসাইটে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি ‘অল্প সময়ের মধ্যেই বিজয়ের ঘোষণা দিতে পারবেন’ বলে জানিয়েছেন।

এরপর মঙ্গলবার মসুলে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইরত ইরাকি বাহিনী জানিয়েছে, পুরনো শহরে আইএসের শেষ অবস্থানস্থলে মাত্র ৩৫০ জন জঙ্গি বেসামরিক লোকজনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে ওই অবস্থানস্থলের নদীতীরবর্তী অংশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় ইরাকি বাহিনী। অপরদিকে ইরাকি কেন্দ্রীয় পুলিশ জিবানি মসজিদ থেকে জঙ্গিদের বিতাড়িত করে।  

এখন শহরটির ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থলের ছোট একটি অংশই শুধু জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল নুরি মসজিদের আশপাশের এই এলাকাটিতে চূড়ান্ত অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরাকি বাহিনী। এর মাধ্যমে আট মাস ধরে চলা মসুল অভিযানের চূড়ান্ত সমাপ্তি টানাই তাদের লক্ষ্য। 

মসুলের পুরনো শহরের কেন্দ্রস্থলের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ইরাকের কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিসের (সিটিএস) লে. জেনারেল আব্দুল ওয়াহাব আল সাদি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “পুরনো শহরের অবশিষ্টাংশগুলো মুক্ত করতে অভিযান চলছে।”

সোমবার এই বাহিনী আল ফারুক এলাকা পুনরুদ্ধার করে নুরি মসজিদের একেবারে কাছে পৌঁছে যায়। সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার আল মাশাহদা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।

মসুলের পুরনো শহরের কেন্দ্রস্থলে এই অগ্রগতি অর্জন করার পর এখন সিটিএস-র সৈন্যদের তাদের সাঁজোয়া যান থেকে নেমে হেঁটে গোলাকধাঁধার মতো জটিল গলিপথে এগিয়ে যেতে হবে। এই গলিগুলোর কোনো কোনোটি একজন মানুষ চলাচল করার মতো সরু। এই এলাকার প্রতি মোড়ে মোড়ে কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষ স্তূপীকৃত হয়ে আছে।

এই এলাকার ঘরবাড়ি এতো ঘনসন্নিবদ্ধ যে কোনো গাড়ি এলাকাটির ভিতরে ঢুকতে পারবে না। বিমান হামলায়ও ব্যাপক বেসামরিক প্রাণহানির সম্ভাবনা আছে। এই এলাকাগুলো ঘরবাড়ি এতোই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আছে যে কোনটা ঘরের ভিতরের অংশ আর কোনটা বাইরের অংশ তাও শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এখন অবশিষ্ট এই অংশটির দখল নিতে ইরাকি সেনাদের তাদের পাঁ ও তাদের স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের ওপর ভরসা করে এগিয়ে যেতে হবে। যেখানে মরণপণ লড়াইয়ের জন্য বেসামরিকদের মাঝে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করছে আইএসের সবচেয়ে কঠিন যোদ্ধারা, পাশাপাশি আছে তাদের আত্মঘাতী বোমারু ও স্নাইপাররাও।