সংলাপ শুরু: ইসিকে আস্থা অর্জনের পরামর্শ নাগরিক সমাজের

নির্বাচনকে ভয়মুক্ত ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের তাগিদ দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

মঈনুল হক চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2017, 11:19 AM
Updated : 31 July 2017, 07:04 PM

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন সংস্কার, সীমানা পুনঃনির্ধারণসহ ঘোষিত রোডম্যাপ নিয়ে নির্বাচনের কমিশনের সঙ্গে সংলাপে তারা এ মত তুলে ধরেন।

সংলাপে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করা, সেনা মোতায়েন এবং ‘না’ ভোটের বিধান চালু, নির্বাচনকালীন সরকারের ধরনসহ বিভিন্ন বিষয়ে মত দেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

সংলাপের পর সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা থেকে উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা নেবেন তারা।

ধারাবাহিক সংলাপের শুরুর দিন সোমবার সকাল ১১টায় ‘সুশীল সমাজের’ সঙ্গে বৈঠকে বসেন সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনাররা, যাদের হাতে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ভার।

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এই সংলাপে আমন্ত্রিত ৫৯ জনের মধ্যে অর্ধেকই উপস্থিত ছিলেন না।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ছবি তোলার অনুমতি দেওয়া হলেও মতবিনিময় সভায় কাউকে থাকতে দেওয়া হয়নি। বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন সংলাপ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেন, “আলোচনায় মূল ফোকাসটা দেওয়া হয়েছে- অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে। আমরা যেন সবার অংশগ্রহণে ভোট দেখতে পাই।

“অনেকে বলেছে, তত্ত্বাধায়ক সরকার আনা হোক;  আমরা বলছি- এটা আনা সম্ভব না, এটা ডেড ইস্যু। সহায়ক সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকার। পার্লামেন্টে ভেঙে দেওয়ার কথা তুলেছে, আমরা বলেছি ভেঙে দেওয়া যাবে না।”

সেনাবাহিনীকে নির্বাচনী কাজে লাগানোর কথাও এসেছে জানিয়ে ওয়ালিউর বলেন, “আমরা বলেছি, তাদের ম্যাজিস্ট্রেশিয়াল পাওয়ার দেওয়া ঠিক হবে না; আর্মিকে ভোটে আনার দরকার নাই।

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি ফিরিয়ে আনা, নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। 

ওয়ালিউর বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে একটি গোষ্ঠী সমালোচিত বিষয়গুলোকে’ ঘুরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, “সব দলকে ভোটে আনতে হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে আইনে ঘাটতি থাকলে তার ব্যবস্থা নেবেন। নাগরিক প্রতিনিধিরা সঙ্গে থাকবেন।”

আগামীতে এক কোটি প্রবাসী নাগরিককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, “ভোটের সময় সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারলেই জনগণ সন্তুষ্ট থাকবে। এক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। ইসি সঠিকভাবে কাজ করলে কোনো রাজনৈতিক দলই তাদের পছন্দ করবে না। তবে জনগণকে তারা পাশে পাবে।”

বিলুপ্ত স্থানীয় সরকার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, “নির্বাচন হচ্ছে সুপার পলিটিক্যাল ইভেন্ট। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দলগুলো ফল ঘরে তোলে। কিন্তু এখনকার সঙ্কট দূর করে নির্বাচনী কৌশলে আসতে হবে।”

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে দশম সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের বেশ কয়েকটি নির্বাচন ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। ফলে নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় আস্থা অর্জনের কথাই ঘুরেফিরে এসেছে।

সিপিডির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, “ইসিকে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। দৃঢ় স্বাধীন ভূমিকা নিয়ে মানুষের কাছে তা দৃশ্যমান করতে হবে এবং প্রমাণ করতে হবে।

“নির্বাচনী আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনেক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। প্রশাসন কীভাবে নিরপেক্ষ থাকবে এবং তাদের নিরপেক্ষ রাখতে ইসি কীভাবে ভূমিকা রাখবে, তা দেখতে হবে।

‘তফসিল ঘোষণার আগে ইসির করার কিছু নেই’- এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন দেবপ্রিয়।

“এখন থেকে ইসির অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে।”

ধর্মকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার না করা, না ভোট চালুর বিষয়ে আলোচনায় ঐকমত্য হয়েছে বলে জানান তিনি। সেনাবাহিনীকে নিয়ে দুই ধরনের মতই আলোচনায় এসেছে বলে তিনি জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “ইসিকে তার ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে হবে, বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। কমিশনকে সক্রিয় হতে হবে। সকল দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে হবে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট ও ভোটারের মনে যে ভীতি রয়েছে তা দূর করতে হবে- এটা নিয়ে কারো দ্বিমত ছিল না।”

নিজে পক্ষে থাকলেও সাবেক আমলাদের অনেকে সেনাবাহিনীকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় না রাখার কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।

“সহায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা উঠলেও অনেকে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়েছেন। সেনাবাহিনী মোতায়েন, প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো, ভয়ভীতি-শঙ্কা দূর করতে ইসি আসলে কোনো পদক্ষেপ নেয় কি না, সবার দেখার বিষয় হয়ে রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এ নিয়ে ইসির কথা বলা উচিত নয়। আমাদেরও কথা বলা উচিত নয় বলে কেউ কেউ বলেছেন। ইসি চেষ্টা করেছে সবার বক্তব্য শোনার।”

ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা যায় কি না, তা বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে আসিফ নজরুল জানান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে নিজস্ব লোকও হতে পারে; অথবা ইসির চিহ্নিত জেলা প্রশাসকও হতে পারে। এ কর্মকর্তা নিয়োগেও সক্রিয় থাকতে হবে। ইসির সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় না বা প্রতিকার নেই- এটাতে সক্ষমতা প্রমাণ হয় না। অভিযোগ আমলে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে অনেক অনিয়ম রোধ হত।”

নির্বাচনকে ঘিরে ভোটার, প্রার্থী, প্রস্তাবক-সমর্থক, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা আতঙ্কে থাকেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ভয়মুক্ত নির্বাচন করতে সেনা মোতায়েনের বিষয়টা গুরুত্ব পেয়েছে। তাদের দৃশ্যমানতা গুরুত্ব পেয়েছে। সেনা মোতায়েন দৃশ্যমান করতে হবে।”

নির্বাচনের সময় কোন ধরনের সরকার থাকবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার বলে মনে করেন হোসেন জিল্লুর।

“নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ইসির বিষয় নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে সংলাপ হওয়া দরকার- নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে বর্তমান সরকার থাকবে, না কি অন্যরা থাকবে।”

নির্বাচনের সময়ে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পক্ষে অবস্থান জানান হোসেন জিল্লুর। ওই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের উপর ইসির কর্তৃত্বটা রাখা খুবই জরুরি বলেও মম্তব্য করেন তিনি।

যেসব সুপারিশ উঠে এসেছে সংলাপে

> অনলাইনে মনোনয়নপত্র চালু

> ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করা যায় কিনা

> ভোটার স্লিপ ইসির উদ্যোগে বিতরণ

> নির্বাচনকালীন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ইসির নিয়ন্ত্রণে

> নির্বাচনী ব্যয় কমানো, তদারকি কমিটি করা

> সোশ্যাল মিডিয়া তদারকি

> ভোটকক্ষে কোনো মোবাইল নয়

> গণমাধ্যমে প্রার্থী ও দল নিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন রোধে আচরণবিধিতে যুক্ত করা

> নির্বাচনী ব্যয় ও প্রচারণা করিয়ে দেবে ইসি ও সরকার

> সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোট

> প্রবাসী কোটি ভোটারকে তালিকাভুক্ত ও ভোটাধিকার প্রয়োগে ব্যবস্থা

সংলাপে যারা ছিলেন

হোসেন জিল্লুর রহমান, এম এম আকাশ, খুশি কবির, মাহবুবা নাসরীন, ইফতেখারুজ্জামান, মহিউদ্দিন আহমদ, মো. আবদুল লতিফ মণ্ডল, দিলারা চৌধুরী, সলিমুল্লাহ খান, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, রাশেদা কে চৌধুরী, মুহম্মদ আবুল কাশেম, আলী ইমাম মজুমদার, তারেক শামসুর রেহমান, ওয়ালিউর রহমান, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সাইফুল হক, সঞ্জীব দ্রং, মিজানুর রহমান খান, আবুল হাসান চৌধুরী, এ এফ এম গোলাম হোসেন, মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ফিলীপ গায়েন, রোকেয়া আফজাল রহমান, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, আসিফ নজরুল, তাসনিম সিদ্দিকী, জহুরুল আলম, সা’দত হুসাইন, অজয় রায় ও শারমিন মুরশিদ।

সিইসির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বৈঠকে ছিলেন।

যারা অনুপস্থিত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, আকবর আলী খান, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ও মির্জা আজিজুল ইসলাম, সাংবা;কি তোয়াব খান, অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, শাহদীন মালিক, বিচারপতি গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক আবুল বারাকাত, কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন্সের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ুন কবির, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল হাফিজ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অবসরপ্রাপ্ত মেজর এস এম শামসুল আরেফিন, চ্যানেল আই’র শাইখ সিরাজ, বিএসএস চেয়ারম্যান রাহাত খান, এ এইচ এম কাশেম, দৈনিক ইত্তেফাকের তাসমীমা হোসেন।

ইসির জনসংযোগ শাখার কর্মকর্তারা জানান, অনুপস্থিত কয়েকজন লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়ে পাঠিয়েছেন।

রবাহুত দুজন

সংলাপে আমন্ত্রিত না হয়েও খবর শুনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া দুজনকে বের করে দেওয়া হয়। মতবিনিময় সভার শুরুতে কবি ও নতুন রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচয় দেন লুবনা হাশেম নামে একজন। আলী হাসান আসকারী নামে আরেকজনও উপস্থিত ছিলেন সভায়। তারা উপস্থিতির তালিকায় স্বাক্ষরও করেন। বিষয়টি ধরতে পেরে সাড়ে ১১টার দিকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। তারা সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপের আয়োজনের বিষয়টি দেখেই ইসিতে আসেন তারা।

সমঝোতা করেই নির্বাচন: সিইসি

প্রথম দিনের আলোচনার পর সিইসি নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা থেকে উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“আমাদের ধারাবাহিক আলোচনা হবে। সবার বক্তব্য শুনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন করব। সেখান থেকে যেসব উপাদান.. সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করা প্রয়োজন, সেগুলো আমরা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় চিন্তা করব।”

নাগরিক সমাজে প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে নূরুল হুদা বলেন, “তাদেরকে আমরা আশ্বস্ত করেছি- আইনের আলোকে নির্বাচন পরিচালনার যে ক্ষমতা ইসির সাংবিধানিকভাবে রয়েছে, তা পরিপূর্ণভাবে করা হবে।”

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে সংলাপ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত কমিশনের সব কাজ নিরপেক্ষভাবে করা হয়েছে। বলা যায়- আস্থা অর্জনের কাজগুলো কমিশনে করে যাচ্ছে।

সিইসি জানান, ভোটে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি যেমন অনেকে তুলেছেন, তেমনি সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিলে পুলিশ, বিজিবি ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর অন্যদের ক্ষমতা খর্ব হবে বলেও মত এসেছে।

সংলাপের মাধ্যমে সরকার ও রাজনৈতিক দলের উপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সিইসি। তবে সংলাপের সুপারিশ নিয়ে সরকার চাপে থাকবে কি না, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

“রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে অনেকে বলেছেন, এসব ইসির এখতিয়ারভুক্ত না। তবে সবার কথা প্রতিবেদন আকারে সরকারের কাছে পাঠাব, এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও পাঠাব।”

সংলাপের মাধ্যমে বিএনপিকে আস্থায় আনা কিংবা সরকারকে চাপে রাখা হবে কি না- এ প্রশ্নে নূরুল হুদা বলেন, “আমার তো মনে হয়, সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছবে সুশীল সমাজ কী ভাবেন; যারা বিরোধী দলে বা সংসদের বাইরে রয়েছে তাদের কাছেও তা পৌঁছে যাবে।

“আমার মনে হয়, এতে তারা একটা সমঝোতায় আসতে পারবেন। আমরা ধারণা- এর মাধ্যমে একটা প্রভাব পড়বে; তবে বাধ্য করতে (সুশীল সমাজের চাওয়া বাস্তবায়ন) পারব কি না, জানি না।”