লজ্জার হারে সিরিজ খোয়াল বাংলাদেশ

বোলারদের লড়াই সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার স্বপ্ন দেখিয়েছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় আরেকটি লজ্জার হারে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2014, 12:59 PM
Updated : 23 August 2014, 05:13 AM

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৭০ রানে অলআউট করে ১৭৭ রানের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বনিম্ন রান। এ নিয়ে টানা দুই সিরিজে কোনো ম্যাচে একশ' রানের নিচে অলআউট হলো বাংলাদেশ।

গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে ৫৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ২০১১ সালে বিশ্বকাপের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এটি দুটি ইনিংসই বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ।

শুক্রবার গ্রেনাডার সেন্ট জর্জেস ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৪৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ২৪ ওভার ৪ বলে ৭০ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

তামিম ইকবাল ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কে পৌঁছাতে না পারায় লক্ষ্যের ধারে কাছেও যেতে পারেনি অতিথিরা।

এক সময়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৫৭ রান। এরপর মাত্র ১৩ রান যোগ করতে শেষ ৭ উইকেট হারায় অতিথিরা। তখনও ২৫ ওভার ২ বল খেলা বাকি।

সর্বোচ্চ ৩৭ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্র ৭ রান, যা আসে প্রথম ম্যাচে শতক করা এনামুল হকের ব্যাট থেকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নেন ম্যাচ সেরা সুনিল নারাইন ও কেমার রোচ। এই দুইজনই বাংলাদেশ ইনিংসের মেরুদণ্ড গুড়িয়ে দেন।

এর আগে কার্ক এডওয়ার্ডসকে বোল্ড করে দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন আল-আমিন হোসেন। তবে ড্যারেন ব্র্যাভোকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন ক্রিস গেইল।

গেইলকে (৫৮) বিদায় করে ৮৮ রানের জুটি ভাঙার কৃতিত্ব মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। গেইলের ৬৭ বলের ইনিংসটি ৫টি ছক্কা ও ৩টি চার সমৃদ্ধ।

এর আগে আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ চেয়ে বেঁচে যান গেইল। আরেকবার বাংলাদেশ তার আউট চেয়ে রিভিউ নিলেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলায়নি। দুবারই বোলার ছিলেন মাহমুদুল্লাহ।

দিনেশ রামদিনের সঙ্গে ৫১ রানের অরেকটি ভালো উপহার দেন ড্যারেন ব্র্যাভো (৫৩)। অর্ধশতকে পৌঁছানোর পর সোহাগ গাজীর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনি।

রামদিন ও লেন্ডল সিমন্সকে রানের জন্য রীতিমত সংগ্রাম করতে হয়। পাওয়ার প্লেতেও তাদের সহজে রান দেননি অতিথি বোলাররা। ৪০তম ওভারে রামদিন আল-আমিনের বলে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হলে খেলার চিত্র কিছুটা পাল্টায়।

কাইরন পোলার্ড ক্রিজে আসার পর স্বাগতিকদের রানের গতি বাড়ে। ৪৭তম ওভারে তাকে বোল্ড করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান মাশরাফি বিন মুর্তজা। এর আগেই সিমন্সের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন পোলার্ড (২৬)।

অতিরিক্ত শট খেলতে গিয়ে মাশরাফির পরের ওভারে মাহমুদুল্লার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সিমন্স (৪০)। পরের বলে ডোয়াইন ব্র্যাভোকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা জাগান মাশরাফি। হ্যাটট্রিক বল ঠেকিয়ে দিয়ে দেশসেরা পেসারকে হতাশ করেন সুনিল নারাইন।

বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এখন মাশরাফি (১৭২)। ডোয়াইন ব্র্যাভোকে বিদায় করে সাকিব আল হাসানকে (১৭১) পেছনে ফেলেন তিনি। মাশরাফির সামনে আছেন কেবল আব্দুর রাজ্জাক (২০৬)।

আল-আমিনের করা শেষ ওভারে ১৫ রান নিয়ে দলকে আড়াইশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান নারাইন (অপরাজিত ৭) ও জেসন হোল্ডার (অপরাজিত ৮)।

৩৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার মাশরাফি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৪৭/৭ (গেইল ৫৮, এডওয়ার্ডস ০, ড্যারেন ব্র্যাভো ৫৩, রামদিন ৩৪, সিমন্স ৪০, পোলার্ড ২৬, ডোয়াইন ব্র্যাভো ৬, হোল্ডার ৮*, নারাইন ৭*; মাশরাফি ৩/৩৯, আল-আমিন ২/৬০, মাহমুদুল্লাহ ১/৪৭, সোহাগ ১/৪৭)

বাংলাদেশ: ২৪.৪ ওভারে ৭০ (তামিম ৩৭, এনামুল ৭, ইমরুল ১, শামসুর ৪, মুশফিক ৬, মাহমুদুল্লাহ ০, নাসির ৬, সোহাগ ২, মাশরাফি ২, রাজ্জাক ০*, আল-আমিন ০; নারাইন ৩/১৩, রোচ ৩/১৯, রামপল ২/২১, হোল্ডার ১/১৭)

ম্যাচ সেরা: সুনিল নারাইন।