পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদসহ পাঁচ সংগঠন বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ হরতাল আহ্বান করে।
প্রতিনিধিরা জানান, সকাল থেকে পার্বত্য জেলাগুলোয় দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌরুটে কোনো যান চলছে না। জেলা শহরগুলোর সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
বান্দরবানের সমঅধিকার আন্দোলনের সভাপতি সেলিম আহম্মদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার বাঙালির স্বার্থবিরোধী ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন (সংশোধন) ২০১৬’ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়ার পর সংসদকে পাশ কাটিয়ে অধ্যাদেশ আকারে জারির চেষ্টা চালাচ্ছে।
“তাই পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধভাবে এর প্রতিবাদে হরতাল কর্মসূচি পালন করছে। আইন পাস হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”
ছাত্র পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো. ইব্রাহীম বলেন, পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিষয়ক সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা এই হরতাল ডাকা হয়েছে।
“সংশোধনী আইনে কমিশনের ৯ সদস্যের মধ্যে মাত্র ২ জন বাঙালি হওয়ায় বাঙালিরা পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিবিষয়ক ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।”
প্রতিনিধিরা জানান, হরতালের সমর্থনে সকালে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সব জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে পিকেটিং ও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়েছে।
তিন শহরেরই বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ দেখেছেন প্রতিনিধিরা।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হরতালে যাতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না হয় পুলিশ সেদিকে সজাগ রয়েছে।
হরতাল উপলক্ষে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলাজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ রশিদ বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হচ্ছে। কোথাও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
নিরাপত্তা রক্ষা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
গত ১ অগাস্ট পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সংশোধনী আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়ার পর পার্বত্য অঞ্চলের পাঁচটি বাঙালি সংগঠন বিক্ষোভ-সমাবেশ, মানববন্ধন ও হরতাল কর্মসূচির ডাক দেয়। পাঁচ সংগঠন হল পার্বত্য সমঅধিকার আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য গণপরিষদ, পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্রঐক্য পরিষদ।