প্রখর তাপমাত্রা থেকে রেহাই পেতে গ্রীষ্মকাল থেকে বিশ্বকাপ সরিয়ে নেয়া ছাড়াও সন্ধ্যায় ম্যাচ শুরু করার কথাও বলেছে সংগঠনটি। তা করা হলে আগের অনেক বিশ্বকাপের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম তাপমাত্রায় খেলা যাবে বলে মনে করে তারা।
উদাহরণ হিসেবে মেক্সিকো ১৯৮৬, যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৪ ও ব্রাজিল ২০১৪ বিশ্বকাপের তাপমাত্রার কথা উল্লেখ করেছে ইসিএ।
উত্তর গোলার্ধে শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজন করলে ইউরোপীয় লিগগুলোর সমস্যা হয় বলে সাধারণত গ্রীষ্মেই বিশ্বকাপ হয়। তবে গ্রীষ্মে কাতারের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে বলে সে সময় বিশ্বকাপ আয়োজনে আপত্তি জানায় অনেক দেশ। তাদের আশঙ্কা, প্রচণ্ড গরমে খেলা হলে তা খেলোয়াড় ও দর্শকদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ইসিএর প্রস্তাবটি সোমবার ফিফার টাস্ক ফোর্সে তোলা হবে। এই টাস্ক ফোর্সই কাতার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের সময়সূচি নির্ধারণ করবে।
কাতারে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ গ্রীষ্মকাল থেকে সরিয়ে নেয়া হবে কিনা তা নির্ধারণে ২০১৩ সালের অক্টোবরে টাস্ক ফোর্সটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা (ফিফা)।
এই টাস্ক ফোর্স গত সেপ্টেম্বর মাসে আলোচনা শুরু করে, যাতে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এবং নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা হয়।
গ্রীষ্মে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির প্রচণ্ড তাপমাত্রার জন্য বিশ্বকাপের সময়টা শীতকালে নিয়ে যাওয়ার কথা এর আগে বেশ জোড়েসোরেই ওঠে। ফিফা প্রেসিডেন্ট জেপ ব্লাটারও এই পরিকল্পনার কথাই বলেছিলেন।
এপ্রিল-মে মাসে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাব নিয়ে ইসিএ সভাপতি কার্ল-হেইঞ্জ রুমেনিগে বলেন, “আমাদের মতে, এই প্রস্তাবটিই সেরা বিকল্প। এতে ক্লাব ফুটবল মৌসুমটাকে ঠিক রেখেই আবহাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হচ্ছে।"
এপ্রিল-মে মাসে বিশ্বকাপ হলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বিভিন্ন দেশের লিগ আর ঘরোয়া বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতার সময়-সূচিতেও কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
ইসিএর প্রস্তাবনায় বলা হয়, এপ্রিল-মে মাসে বিশ্বকাপ হলে সে বছর লিগ মৌসুম এপ্রিলের মাঝামাঝি শেষ করা হবে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালও মের শেষের বদলে সেই সময় হবে।
খেলোয়াড়দের তাদের জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করার জন্য ১৮ এপ্রিলের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।
ইসিএর প্রস্তাবে বিশ্বকাপ ২৮ এপ্রিল শুরু করে ২৯ মে ফাইনাল আয়োজনের কথা বলা হয়।
এপ্রিলে শেষ করার জন্য ওই মৌসুমে লিগ দুই সপ্তাহ আগে শুরু করা হবে। সঙ্গে দুই বা তিন রাউন্ড সপ্তাহের মাঝেও খেলা রাখারও কথা বলে ইসিএ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচগুলো চার সপ্তাহের বদলে দুই সপ্তাহে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসিএ। আর ঘরোয়া কাপের খেলাগুলো বিশ্বকাপের পর আয়োজনের কথা বলা হয়।
২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজকরা অবশ্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাপমাত্রা কমিয়ে স্টেডিয়াম ঠাণ্ডা রাখা হবে।