বাংলাদেশ

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের হাজিরার তালিকা চায় হাই কোর্ট

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মনিটরিং সেলের প্রধান ও সদস্য সচিবকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে কর্মস্থলে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে সরকারের গঠিত মনিটরিং সেলের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।

স্বাস্থ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি, সম্পাদক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মনিটরিং সেলের সভাপতি ও সদস্য সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

আইনজীবী হালিম পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে দুই সপ্তাহ আগে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট এ রিট আবেদন দায়ের করে।

“আজ সেটির প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দিয়েছে।”

এ আইনজীবী বলেন, “আবেদনে যে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দেশের সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি-অনুপস্থিতির তালিকা করে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা আকারে দাখিল করতে।”

আগামী ৭ মে পরবর্তী শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।

সরকারি হাসপাতালগুলো, বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতারগুলোতে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ বহুদিনের।

এ মাসেই দুইটি অনুষ্ঠানে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গত ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের নতুন পদ সৃষ্টি এবং নিয়োগ দেওয়ার পরও সেখানে তাদের সেবা পাওয়া যাচ্ছে না।

“যেখানে ৫০ বেডের একটা হাসপাতালে কমপক্ষে ১০ জন ডাক্তার থাকার কথা, কোথাও কোথাও একজন, কোথাও কোথাও খুব বেশি হলে চারজন। সেখানে কিন্তু ডাক্তার থাকে না। মানুষ তাহলে সেবা পাবে কিভাবে? এটা আমার প্রশ্ন,” বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন “পদ আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি। কিন্তু সেখানে আমরা ডাক্তার পাই না।”

পরদিন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলেন।

তিনি বলেন, “এমন এমনও জায়গা আছে, যেখানে অপারেশন থিয়েটার পড়ে আছে কিন্তু অপারেশন করবার মত ডাক্তারও নেই, সার্জন নেই, নার্স নেই; এরকম একটা অবস্থা। আমরা শুধু প্রতিষ্ঠান করে যাব, আর সেগুলো অবহেলিত থেকে যাবে এটা কিন্তু হতে পারে না।”

SCROLL FOR NEXT