“লাফালাফি করা, সাংবাদিকদের হাতে নেয়ার, হাতে তালি দেয়া, মিডিয়াকে উপস্থিত করাই যদি মূল উদ্দেশ্য হয়; তাহলে কিন্তু প্রতিদিনই আমরা ব্রিজ-কালভার্ট দেখতে যাইতে পারি।”
নতুন সরকারে শপথ নেয়ার পর নিজের পুরনো দপ্তর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সোমবার এক সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী একথা বলার সময় নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত যে ওবায়দুল কাদেরের দিকে, তা স্পষ্ট।
সোমবার সভায় আশরাফ এই বক্তব্য দেয়ার পর নিজেও হেসে ফেলেন।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকেই প্রায়ই দেখা যায় সেতু, কালভার্ট, বাস-রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে।
শেখ হাসিনার গত সরকারের শেষ দিকে মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাদেরকে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নিজেকেই নিতে দেখা যায়।
বিআরটিসির গাড়ির চালকদেরও সড়কে থামিয়ে শাসাতে যেমন দেখা গেছে কাদেরকে; তেমনি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার সময় রেলকর্মীকে চড় মারতেও দেখা গেছে তাকে।
আশরাফ বলেন, “প্রকল্প উদ্বোধন, ওয়াসার যে কর্মকর্তা আছে, তেল চুরি করে কি না? শেভরনের বিদ্যুৎ চুরি করে কি না? কেউ মাটি চুরি করে কি না?- এগুলো নিয়ে যদি আমি ব্যস্ত থাকি, তাহলে কিন্তু মন্ত্রীর...
“মন্ত্রীর কাজটা কিন্তু কোন পাম্প থেকে কে তেল চুরি করছে, তা দেখা নয়। তেল চুরির জন্য মন্ত্রী রেসপন্সিবল নয়। কোন কর্মচারী পাম্প থেকে তেল চুরি করছে...তার জন্য স্পেসিফিক কর্মকর্তা রেসপনসিবল।”
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তার পরিবেশ তৈরি করার কাজটি মন্ত্রীর বলে স্মরণ করিয়ে দেন সরকারি দলের প্রভাবশালী এই নেতা।
মন্ত্রণালয়ের ওই অনুষ্ঠানে আশরাফের সঙ্গে নতুন প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমি ক্ষুদ্র মানুষ, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বড় দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
“যে দলই করি দলবাজি করতে আসিনি। সামান্যতম দুর্নীতি ছাড়াই সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করব।”
আশরাফকে উদ্দেশ করে জাতীয় পার্টির নেতা মশিউর বলেন, “আপনি কোন দলের, আমি কোন দলের, তা দেখার বিষয় নয়। আমি শিখতে এসেছি, আপনি (আশরাফ) শেখাবেন।”
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সহায়তাও প্রত্যাশা করেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের উত্তরসূরি মশিউর।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সচিব এম এ কাদের সরকার স্বাগত বক্তব্য দেন। আর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু আলম শহীদ খান গত পাঁচ বছরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আশরাফের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আগামী ১৭ জানুয়ারি শহীদ খান অবসরে যাচ্ছেন, গত ২৮ ডিসেম্বর তার অবসর-উত্তর ছুটি (পিআরএল) মঞ্জুর হয়েছে।