বেতনের দাবিতে কারখানায় রাতযাপন

দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি দিয়ে কারখানায় রাতযাপন করেছেন।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2014, 05:13 AM
Updated : 23 July 2014, 10:15 AM

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের এএসপি মো. মোশারফ হোসেন জানান, মঙ্গলবার বিকাল থেকে কারখানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন বাসনসড়ক এলাকার ট্রেডমার্ক ফ্যাশনের শ্রমিকরা।

বুধবার দুপুর পর্যন্ত কর্মবিরতি ও কারখানায় অবস্থান অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ওই কারখানার শ্রমিকরা ঈদের আগেই জুন ও জুলাই মাসের বেতনসহ ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার বিকালে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেয়ার কথা ছিল। তবে কারখানার মালিক বেতন না দিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন।

পাওনা বেতন ও ঈদ বোনাস মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরও না পাওয়ায় রাতে শ্রমিকরা কারখানায় অবস্থান নেন এবং বুধবার কর্মবিরতি দিয়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন। 

এএসপি মোশারফ বলেন, "এ ব্যাপারে কারখানা মালিকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।"

তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারখানায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান তিনি।

কারখানার অপারেটর তাজরিনা বেগম বলেন, “এ বছরের জুন, জুলাই মাসের বেতন এবং ঈদ বোনাস মঙ্গলবার পরিশোধের তারিখ  দিলেও তা পরিশোধ করেননি কর্তৃপক্ষ। ফলে আমরা বেতন-বোনাস পাওয়ার আশায় মঙ্গলবার বিকালে থেকে কর্মবিরতি শুরু করি। রাতে মেঝেতে, টেবিলে ও সিঁড়িতে ঘুমিয়ে এবং নির্ঘুম রাত যাপন করেছি। দুপুর ১টা পর্যন্ত টাকা পাওয়ার কোন খবর আমরা পাইনি।”

একই কথা জানান কারখানার হেলপার ফাতেমা বেগম ও আয়রনম্যান সোহরাব হোসেনের। সন্তান-সন্ততি নিয়ে ঈদ কীভাবে করবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।

কারখানার  হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “স্টাফদের মে থেকে জুলাই পর্যন্ত বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতন চাইলে মালিক বলেন হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই, লোন নিয়ে বেতনের ব্যবস্থা করতে হবে। জুন ক্লোজিংয়ের ঝামেলায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারিনি।”

বাংলাদেশ গামেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুল ইসলাম মাসুদ বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ  শ্রমিক প্রতিনিধি ও আমাদের সঙ্গে লিখিত অঙ্গীকার দেয় যে, ২১ জুলাই তারা জুন মাসের পুরো এবং জুলাই মাসের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করবে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কথা রাখেনি। তাই শ্রমিকরা কর্মবিরতি করে আন্দোলন শুরু করেছে।

কারখানার উৎপাদন পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “মঙ্গলবার ইফতারের আগে সর্বশেষ কারখানার মালিক জাহিদ হোসাইন জাকিরের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেন দেখছি কী করা যায়। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাচ্ছি।”