গোপালগঞ্জে অন্যের জমি দখল করে বসবাস

গোপালগঞ্জে এক নারীর সম্পত্তি জবর দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে আরেকজন।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2014, 11:50 AM
Updated : 15 Sept 2014, 12:08 PM

বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানোর পর তদন্তে অভিযোগকারীর পক্ষে প্রতিবিদন দেয়া হয়। এরপর স্থানীয়ভাবে সালিশেও দখলকারীকে উঠে যেতে বলা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি।

গোপালগঞ্জ সদরের বৌলতলী গ্রামের ওই সম্পত্তির মালিক অমরেশ সরকারের স্ত্রী শান্তিলতা সরকার।

শান্তিলতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রামের মোকলেছ মোল্লার স্ত্রী পলি বেগম তার ৫৫/৫৯ নং বৌলতলী মৌজার ১১৭৪ দাগের ১৫ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখল করেছেন। সেখানে বসতঘর তুলে স্বামী, সন্তান ও পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।

“ঘর তুলতে বাধা দিলে তার লোকজন আমাকে খুন জখমসহ দেশ থেকে বিতারিত করার হুমকি দেন।”

শান্তিলতা জানান, জমি দখল মুক্ত করতে গত ১ অগাস্ট তিনি গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেন। পুলিশ সুপার গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেন।

তদন্ত শেষে ১৯ অগাস্ট ডিবি পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে ওই সম্পত্তি আশালতার বলে জানানো হয়।

এরপর ওই সম্পত্তি থেকে পলি বেগমকে উচ্ছেদের জন্য পাঁচ গ্রামের গণ্যমান্য বক্তিরা বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়িতে গত ২৬ অগাস্ট সালিশ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পলি বেগমকে ওই জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়।

জায়গা থেকে ৭ দিনের মধ্যে ঘর সরিয়ে নেয়ার জন্য মানবিক কারণে পলিকে ৭৫ হাজার টকা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় সালিশে। আশালতা ৭৫ হাজার টাকা বৌলতলী ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিলেও পলি বেগম চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেননি।

এ ব্যাপারে বৌলতলী ইউপি চেয়ারম্যান সুকান্ত বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পলি বেগম অবৈধভাবে জোর করে শান্তিলতার জায়গা দখল করে বসতঘর তুলে বসবাস করছেন। ডিবি পুলিশ প্রতিবেদনে এ জায়গার মালিক শান্তিলতার বলে উল্লেখ করেছে।

তারপরও তাকে ওই জায়গা থেকে ঘর সরিয়ে নিতে পাঁচ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠক করে ৭৫ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু পলি বেগম সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘর সরিয়ে নেননি।

ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ ডিবি পুলিশের এএসআই  আনিজুল শেখ বলেন, ওই জমির কোনো কাগজপত্র পলি বেগম দেখাতে পারেননি। সমস্ত কাগজপত্র পর্যলোচনা করে দেখা গেছে শান্তিলতা সরকারই ৫৫/৫৯ নং বৌলতলী মৌজার ১১৭৪ দাগের সমস্ত সম্পত্তির প্রকৃত মালিক।

এএসআই  আনিজুল শেখ জানান, পলি বেগমের ভাগ্নে সৌদি আরব প্রবাসী হানিফ কাজী ওই দাগের কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেন। সালিশ বৈঠকে তিনি পলি বেগমকে ওই সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদের দায়িত্ব নেন। কিন্তু খালাকে সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ না করে তিনি সৌদি আরব চলে যান।

পলি বেগম বলেন, “এ জায়গার আমার কোনো কাগজপত্র নেই। আমি আমার ভাগ্নে হানিফ কাজীর জায়গায় বসবাস করছি। আমি কারো জায়গা দখল করিনি। সালিশ বৈঠকে আমার ভাগ্নের জায়গার দলিল না দেখেই রায় দেয়া হয়েছে। এ কারণে আমি সালিশ মানিনি।”

বৌলতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. আবু নাঈম বলেন, পুলিশ প্রতিবেদন পক্ষে থাকার পরও স্থানীয়রা মানবিক কারণে পলি বেগমকে জায়গা থেকে ৭ দিনের মধ্যে ঘর সরিয়ে নেয়ার জন্য সালিশ বৈঠকে ৭৫ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পলি বেগম এখনো ঘর সরিয়ে নেননি।