সাক্ষ্য দিয়ে ফিরলেন ফেলানীর বাবা

বিএসএফের আদালতে ফেলানী খাতুন হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচারের সাক্ষ্য দিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন বাংলাদেশি এই কিশোরীর বাবা নুরুল ইসলাম।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2014, 06:48 PM
Updated : 17 Nov 2014, 06:50 PM

সোমবার রাতে তার সঙ্গে ফিরেছেন ৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এটিএম হেমায়েতুল ইসলাম এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকনও।

রাত সাড়ে আটটায় ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে তারা লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে ঢোকেন।

অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের কুচবিহার জেলার বিএসএফের সেক্টর সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ফেলানীর বাবার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন সাত সদস্যের বিচারক প্যানেল।

বিচারক, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। জেরার উত্তরে নুরুল ইসলাম সব ঠিকঠাক বলেছেন বলে আব্রাহাম লিংকন জানান।

“ফেলানীর বাবা আদালতকে বলেছেন, আমি অনেক দিন ভারতের নিমক খেয়েছি। তাই এই দেশের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে।”

ফেলানী হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষও আদালতে ছিলেন। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় তার গুলিতেই ফেলানী নিহত হন বলে অভিযোগ।

আদালতে ফেলানীর বাবাকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি ও ফেলানীর মা ভারতে ছিলেন কি না? ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ফেলানীকে গুলি করতে তিনি (বাবা) দেখেছিলেন কি না?

নুরুল ইসলাম বলেন, “অনেক প্রশ্ন করেছে সব উত্তর দিয়েছি। আমার চোখের সামনে ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে, তাও বলেছি।

“আদালতে উপস্থিত ঘাতক অমিয় ঘোষকে আমি চিনতে পেরেছি। এরপরও ন্যায়বিচার না পেলে খুব কষ্ট পাব। আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে না।”

আব্রাহাম লিংকন বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে এই আদালতের কাজ শেষ। এখন রায়ের অপেক্ষা।”

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবার সঙ্গে বাংলাদেশে ঢোকার সময় ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে কাছ থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।

কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশের ছবি প্রকাশ পেলে তা নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক হইচই হয়।

ঘটনার দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ অগাস্ট ভারতের কুচবিহার জেলার সোনারী এলাকায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়। তবে ওই বিচারে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ খালাস পান।

ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে ফেলানী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে আবেদন করেন নুরুল ইসলাম।

যার পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং তাতে সাক্ষ্য দিতে রোববার ভারতে যান ফেলানীর বাবাসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। 

বিএসএফের আসাম ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (কমিউনিকেশনস) সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারকের বিশেষ আদালতে এ পুনর্বিচার চলছে।