শনিবার বিকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ গ্রামে নিজের বাড়িতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা বলেন তিনি।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন গুলশান হামলার ‘অন্যতম হোতা’ নুরুল ইসলাম মারজান ও সাদ্দাম।
সাদ্দামও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ। রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি, শরীফের খাদেম রহমত আলীকে হত্যা ও বাহাই সম্প্রদায়ের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি তিনি।
তাছাড়া পঞ্চগড়ের মঠ অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে হত্যা, কুড়িগ্রামের ধর্মান্তরিত মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীকে হত্যা, গাইবান্ধার চিকিৎসক দীপ্তি, জঙ্গি সদস্য ফজলে রাব্বি, ব্যবসায়ী তরুণ দত্ত হত্যা এবং নীলফামারীতে মাজারের খাদেম ও দিনাজপুরে এক চিকিৎসককে হত্যাচেষ্টা মামলায়ও অভিযোপত্রের আসামি ছিলেন সাদ্দাম।
ছেলের কৃতকর্মের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সাদ্দামের বাবা তাজুল আলম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে অপকর্মের সাজা পেয়েছে। আমরা তার লাশ আনতে যাব না।
“লাশ নিষ্পাপ। সরকার নিজস্ব উদ্যোগে পাঠালে আমরা দাফনের ব্যবস্থা করব।”
তবে শেষবারের মতো ছেলের মুখ দেখতে চান সাদ্দামের মা সুফিয়া বেগম ওরফে ছোবেদা বেগম।
তিনি বলেন, “ছেলে কী করেছে জানি না। তার মুখটা দেখতে ইচ্ছা করছে। সরকারের কাছে অনুরোধ লাশটা যেন পাঠায় দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
“এখানে কবর দিব। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করব।”
শনিবার সাদ্দামের বাড়িতে গিযে এলাকার নারী-পুরুষের ভিড় দেখা যায়। তারা যাকে ‘ভালো ছেলে’ হিসেবে জানতেন তার এই পরিণতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়াটা তার ‘কৃতকর্মের’ ফল বলে মনে করেন তারা।
গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম, শামসুল হক ও নুরুজ্জামান মিয়া জানান, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই এলাকাতে লেখাপড়া করেছেন সাদ্দাম। এরপর থেকে বাইরে। তাকে ‘ভালো ছেলে’ বলে জানত সবাই।
২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘প্রেম করে’ মাদ্রাসা ছাত্রী ফারহানা আকতারকে বিয়ে করেন সাদ্দাম। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোপালচরণ গ্রামের ফুলমিয়ার মেয়ে ফারহানা। বিয়ের পর থেকে সাদ্দাম সুন্দরগঞ্জে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন।
সাদ্দামের বড়ভাই মিজানুর রহমান বলেন, “জঙ্গিবাদ আমরা পছন্দ করি না। সাদ্দাম কীভাবে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ল তা বুঝতে পারছি না। তার এই ঘৃণ্য কাজের জন্য আমরা মর্মাহত।”