তাদের দুজনকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান, দণ্ডবিধির ৪১৭ ধারায় প্রতারণার দায়ে এই সাজার রায় দিয়েছেন বিচারক।
রাগীব আলীর আইনজীবী এটিএম মাসুদ টিপু বলেন, “মামলার শুনানিতে রাগীব আলীর পক্ষে কোনো আইনজীবী অংশ নেননি। তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করছি না। তবে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতি করে তারাপুর চা বাগান দখল এবং সরকারের এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে গতবছর ১০ আগস্ট রাগীব আলী ও তার ছেলে পালিয়ে ভারতে চলে যান।
এরপর ৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের ছাতক প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গিয়াস উদ্দিন তালুকদার এই মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে বলা হয়, “তারাপুর চা বাগান সংক্রান্ত দুই মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে পলাতক রয়েছেন। কিন্তু পলাতক থাকা অবস্থায়ও তারা ‘দৈনিক সিলেটের ডাক’ পত্রিকা সম্পাদনা করে আসছেন।”
ওই সময় রাগীব আলী সিলেটের ডাক পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এবং আবদুল হাই সম্পাদক ছিলেন।
এজাহারে বলা হয়, “গত বছরের ১১ অগাস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই তাদের নাম যুক্ত করে দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশ করে প্রতারণার অপরাধ করেছেন।”
মামলার পর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। সমনের জবাব না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গতবছর ১২ নভেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে রাগীব আলীর ছেলে আব্দুল হাইকে গ্রেপ্তার করে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ। ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় লুকিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টার ২৪ নভেম্বর ভারতে গ্রেপ্তার হন রাগীব আলী।
ওই দিনই তাকে দেশে এনে কারাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় এ মামলার বিচার।
তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ৬ মার্চ আদালত রায়ের জন্য দিন ঠিক করে দেয়।
বৃহস্পতিবার রায়ের পর মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বচলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে। আমি রায়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট।”
রাগীব আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে হওয়া তিন মামলার মধ্যে এ নিয়ে দুটির রায় দিয়েছে আদালত।
এর মধ্যে স্মারক জালিয়াতির মামলায় রাগীব আলী ও আবদুল হাইয়ের চারটি ধারায় মোট ১৪ বছর কারাদণ্ড হয়েছে।
আর আত্মসাতের মামলার বিচার শেষে রায়ের পর্যায়ে এলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে তা ১৫ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে বলে সিলেটের হাকিম আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান।