শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই শঙ্কার কথা জানান তিনি, যাকে ওয়ান-ইলেভেনের অন্যতম ‘কুশীলব’ বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন।
সংলাপ নিয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গীর সমালোচনা করে মান্না বলেন, “সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। যদি কেউ একে স্কিপওভার করতে চায়, তবে একটা অসাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
“উনারা বলছেন, আমরা ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলব, কিন্তু তারা এটা করে (সংলাপে না বসে) ওয়ান-ইলেভেনর এর রাস্তা তৈরি করছেন।”
দুই প্রধান রাজনৈতিক জোটের হানাহানির মধ্যে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনাবাহিনীর সমর্থনে ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যারা দুই বছর দেশ শাসন করেন।
এক সময়ের বামপন্থি নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না তখন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় দলে সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন, যাকে ‘মাইনাস টু ফর্মুলার’ অংশ হিসেবে দেখছিল তার দলের কর্মীরা।
এরপর দলীয় কাউন্সিলে পদ হারানো মান্না নাগরিক ঐক্য নামে সংগঠনটি গঠন করে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।
বর্তমানে দুই প্রধান রাজনৈতিক জোটের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে গত এক মাস ধরে চলমান অবরোধে রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে সংলাপ নিয়ে নাগরিক সমাজের একাংশের উদ্যোগের সঙ্গে মান্নাও ছিলেন।
তবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক’ ব্যানারে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে রাজনীতিক মান্নাকে দেখা যায়নি। রাজনীতিবিদ মান্না ও কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে প্রকাশ্যে এসেছেন তারা।
সংলাপের দাবিতে নাগরিক ঐক্যের কর্মসূচি হিসেবে শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন মান্না।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা চলমান অবরোধে উদ্বেগ জানিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি শান্ত করার ওপর জোর দেন তিনি।
“দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। এখনও অবরোধ চলছে, মাঝেমধ্যে হরতাল চলছে। মৃত্যুর মিছিলে এখন লাশের সংখ্যা শতের কাছাকাছি। ক্ষতির পরিমাণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মতো, জাতীয় বাজেটের অর্ধেকের মতো। শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। কোনো উন্নতি আছে বলে দেখছি না।”
“এই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, সহিংসতা যেহেতু মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে, তাই সহিংসতা চাই না, শান্তি চাই, গণতন্ত্র চাই। এজন্য জাতীয় সংলাপের বিকল্প নেই।”
সংলাপের দাবিতে নাগরিক ঐক্যের অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জানিয়ে মান্না বলেন, গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মুহাম্মদ মুনসুর ও বিকল্প ধারার মহাসচিব আব্দুল মান্নান যোগ দেবেন বলে তিনি আশা করছেন।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আসিফ নজরুল, দিলারা চৌধুরী সংহতি প্রকাশ করতে আসবেন বলেও জানান তিনি।