ভারত সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চাইলেন ফেলানীর বাবা

ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সেদেশের সরকার ও জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তার বাবা নুরুল ইসলাম।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2013, 10:35 AM
Updated : 11 Sept 2013, 05:53 PM

বুধবার ই-মেইলে ভারতীয় হাই কমিশনে পাঠানো এই আবেদনটি পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) এবং ঢাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রকেও পাঠানো হয়েছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ টিপু সুলতান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের কুচবিহারের ১৮১ বিএসএফ সদর দপ্তরে বিশেষ আদালত অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয়। এরপর রায় অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রায়ের কপি পাঠানো হয়।

বিচারের রায় হওয়ার পর একে তামাশা বলে আখ্যায়িত করেছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।

টিপু সুলতান বলেন, আবেদনে নুরুল ইসলাম অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণে ভারত সরকার তথা ভারতীয় জনগণকে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের কাছে আমার একটিই দাবি আমার মেয়ের হত্যার ন্যায় বিচার। চাই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ। এ জন্যই ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সেদেশের সরকার এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে ই-মেইলে আবেদন করেছি।”

“কিশোরী মেয়েকে চোখের সামনে নির্মমভাবে খুন হতে দেখেছি। পানি পানি করে চিৎকার করলেও অস্ত্রধারী বিএসএফের ভয়ে কাছে যেতে পারিনি,” বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বিএসএফের গুলি খেয়ে ফেলানীর মৃত্যু হল, অথচ ‘ঘাতক অমিয় ঘোষ’ ভারতের আদালতে নির্দোষ। এটা মেনে নেয়া যায় না।

নুরুল ইসলাম যতোদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন ফেলানী হত্যার বিচারের দাবি করবেন বলে জানান।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামের কিশোরী ফেলানী বাবার সঙ্গে বাড়ি আসছিল ভারত থেকে। কিছুদিন পর তার বিয়ের কথা ছিল। অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলেছিল ৫ ঘণ্টা। এ ছবি সংবলিত সংবাদ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া জাগায়।

গত ১৩ অগাস্ট ভারতের কুচবিহারের সোনারী এলাকায় বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়।

১৯ অগাস্ট আদালতে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ সাক্ষ্য দেন। এ বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন।