সুন্দরবনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৩ ‘ডাকাত’ নিহত

সুন্দরবনে কথিত বন্দুকযুদ্ধের দুটি ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের সবাই স্থানীয় একটি ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2014, 08:46 AM
Updated : 5 Oct 2014, 05:09 PM

খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান জানান, রোববার ভোরে পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের ঝিলবুনিয়া গ্রামে ও দুপুরে কয়রা উপজেলার হড্ডা গ্রামে ওই দুটি ঘটনায় ১৭টি বন্দুক ও ৫৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

বন্দুকযুদ্ধের সময় ডাকাতদের গুলিতে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন বলে তিনি জানান।

নিহতরা হলেন- পাইকগাছা উপজেলার মাগুরা গ্রামের শরীফ মোড়লের ছেলে সবুর মোড়ল (৪০), দাকোপ উপজেলার কালাবগী গ্রামের সুলতান গাজীর ছেলে হানিফ গাজী (৩৪), বাগেরহাটের মংলার ছিকলের দেওয়ান এলাকার মৃত নান্নু মোড়লের ছেলে আলম মোড়ল (২৭), ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা গ্রামের আজিজ শেখের ছেলে আমিরুল শেখ (২৬) ও তার ছোট ভাই আফজাল শেখ (২০), একই উপজেলার  শরাফপুর গ্রামের সাত্তার মোল্লার ছেলে মফিজুল মোল্লা (৩০) ও তার বড় ভাই মফিজুল মোল্লা (৪১), ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা গ্রামের শহীদ শেখের ছেলে শফিকুল শেখ (২১) ও জলিল শেখের ছেলে নজরুল শেখ (২৪), ডুমুমরিয়া উপজেলার গোলনা গ্রামের গফ্ফার শেখের ছেলে রুবেল শেখ (২৩) একই এলাকার ইউসুফ আলী খানের ছেলে জুনায়েদ খান (৩৫), ডুমুরিয়ার হাবিবুর সরদার ওরফে হবি (৩৫) ও একই এলকার কারিমুল (৪২)।

এসপি হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১৪/১৫ জন ডাকাত ঝিলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক প্রশান্ত কুমার ঢালীকে অপহরণ করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে শিবসা নদীর শাখা নদী হাঙ্গরখানার দিকে যায়। এসময় পুলিশ ও স্থানীয় জনতা মিলে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করেই তাদের ধাওয়া করে।

“এক পর্যায়ে ডাকাতদের নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে তারা চরে নেমে পড়ে। তখন জনতাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশও চরে নেমে তাদের পিছু নেয়। এসময় ডাকাতরা ছয়/সাত রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে হবি ও কারিমুল নিহত হন। ”

তখন ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি বন্দুক ও ২৭ রাউন্ড গুলিসহ ১৩ ডাকাতকে আটক করে পাইকগাছা থানায় নেওয়া হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের যাচাই বাছাই শেষে তাদের মধ্য থেকে অপর একটি নৌকার চালক মোক্তার মোল্লা ও অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন ছেলেকে দেওয়া হয়।

বাকি ১১ জনকে নিয়ে স্থানীয় বনদস্যু ও ডাকাত দলের প্রধান কাশেমকে গ্রেপ্তারের জন্য রোববার বেলা দেড়টার দিকে সুন্দরবনে পুলিশের অভিযান শুরু হয়।

“টের পেয়ে ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এর মধ্যেই আটক ১১ ডাকাত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। তখন পাইকগাছা থানার ওসি শিকদার আক্কাস আলীসহ পুলিশের ছয় সদস্য ডাকাতদের গুলিতে আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।”

এসময় ঘটনাস্থল থেকে আরো ১১টি বন্দুক ও ২৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানান এসপি হাবিবুর।

তিনি জানান, বটিয়াঘাটা উপজেলার বারোআড়িয়া শহীদ সরণী মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক অপহৃত প্রশান্তকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

আর ময়নাতদন্তের জন্য নিহতদের লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।