যুবরাজ-ধোনির শতকে ভারতের সিরিজ জয়

প্রায় পাঁচ বছর পর তিন অঙ্কের দেখা পেলেন যুবরাজ সিং। সঙ্গে নেতৃত্ব ছাড়ার পর মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রথম শতকে রানের পাহাড় গড়লো ভারত। ওয়েন মর্গ্যানের অধিনায়কোচিত ইনিংসে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেলেও সেই পাহাড় টপকাতে পারেনি ইংল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2017, 05:03 PM
Updated : 19 Jan 2017, 05:03 PM

কটকের বারবাতি স্টেডিয়ামে বুধবার রান বন্যার ম্যাচে শেষ দিকের দারুণ নাটকীয়তায় ১৫ রানে জিতেছে ভারত। তিন ম্যাচের সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল বিরাট কোহলির দল।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে যুবরাজ ও ধোনির গড়ে দেওয়া ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ৬ উইকেটে ৩৮১ রান করে ভারত। জবাবে মর্গ্যানের শতকে সম্ভাবনা জাগালেও আট উইকেটে ৩৬৬ রান পর্যন্ত যায় অতিথিদের ইনিংস।

বিশাল রান তাড়ার শুরুতেই অ্যালেক্স হেলসকে হারানো ইংল্যান্ড দ্বিতীয় উইকেটে জো রুট ও জেসন রয়ের জুটিতে ভালোই জবাব দিচ্ছিল। কিন্তু রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা ২০তম ওভারের পঞ্চম বলে রুট (৫৪) ক্যাচ আউট হয়ে ফিরলে ভাঙে ১৬ ওভার স্থায়ী শতরানের জুটিটি। অল্প সময়ের ব্যবধানে রয়, স্টোকস ও বাটলারও ফিরে গেলে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে অতিথিরা।

৮২ রান করে ফেরেন ওপেনার রয়। তার ৭৩ বলের ইনিংসটি ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় গড়া।

ষষ্ঠ উইকেটে মইন আলি ও ওয়েন মর্গ্যানের ঝড়ো ব্যাটিং দুরূহ লক্ষ্যে পৌঁছানোর আশা জাগে আবার। ১২.১ ওভার স্থায়ী জুটিতে ওভারপ্রতি ৭.৬৩ গড়ে ৯৩ রান তোলেন তারা।

এক দিক আগলে রেখে শেষ চেষ্টা চালান মর্গ্যান। লিয়াম প্লানকেটের সঙ্গে ৪.১ ওভারে ৫০ রান যোগ করেন। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৩৩। কঠিন হলেও অসম্ভব নয়; কিন্তু অধিনায়ক রান আউট হয়ে ফিরলে ইংল্যান্ডের আশাও শেষ হয়ে যায়।

নবম শতক গড়ার পথে ১০২ রান করেন অধিনায়ক মর্গ্যান। তার ৮১ বলের ইনিংসটি ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় গড়া।

এর আগে শুরুতেই ভারতকে পিছনে ঠেলে দিয়েছিলেন ক্রিস ওকস। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে এই পেসারের প্রথম বলে স্লিপে ধরা পড়েন লোকেশ রাহুল আর শেষ বলে বেন স্টোকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আগের ম্যাচেই ম্যাচে শতক করা কোহলি।

নিজের পরের ওভারের প্রথম বলেই শিখর ধাওয়ানের ফিরতি ক্যাচ ফেলেন ওকস। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি বাঁ-হাতি ওপেনার। ওভারের চতুর্থ বল ব্যাটের ভিতরের কানায় লেগে অফস্টাম্পে লাগে। ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ২৫/৩।

অধিনায়কসহ প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া স্বাগতিকরা যুবরাজ-ধোনির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায়। বলের সঙ্গে রান তোলায় পাল্লা দিয়ে ২৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা।

ওয়ানডে ক্রিকেটে চতুর্থ উইকেটে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। ১৯৯৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই মাঠেই মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ও অজয় জাদেজার অবিচ্ছিন্ন ২৭৫ রানের জুটিটি সর্বোচ্চ।

৪৩তম ওভারের শেষ বলে যুবরাজকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ বানিয়ে ৩৮.২ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন ওকস। ফেরার আগে ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রানের ইনিংস খেলেন এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটা তার চতুর্থ ও মোট চতুর্দশ ওয়ানডে শতক। শেষ শতক করেছিলেন ২০১১ সালের মার্চে চেন্নাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

১২৭ বলের ইনিংসে ২১টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন যুবরাজ। সঙ্গীর বিদায়ের পর মারমুখী হয়ে ওঠেন ধোনি। ১০৬ বলে শতক পূরণের পর ১৬ বলে যোগ করেন আরও ৩৪ রান।

১২২ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ৬টি ছক্কায়। ওয়ানডেতে ধোনির এটা দশম শতক।

শেষ দিকে কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া ও রবিন্দ্র জাদেজার ছোট কিন্তু ঝড়ো ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে ভারত।

ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার ওকস ৬০ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভারে ৩৮১/৬ (রাহুল ৫, ধাওয়ান ১১, কোহলি ৮, যুবরাজ ১৫০, ধোনি ১৩৪, যাদব ২২, পান্ডিয়া ১৯*, জাদেজা ১৬*; ওকস ৪/৬০, প্লানকেট ২/৯১)।

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৬৬/৮ (রয় ৮২, হেলস ১৪, রুট ৫৪, মর্গ্যান ১০২, স্টোকস ১, বাটলার ১০, মইন ৫৫, ওকস ৫, প্লানকেট ২৬, উইলি ৫; অশ্বিন ৩/৬৫, বুমরাহ ২/৮১, জাদেজা ১/৪৫, ভুবনেশ্বর ১/৬৩) 

ফল: ভারত ১৫ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: যুবরাজ সিং