উত্তর প্রদেশে মাংস নিয়ে কড়াকড়িতে উদ্বিগ্ন কসাইরা

ভারতের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের পর মাংসের দোকান আর কসাইখানাগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যেতে থাকায় উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তায় পড়েছে কসাইরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2017, 05:32 PM
Updated : 23 March 2017, 05:32 PM

উত্তর প্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় এসেই কসাইখানা বন্ধে তৎপর হয়েছেন। তিনি হিন্দুদের ধর্মীয় পবিত্রতার প্রতীক গরু রক্ষার পক্ষে সোচ্চার। প্রকাশ্যেই গরুর মাংস ভক্ষণের বিরোধিতা করছেন তিনি।

আদিত্যনাথ এরই মধ্যে অবৈধ কসাইখানাগুলো বন্ধে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং অনেক জায়গায় তা বন্ধও হয়েছে। যদিও সেই কসাইখানাগুলোর বেশিরভাগেই গরু নয় বরং ছাগল এবং মহিষ জবাই হত, বলছে স্থানীয়রা।

অবৈধ এবং অনুমোদনহীন কসাইখানাগুলো বন্ধ করা হয়েছে এলাহাবাদ, বারানসি, আগ্রা এবং গাজিয়াবাদে। এখন রাজ্যজুড়ে কসাইখানা বন্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের পরিদর্শন শুরু হয়েছে। গাজিয়াবাদের ইসলাম নগরে এরই মধ্যে প্রায় ১শ’টি মাংসের দোকানের সবগুলোই বন্ধ হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের বেশিরভাগ মাংসের দোকান এবং কসাইখানা চালায় মুসলিমরা। রাজ্যের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ মুসলিম একাজ করেই জিবীকা নির্বাহ করে। মাংসের দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর মালিক ও কর্মীরা তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে।

দশকের পর দশক ধরে তারা যে কাজ করে আসছে এখন তার ওপরই খড়গহস্তত হচ্ছে সরকার। স্থানীয়রা বিবিসি’কে জানিয়েছে, পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সকালে মাংসের দোকনগুলোতে হানা দিয়েছে।

এক মাংসের দোকানের মালিক মোহম্মদ ইয়াসিনের উক্তি, “এ অন্যায়। তারা মঙ্গলবার সকালে এল। আমাদের সব মাংস নিয়ে গেল। এমনকি মৃত একটি মহিষের মাংসের নমুনা পর্যন্ত তারা নিয়ে গেল। এর কি প্রয়োজন ছিল? তারা পরে এ মাংস একটি মৃত গরুর বলে অভিযোগ করতে পারে।”

কোনও নোটিশ ছাড়াই এমন করা হয়েছে জানিয়ে ইয়াসিন বলেন, “আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। আমরা বাঁচব কিভাবে?”

“সরকার পরিবর্তন হওয়ায় আমাকে মাংস রান্না বন্ধ করতে বলা হয়েছে,” জানান আরেক রেস্তোঁরা ব্যবসায়ী। যার খ্যাতনামা বাগদাদ বিরিয়ানি কর্নার রেস্টুরেন্টটিও বন্ধ হয়ে গেছে।

কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা এসমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, কেবলমাত্র অবৈধ মাংস ব্যবসা কিংবা অনুমোদনহীন কসাইখানাগুলোই বন্ধ করা হচ্ছে।