‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে’ পিছিয়ে তো আমি: সাঈদ খোকন

বিএনপি জোট সিটি নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগ করে এলেও ভিন্ন কথা বলছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন।

কাজী মোবারক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2015, 04:25 AM
Updated : 20 April 2015, 04:25 AM

খালেদা জিয়া বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর জন্য ভোট চেয়ে বেড়ালেও প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় বিধি-নিষেধের কারণে সাঈদ খোকনের নেত্রী শেখ হাসিনা নামতে পারছেন না তার পক্ষে প্রচারে।

“সে দিক দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে তো আমি পিছিয়ে আছি,” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

সরকারবিরোধী আন্দোলন শিথিল করে সিটি নির্বাচনে আসা বিএনপি নেতারা শুরু থেকে বলে আসছেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হয়নি। ফলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণে সাঈদ খোকনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে অপ্রকাশ্যে রয়েছেন। তার হয়ে প্রচার চালিয়ে যাওয়া স্ত্রী আফরোজা আব্বাসও বারবার একই অভিযোগ তুলছেন।

তবে সাঈদ খোকন বলেন, “নির্বাচন কমিশন শক্তভাবে দায়িত্ব পালন করছে। এত বড় নির্বাচনে এখনও মেজর কোনো ব্যাপার রেইজ করেনি। এটাই বড় ব্যাপার।”

ভোটের ব্যস্ততার মধ্যে রোববার পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারে এই মেয়র প্রার্থীর বাসায় নেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার বাবা ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের কথা, তার ছেলে হিসেবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার কথা।

দুই যুগ আগে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মেয়র নির্বাচনে মির্জা আব্বাসকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সাহচর্য পাওয়া মোহাম্মদ হানিফ। এবার সাঈদ খোকনের প্রতিদ্বন্দ্বীও সেই একই ব্যক্তি।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ঢাকা শহরে কয়েকবার মন্ত্রী ও মেয়র ছিলেন, কিন্তু কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি। এটা মানুষ দেখেছে।”

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের একমাত্র ছেলে সাইদ খোকন ১৯৮৭ সালে বাবার হাত ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে নামেন। এখন তিনি ঢাকা মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। 

“ধীরে ধীরে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে চলে আসলাম, ব্যাপারটা বাবা খেয়ালও করেনি। ১৯৯৯ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে অংশগ্রহণ, পরে ২০০৪ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।”

মেয়র হওয়ার চিন্তাটা কিভাবে এল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় বাবা মারাত্মক আহত হন, পরে মারা গেলে ঢাকার মানুষের মাঝে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। তখন থেকে এলাকাবাসী ও ঢাকার মানুষের উৎসাহের কারণে ধীরে ধীরে আমার মধ্যে মেয়র হওয়ার স্বপ্নটা চলে আসে।”

ভোটপ্রার্থী হওয়ার আগে নাগরিকদের পক্ষে কী ভূমিকা রেখেছেন- প্রশ্ন করা হলে খোকন বলেন, “২০০৫ সালে বিএনপি সমর্থিত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময় হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় সম্পূর্ণ আমার তত্ত্বাবধানে  অযৌক্তিক ট্যাক্সবৃদ্ধি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে সফল হয়েছি। ”

মেয়র হলে নাগরিক সমস্যা সমাধানে কী করবেন- তাও উঠে আসে এই ভোটপ্রার্থীর সাক্ষাৎকারে, যিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে যানজট নিরসনকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন।

খেলার মাঠ, যানজট, ফুটপাত, হকার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সাধারণ নাগরিক সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, “এগুলো সমাধান করা খুবই সহজ। উদ্যোগের অভাব, শুধু একটু নজর দিলেই এগুলো সমাধান করা সম্ভব।

“মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারলে সবই সম্ভব। তবে যানজট নিরসন করাই হবে আমার প্রধান চ্যালেঞ্জ।”

নির্বাচিত হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান, এনজিও ও জনসাধারণের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে ‘ঢাকা ডায়লগ’ এর উদ্যোগ এবং ‘হেল্প ডেস্ক’ চালুর প্রতিশ্রুতি দেন সাঈদ খোকন।

সিটি করপোরেশনের বর্তমান অবস্থার মূল্যায়ন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সমস্যাসঙ্কুল। এটাকে ঠিক করতে হবে।”

“আমি তরুণ, উদ্যমী, আমার মধ্যে কাজের স্পৃহা আছে , আমি পারব; আমাকে একবার সুযোগ দিলে মানুষের আশা পূরণ করব,” জয়ের বিষয়ে নিজের আশাবাদ প্রকাশ করে তিনি।