রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন নাভালনি।
নাভালনির ডাকে দেশজুড়ে প্রায় ৯৯টি শহরে রোববার বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সেগুলোর মধ্যে ৭৭টিতেই স্থানীয় প্রশাসন বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ করেন নাভালনি।
ওইদিন রাজধানী মস্কোতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে যোগ দিতে আসলে নাভালনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার সঙ্গে আরও অনেক বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়।
পুলিশ রোববার ৫শ’ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। মানবাধিকার গ্রুপগুলো এ সংখ্যা আরও বেশি ১ হাজার বলে জানিয়েছে।
এ ব্যাপক ধরপাকড়েরর মুখেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ উভয়ই পৃথক বিবৃতিতে গ্রেপ্তার হওয়া বিক্ষোভকারীদেরকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়।
জবাবে সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এ ধরনের আহ্বানের সঙ্গে একমত নই।”
“রুশ পুলিশ খুবই পেশাদার এবং দেশের আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে।”
রোববারের বিক্ষোভে সমাবেশ আয়োজনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়নি জানিয়ে পেসকভ আরও বলেন, “জনগণ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করবে, তাতে ক্রেমলিনের কোনও অসুবিধা নাই। কিন্তু কখন এবং কোথায় সমাবেশ আয়োজন করা হবে সে বিষয়ে আগে থেকেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।”
“আমরা ওই সব মানুষকে সম্মান করতে পারি না, যারা ইচ্ছা করে কম বয়সীদের ভুল পথে নিয়ে যায়।”
নাভালনির ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে কিশোররা অংশ নিয়েছে এবং টাকার বিনিময়ে তাদের সমাবেশে আনা হয়েছে বলেও জানান পেসকভ। তিনি বলেন, পুলিশ এ বিষয়ে প্রমাণ জড়ো করছে।
এর আগে সর্বশেষ ২০১১/২০১২ সালে ক্রেমলিন বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ এত বড় এবং বিস্তৃত আকারে হয়েছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওদিকে, মেদভেদেভের মুখপাত্র প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ ‘প্রচারণামূলক আক্রমণ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “এটি আসলে নাভালনির প্রাক-নির্বাচনী প্রচার।”
আগামী বছর রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চতুর্থ মেয়াদের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুতিনের বিপরীতে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছেন নাভালনি। যদিও মতামত জরিপ অনুযায়ী, পুতিনের বিরুদ্ধে নাভালনির জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম।
তবে নাভালনি ও তার সমর্থকদের বিশ্বাস, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে জনগণেরে মধ্যে যে ক্ষোভের জন্ম হয়েছে সেটি কাজে লাগিয়ে তারা নিজেদের পক্ষে জনমত বাড়াতে সক্ষম হবে।