লর্ডসে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে রোববার ভারতকে ৯ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। মেয়েদের বিশ্বকাপে ইংলিশদের এটি চতুর্থ শিরোপা।
৫০ ওভারে ইংল্যান্ড তুলেছিল ৭ উইকেটে ২২৮। রান তাড়ায় এক পর্যায়ে ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৯১। সেখান থেকেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তারা, শেষ ৭ উইকেট হারায় ২৮ রানে। ৮ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় ২১৯ রানে।
এই ধ্বংসযজ্ঞের মূল নায়িক আনিয়া শ্রাবসোল। অবিশ্বাস্য শেষ স্পেলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। সঙ্গে শুরুর ব্রেক থ্রু মিলিয়ে এই পেসার ৬ উইকেট নিয়েছেন ৪৫ রানে।
৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫৪ করে ফেরেন হারমানপ্রিত। ভারত এগিয়ে যাচ্ছিল তবু। ভেদা কৃষ্ণমূর্তিকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রান তোলেন পুনম।
ম্যাচের মোড় বদলের শুরু এই জুটি ভাঙা দিয়েই। তৃতীয় স্পেলে ফিরে শ্রাবসোল প্রথম ওভারেই ফেরান পুনমকে। এই ওপেনার ফিরেছেন ৮৬ রানে।
শ্রাবসোলের ছোবলে এরপর একের পর এক ধরা দিয়েছে উইকেট। এর মধ্যে সহজ স্টাম্পিং মিস করেছেন সারাহ টেইলর, সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন অধিনায়ক হেদার নাইট, জেরি গান। তবু শেষ হাসি ইংলিশ মেয়েদেরই। ৪৯তম ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ভারতের ইনিংস শেষ করেছেন শ্রাবসোল।
শেষের মত ম্যাচের শুরুটাও ছিল ইংলিশদের। উদ্বোধনী জুটিতে তারা তোলে ৪৭ রান।
অভিজ্ঞ ঝুলন গোস্বামী দুর্দান্ত বোলিং করেছেন শুরু থেকেই। মাঝে লেগ স্পিনার পুনম যাদবকে পড়তে হিমশিম খেয়েছে ইংলিশরা। তিনে নেমে সারাহ টেলর ৪৫ রান করলেও মারতে পারেননি একটিও বাউন্ডারি।
নাটালি শিভার নামার পর একটু বাড়ে রানের গতি। তবে তাকেও বড় ইনিংস খেলতে দেয়নি ভারত। ফেরেন ৫১ রানে।
শেষদিকে ক্যাথেরিন ব্রান্টের ৩৪ ও জেরি গানের ২৫ রানে তারা যেতে পারে ২২৮ পর্যন্ত।
১০ ওভারে মাত্র ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন গোস্বামী, ৩৬ রানে দুটি পুনম।
কিন্তু বোলারদের গড়ে দেওয়া সেই মঞ্চে নিজেদের কাজটা করতে পারেনি ভারতের ব্যাটাররা। দশর্কে টইটম্বুর লর্ডসে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিজয় কেতন উড়িয়েছে ইংলিশ মেয়েরা।
ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া বোলিংয়ে অবধারিতভাবেই ফাইনালের সেরা শ্রাবসোল। টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৪১০ রান করে প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট ইংলিশ ওপেনার ট্যামসিন বিউমন্ট।
চারবার শিরোপা জিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার আরেকটু কাছে গেল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ছয়বার, একবার নিউ জিল্যান্ড। ভারতের সুযোগ ছিল এই বলয়ের বাইরে প্রথম শিরোপা জয়ের। শেষ পর্যন্ত হলো না।
যে লর্ডসের ব্যালকনিতে ১৯৮৩ বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন কপিল দেব, ২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জিতে জার্সি খুলে মাথার ওপর ঘুরিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি, সেই ব্যালকনিতে ট্রফি হাতে দাঁড়ানো হলো না মিতালি রাজের। স্বাগতিক দর্শকদের উৎসবে ভাসাল ইংলিশ মেয়েরা।