‘তুর্কি বাহিনীর অভিযানে ১৮ কুর্দি বিদ্রোহী নিহত’

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তুর্কি সেনাবাহিনীর অভিযানে ১২ জন কুর্দি বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তুরস্কের সেনাকর্মকর্তারা।

>>রয়টার্স
Published : 21 Oct 2016, 08:38 AM
Updated : 21 Oct 2016, 11:54 AM

পাশাপাশি ইরাকের উত্তরাঞ্চলে তুর্কি বিমান বাহিনীর হামলায় আরও ছয়জন পিকেকে যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলেও তারা জানিয়েছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে তুর্কি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ইরাকি সীমান্তের কাছে হাক্কারি প্রদেশের চুকুরকা জেলায় অভিযানে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) ১২ জন গেরিলা নিহত হয়েছে।

ইরাকের উত্তরাঞ্চলে বৃহস্পতিবার তুর্কি বিমান বাহিনী আবাসিন বাসিয়ান অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়ে পিকেকের ছয় যোদ্ধাকে হত‌্যা এবং চারটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলেও সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এরআগে বুধবার আলেপ্পোর উত্তরাংশে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার গণতন্ত্রপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর (এসডিএফ) সদস্যদের লক্ষ করে বিমান হামলা চালিয়েছে তুরস্ক।

তুর্কি বাহিনী ২০ দফার বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে বলে কুর্দি কর্তৃপক্ষ এবং যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থা জানিয়েছে।

বিমানগুলো আল-হাসিয়া, উম আল-কুরা এবং উম হোসা গ্রামে হামলা চালায়। এই গ্রামগুলো ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের দখল থেকে এসডিএফ বিদ্রোহীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বলে দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার তুর্কি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমানগুলো সিরিয়ার কুর্দি ওয়াইপিজি বিদ্রোহীদের ১৮টি অবস্থান লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে। এতে ১৬০ থেকে ২০০ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত যোদ্ধাদের প্রধান সহায়তাকারী তুরস্ক।

ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত থেকে হটিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে অগাস্ট থেকে সিরিয়ায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুর্কি বাহিনী।

এই অভিযানে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী  ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে আইএসের দখল থেকে সীমান্তের এলাকাগুলো উদ্ধারে বিমান হামলাসহ সামরিক সহায়তা দিচ্ছে  তুর্কি বাহিনী।

সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক হস্তক্ষেপের অন্য একটি কারণ হচ্ছে, এসডিএফ যেন তুর্কি সীমান্তের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে।

এসডিএফ-ভুক্ত কুর্দি পপুলার প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) ইতিপূর্বে অভিযোগ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তুর্কি অভিযান আসলে সিরীয় ভূখণ্ড দখল করার অজুহাত।

কুর্দি ওয়াইপিজি এসডিএফের সবচে শক্তিশালী বাহিনী। তুরস্ক মনে করে নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সিরীয় শাখা কুর্দি ওয়াইপিজি।

পিকেকে দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের ভূখণ্ডের দাবিতে তুর্কি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে।

তবে ওয়াইপিজি ও পিকেকে নিজেদের মধ্যে সরাসরি সম্পর্কের বিষয় অস্বীকার করে আসছে।

বুধাবর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইপ এরদোয়ান হুঁশিয়ার করে বলেন, তুরস্ক একাই বিদেশের মাটিতে তার শত্রুদের মূলোৎপাটনে সক্ষম।

পিকেকের সঙ্গে তুর্কি সরকারের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই কুর্দি।

পিকেকে-কে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।