এনআইএর তথ্য উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়: স্বরাষ্ট্র সচিব

ভারত ও বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) যেসব তথ্য দিয়েছেন তা ‘উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2014, 10:34 AM
Updated : 17 Nov 2014, 01:30 PM

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের তদন্তের দায়িত্বে থাকা এনআইএর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে  সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক পরিচিতিমূলক বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি। 

পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারাও সংক্ষিপ্ত এই পরিচিতি সভায় অংশ নেন।

এনআইএর মহাপরিচালক শারদ কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দল ঢাকা পৌঁছানোর পর দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসে। সংস্থার উপ মহা পরিদর্শক সজীব ফরিদও এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, “ভারতের সন্দেহ, ভারত ও বাংলাদেশ- দুই দেশেই দুষ্কৃতীরা রয়েছে। এদের খুঁজে বের করা দরকার।

“তাদের এই আবেদন উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয় বলে আমরা মনে করি।”

গত ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে দুজন নিহত হওয়ার পর তদন্তে নেমে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সম্পৃক্ততার কথা জানায় এনআইএ।

সেই সঙ্গে আন্তঃদেশীয় একটি জঙ্গি নেটওয়ার্কের তথ্য পাওয়ার কথাও জানায় সংস্থাটি। তারা দাবি করে, বাংলাদেশের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে হত্যারও ছক কষছে জঙ্গিরা।

এর পরপরই বাংলাদেশে তদন্ত চালানোর বিষয়টি মাথায় আনে এনআইএ। বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের আসার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

সচিব বলেন, “দুই দেশই মনে করে, আমাদের ভূখণ্ড দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আমাদের সঙ্গে স্বল্প সসময়ের বৈঠক হয়েছে। তাদের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য আমাদের ছয় সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছ। তারাই বিস্তারিত আলোচনা করবেন।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত এই কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানান সচিব। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই পরিচিতি বৈঠকের পর র‌্যাব ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন এনআইএর প্রতিনিধিরা।

সচিব ও অতিরিক্ত সচিব ছাড়াও পুলিশ মহাপরিদর্শক হাছান মাহমুদ খন্দকার, র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই)  মহাপরিচালক সামছুল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) প্রধান আকবর  হোসেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহা পরিচালক আজিজ আহমেদ, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান জাবেদ পাটোয়ারি, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোখলেসুর রহমান, র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান আবুল কালাম আজাদ, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম পরিচিতি সভায় অংশ নেন।

বর্ধমান বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করছে এনআইএ, যার মধ্যে শেখ রহতুল্লাহ সাজিদসহ কয়েকজন বাংলাদেশিও রয়েছে বলে তাদের দাবি।

গত ৮ নভেম্বর সাজিদকে কলকাতায় গ্রেপ্তারের পর বলা হয়, ৪০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি জেএমবির কমান্ডার। তার বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের ফরাজীকান্দায়।

সাজিদ নামে কাউকে সনাক্ত করা না গেলেও মাসুম নামে এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশের র্যাইব। ধারণা করা হচ্ছে, এই মাসুমই ভারতে গ্রেপ্তার সাজিদ। মাসুমের এক ভাইকে গত ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।