‘এক বছরে বাসে আগুন-বোমায় নিহত ২৯৫’

অবরোধ-হরতালে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ, দুর্দশা এবং হতাহতের চিত্র তুলে ধরে রাজনৈতিক কর্মসূচির ধরন পাল্টানোর আহ্বান জানিয়েছে একটি সামাজিক সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2015, 04:21 PM
Updated : 21 Jan 2015, 04:30 PM

সংগঠনটি বলছে, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জ্বালাও পোড়াও থেকে পরিত্রাণে বিবদমান দলগুলোকেই উদ্যোগী হতে হবে।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণপরিবহন, যাত্রী নিয়ে রাজনীতি ও সহিংসতা প্রতিবেদন’ প্রকাশ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এ সময় গত এক বছরে রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে দুর্ভোগ, ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ওই আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেলন সাংবাদিকদের জানান, ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম, অনলাইন ও পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে পরিবহন ব্যবস্থায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পর্যবেক্ষণ করে তার সংগঠন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩  সালের ৫ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী এক বছরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সময় বাসে আগুন ও পেট্রোল বোমায় ২২২ জন যাত্রী ও ৭৩ জন চালক ও তার সহকারী দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। 

এ সময়ের মধ্যে ২৬ হাজার ৩৭৪টি যানবাহন ভাংচুর, এক হাজার ১৬২টি গাড়িতে আংশিক অগ্নিসংযোগ করা হয়। সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে ৭৮১টি গাড়ি।

২১ বার রেলে লাইনের ফিসপ্লেট খুলে নাশকতা চালানো হয়েছে। নৌপথে নাশকতার চেষ্টা করা হয় তিনবার।

এসব নাশকতায় সারাদেশে আহত হন তিন লাখ ৭৩ হাজার ৪২৫ জন যাত্রী।

এছাড়া চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত হরতাল অবরোধেল কবলে পড়ে ১৮ জন যাত্রী ও ১১ জন পরিবহন চালক ও চালকের সহকারী নিহত হয়েছেন।

এই সময়ের মধ্যে ৫৭২টি যানবাহনে আংশিক অগ্নিসংযোগ, ৬৫টি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে ৩২৩১টি যানবাহন।

সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির ৫০টি বাসে অগ্নিসংযোগ ও ৩১৭টি ভাংচুর করা হয়েছে। চার দফায় রেলে নাশকতা চালানো হয়েছে।

আহত হয়েছেন ৫৫ হাজার ২১৭ জন যাত্রী।

সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের জিম্মি করে রাজনীতি চলছে। এতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত-শঙ্কিত।

তিনি আরও বলেন, যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে তারা সরকার সমর্থক কিংবা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী নয়, এরা নিতান্তই সাধারণ।

বিশ্বের সভ্য দেশগুলোতে রাজনীতির নামে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নাশকতার নজির না থাকার কথা তুলে ধরে সংগঠনের মহাসচিব বলেন, তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোরও উচিত আন্দোলনের ধরন পাল্টানো।