১০৯ কোটি টাকার বাঁধে ছয়বার ধস

সিরাজগঞ্জে শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চৌহালী উপজেলা রক্ষা বাঁধে দুই মাসে ছয় বার ধস হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2017, 07:01 AM
Updated : 8 July 2017, 12:45 PM

শনিবার সকালে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২৪ ঘণ্টা আগে ছিল ৭ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ চৌহালী শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। মাটি ফেলে জিও টেক্স ও ব্লক দিয়ে তৈরি করা হয় বাঁধের অস্থায়ী অংশ। এর উপর পাথরের ড্রেসিং শেষে সিসি ব্লক বিছানো হয়।

এ বছরের জুলাইয়ে দুবছর মেয়াদী এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

গত ২ মে জাজুরিয়া খগেনের ঘাট অংশে প্রথম ধস নামে। এ সময় ১০০ মিটারের মতো ধসে যায়।

গত শুক্রবার রাতে সর্বশেষ ৬০ থেকে ৭০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। এর মধ্যে ২৩ জুন ও ৩ জুলাইসহ আরও চারবার ভাঙে।

এদিকে, এ বাঁধে বারবার ধস নামার জন্য স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বলেন, পানি বাড়ার কারণেই ১০৯ কোটি টাকায় নির্মাণাধীন বাঁধটিতে ষষ্ঠবারের মতো ধস দেখা দিয়েছে।

“তাছাড়া এ এলাকার মাটির ধারণক্ষমতা কম। আর নদীর পানি বেড়ে তলদেশে ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কারণে ধস নামছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”

এ বিষয়ে বুয়েটের দুজন বিশেষজ্ঞ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকতার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে সিরাজ বলেন, কমিটি ধস এলাকা পরিদর্শন করে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করবে।

যমুনার চরে ২৭ ইউনিয়ন প্লাবিত

পানি বেড়ে যমুনার চরাঞ্চলের অন্তত ২৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। তবে কোথাও কোনো মানবিক সংকট সৃষ্টির খবর পাওয়া যায়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানান, “সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালি, কাজিপুর ও শাহজাদপুর উপজেলায় যমুনা চরের ২৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, তবে কোনো বাড়িঘরে এখনও পানি ঢোকেনি।”

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যমুনার পানি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর চাপ বাড়ছে।

“পানি গত ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপরে এসে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।”