বাংলাদেশের একটি উপজেলা শহরে সোমবার রাতের এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বার্তা এসেছে বলে দাবি করেছে সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ।
এর আগেও বাংলাদেশে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে আইএসের ‘দায় স্বীকারের’ খবর এই ওয়েবসাইটটি দিলেও সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এই জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনো তৎপরতা এদেশে নেই।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেলেখাল বাজারে ধর্মান্তরিত হোমিও চিকিৎসক সমির উদ্দিনকে একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডের পরও আইএসের বার্তার খবর দিয়েছিল সাইট।
কালীগঞ্জে নিহত আব্দুর রাজ্জাক (৪৫) খোড়াশুনি গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের একাংশের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সেক্রেটারি রাজ্জাক পেশায় ছিলেন হোমিও চিকিৎসক।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ডে রাস্তার উপর রাজ্জাককে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ আজবাহার আলী জানিয়েছেন।
তাকে কালীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আজবাহার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজ্জাকের দেহে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন দেখে হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”
সাইটের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার রাজ্জাক হত্যাকাণ্ডে আইএসের বার্তা স্বীকারের খবর দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, শিয়া সম্প্রদায়ের শীর্ষ এই নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, তিনি (রাজ্জাক) সুন্নি মুসলমান ছিলেন। কখনও শিয়া মতবাদ গ্রহণ করেননি।”
চিকিৎসক রাজ্জাকের চেম্বারের নাম ছিল ‘খোমেনি হোমিও হল’। তার দোকান ও বাড়িতে শিয়াপ্রধান দেশ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমিনির ছবি ছিল।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন অন্য অংশের ঝিনাইদহ শাখা সভাপতি আব্দুল বারী সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি শিয়া মতবাদে বিশ্বাসী হয়েছিলেন। মাঝে মাঝে যশোরে গিয়ে শিয়াদের সঙ্গে বৈঠক করতেন।”
পুলিশ সুপার আলতাফ বলেন, রাজ্জাকের ঘরে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কাগজ পাওয়া গেছে। তিনি মাঝে মাঝে বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ মাহফিল করতেন।
এই হত্যাকাণ্ডের কারণ কিংবা জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
তদন্ত চলছে জানিয়ে পুলিশ সুপার স্থানীয় একটি বিরোধের দিকেও ইঙ্গিত করেন।
“তার বাড়ির পাশে একটি বাড়িতে মাদকের ব্যবসা চলত। তিনি তার বিরোধিতা করতেন। তাদের কয়েকজন ধরাও পড়ে। এজন্য হোমিও ডাক্তারকে দোষারোপ করত মাদক ব্যবসায়ীরা। কয়েক দিন আগে তার কাছে মোবাইল ফোনে দু লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করা হয়েছিল।”
সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।