যাবজ্জীবনের বিধান রেখে ফরমালিন আইন

লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন বা মজুদ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৫’ সংসদে পাস হয়েছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2015, 12:08 PM
Updated : 16 Feb 2015, 12:37 PM

এ আইন কার্যকর হলে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করা যাবে। ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হবে লাইসেন্স। যারা লাইসেন্স পাবেন, তারাও চাওয়া মাত্র কর্তৃপক্ষকে ফরমালিন কেনাবেচার হিসাব দেখাতে বাধ্য থাকবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সোমবার জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

ফর্মালিন হলো ফর্মালডিহাইডের একটি জলীয় দ্রবণ যা টেক্সটাইল, প্লাস্টিক, কাগজ ও রঙ শিল্প এবং মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। এই দ্রবণ মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছ, শাকসবজি ও ফল দীর্ঘ সময় তাজা দেখাতে ফরমালিন ব্যবহার করেন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, “আইনটি হলে ফরমালিন ব্যবহার ও ব্যবসা কার্যক্রম আইনি কাঠামোর আওতায় আসবে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে যে সব কোম্পানি ফরমালিন ও ফরমালিন জাতীয় দ্রব্য বিপণন করবে তাদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমাদনি, উৎপাদন বা মজুদ করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও  ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে।

লাইসেন্সের শর্ত ভাঙলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন পরিবহন করলে ২ বছর থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ থেকে তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।

ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়- এমন যন্ত্রপাতি রাখলেও দণ্ডের বিধান রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে ২ বছর থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।

ফরমালিন, ফরমালডিহাইড, প্যারাফরমালডিহাইড বা এর যে কোনো মাত্রার সলিউশন বা দ্রবণ এবং সরকার নির্ধারিত ফরমালিন উৎপন্নকারী অন্য কোনো রাসায়নিকের ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য হবে।

লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানে পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি চালাতে পারবে কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান শর্ত ভাঙলে লাইসেন্স বাতিলও করা যাবে।

লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন বা মজুদ এবং শর্ত ভাঙার অপরাধগুলো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত অন্যান্য অপরাধ প্রথম শ্রেণির হাকিম আদালতেও বিচার করা যাবে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতও এর বিচার করতে পারবে।

গত ২১ জানুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন বাণিজ্য মন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার পর তা পাসের জন্য তোলা হয়।