দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন সকালে ৫০তম অর্ধশতকে পৌঁছানোর পর সাইদ আজমলের শিকারে পরিণত হন জয়াবর্ধনে। প্রথম ইনিংসেও এই অফস্পিনারই বিদায় করেছিলেন তাকে। শেষ টেস্ট ইনিংসে জয়াবর্ধনের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান। তার ১৩৭ বলের ইনিংসটি ৮টি চার সমৃদ্ধ।
শেষ ইনিংসে অপরাজিত থাকলে গড়টা ৫০ এর ওপরেই রাখতে পারতেন জয়াবর্ধনে। আর ৯০ করে আউট হলেও তার গড় হত ৫০।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকার সাত নম্বরে থেকে টেস্টকে বিদায় জানান জয়াবর্ধনে। তার সামনে আছেন ব্রায়ান লারা, কুমার সাঙ্গাকারা, রাহুল দ্রাবিড়, জ্যাক ক্যালিস, রিকি পন্টিং আর শচীন টেন্ডুলকার।
১৯৯৭ সালে কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অভিষেক হয় জয়াবর্ধনের। ভারতের বিপক্ষে সেই ইনিংসে ৯৫২ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসে জয়াবর্ধনের অবদান ছিল ৬৬ রান।
নিজের জাত চেনাতে বেশি দিন সময় নেননি জয়াবর্ধনে। নিজের চতুর্থ টেস্টেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ১৬৭ রানের চমৎকার এক ইনিংস। আর সপ্তম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে খেলা ২৫২ রানের ইনিংসটি তাকে নিয়ে যায় নতুন উচ্চতায়।
২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এসএসসিতে সাঙ্গাকারাকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৬২৪ রানের জুটি গড়ে করেন বিশ্ব রেকর্ড। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যে কোনো উইকেটে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি।
এই জুটি গড়ার পথে জয়াবর্ধনে খেলেন ৩৭৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। টেস্টে এটি চতুর্থ ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।
টেন্ডুলকার-দ্রাবিড় জুটির পর ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল জুটির নিমার্তা জয়াবর্ধনে ও সাঙ্গাকারা। এই দুজনে ১২০ ইনিংসে ১৯টি শত আর ২৭টি অর্ধশত রানের জুটি উপহার দিয়েছেন। জুটিতে তাদের অবদান ৬ হাজার ৫৫৪ রান।
ভারতের টেন্ডুলকার ও দ্রাবিড় তৃতীয় উইকেটে ১৪৩ ইনিংসে ২০টি শতক আর ২৯টি অর্ধশতকের জুটির সাহায্যে করেন ৬ হাজার ৯২০ রান।
এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রান আর শতক দুটি রেকর্ডই জয়াবর্ধনের। দুটি রেকর্ডই ঘরের মাঠ এসএসসিতে করেন জয়াবর্ধনে। ২৭ ম্যাচে ১১টি শতক আর ৯টি অর্ধশতকের সাহায্যে এখানে ২ হাজার ৯২১ রান করেন তিনি।
২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দেশকে নেতৃত্ব দেন জয়াবর্ধনে। ২০১২ সালেও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নেতৃত্বে আসেন তিনি। সনাৎ জয়াসুরিয়ার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে সফল অধিনায়ক জয়াবর্ধনের অধীনে ৩৮ টেস্টে ১৮টিতে জেতে শ্রীলঙ্কা, ১২টিতে ড্র করে আর হারে ৮টিতে। জয়াসুরিয়ার পরিসংখ্যানও ঠিক তাই।
চলতি বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে ক্রিকেটের এই সংস্করণকে বিদায় জানান জয়াবর্ধনে। তবে ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এখনো ওয়ানডে খেলবেন তিনি।