ভারতের সেই হাতি এখনও সিরাজগঞ্জে, পাহারায় ৫ পুলিশ

পাহাড়ি ঢলে ভারত থেকে নেমে আসা হাতিটি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে; তার পাহারায় নিয়োজিত রয়েছে পাঁচ পুলিশ।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2016, 12:57 PM
Updated : 16 August 2016, 10:00 AM

কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া হয়ে তিন দিন ধরে সিরাজগঞ্জের চরে হাতিটি রয়েছে। তবে এখনও উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেনি বনবিভাগ।

এদিকে হাতিটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমালেও তাণ্ডবের আতঙ্কে রয়েছেন চরাঞ্চলের আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

কাজিপুর থানার ওসি সুমিত কুমার কুন্ডু জানান, হাতিটি বর্তমানে ছিন্না এলাকার ছোট একটি চরে অবস্থান করে কাঁশবন খাচ্ছে। এ চরে কোনো বসতি নেই।

“পুলিশের তরফ থেকে কিছু কলাগাছ সরবরাহ করা হয়েছে এবং এলাকার লোকজনের জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে এক এসআইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

ঘটনাস্থলে পুলিশ ছাড়া  আর কোনো সংস্থার কেউ নেই বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফজলুল হক জানান, মঙ্গলবার ভোরে হাতিটি এই চরাঞ্চলে আসে। বুধবার পর্যন্ত হাতিটি যমুনা নদীর পূর্বপাশে মাজনাবাড়ি এলাকার চরে ছিল।

“বৃহস্পতিবার ভোরে প্রায় এক কিলোমিটার নদী সাঁতরে ছিন্নাবাড়ি চরে আশ্রয় নিয়েছে। হাতিটি যদি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে তাহলে জানমালের ক্ষতি হতে পারে।”

এছাড়াও হাতিটি চরের ধান ও পাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে বলে তিনি দাবি করেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন বলেন, এ রকম হাতি উদ্ধারে বাংলাদেশে কোনো সরঞ্জাম নেই।

বিষয়টি মনিটর করার জন্য বন বিভাগের পাঁচ সদস্যের একটি দল ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার কথা শুনেছেন বলেও জানান তিনি।

ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত এসআই জুবায়দুল ইসলাম বলেন, “হাতিটি ছিন্নার চরে শান্ত অবস্থায় রয়েছে। চরের কাঁশবনের পাশাপাশি আমাদের দেওয়া কলাগাছও খাচ্ছে।”

গত ২৬ জুন বুনো এই হাতিটি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার আন্তর্জাতিক মেইন পিলার নম্বর ১০৫২-এর কাছ দিয়ে বানের জলে ভেসে বাংলাদেশে আসে।

ভারতের আসাম রাজ্যের শিশুমারা পাহাড়ি এলাকা থেকে এই হাতি বাংলাদেশে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রৌমারী সীমান্ত দিয়ে আসা হাতিটি কয়েক দফা অবস্থান পরিবর্তনের পর ব্রহ্মপুত্র নদের বাগুয়ার চরের কাদায় আটকা পড়ে। সেখানে দুদিন আটকে থাকার পর নিজের চেষ্টায় মুক্ত হয়ে নয়ারচর কাশবনে যায়। পরে জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের চরে গিয়ে অবস্থান নেয়। মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের চরে পৌঁছে হাতিটি।

এতো দিনেও হাতি উদ্ধার না হওয়া বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় ওয়াইল্ড লাইফ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, হাতিটি সংজ্ঞাহীন করে উদ্ধার করা যায়। তবে তাকে সংজ্ঞাহীনের সময়কাল হবে এক থেকে দেড়ঘণ্টা।

“যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে এই স্বল্প সময়ে হাতিটির বর্তমান অবস্থান থেকে উদ্ধার করা সম্ভব নয়।”