সাহিত্যে পুরস্কার পেলেন আহমদ রফিক, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও মাজহার

আহমদ রফিক ও জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের সঙ্গে এ বছর ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহ-সম্পাদক মাজহার সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2017, 05:12 PM
Updated : 21 May 2017, 05:34 AM

২০১৬ সালে প্রকাশিত বইয়ের জন্য এই তিনজন কবি-সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শনিবার সন্ধ্যায় তাদের হাতে পুরস্কারের চেক ও পদক তুলে দেওয়া হয়।

প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ শাখায় ‘একুশের দিনলিপি’ বইয়ের জন্য ড. আহমদ রফিক এবং কবিতা ও কথাসাহিত্য শাখায় ‘স্বপ্নের সীমানায় পারাপার’ বইয়ের জন্য জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত পুরস্কার পান।

তরুণ সাহিত্যিকদের জন্য হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার উঠেছে মাজহার সরকারের হাতে, তার প্রথম উপন্যাস ‘রাজনীতি’র জন্যে।

ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক প্রাপ্ত জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের সর্বশেষ বই ‘জীবনানন্দের খোঁজে’ গত বইমেলায় প্রকাশ করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর পাবলিশিং লিমিটেড (বিপিএল)।

 

নিউ ইয়র্ক প্রবাসী ৭৮ বছর বয়সী জ্যোতিপ্রকাশ এই পুরস্কার উপলক্ষে একদিনের জন্য ঢাকায় আসেন।

প্রথম দুই শাখায় পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্টের সঙ্গে দুই লাখ টাকার চেক ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। ক্রেস্টের সঙ্গে এক লাখ টাকার চেক ও সম্মাননা স্মারক পান তৃতীয় শাখায় পুরস্কার বিজয়ী।

 

পুরস্কারপ্রাপ্তদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে তাদের সম্মাননা স্মারক পড়ে শোনানো হয়।

ছাত্র রাজনীতির খুঁটিনাটি তুলে ধরা ‘রাজনীতি’ উপন্যাসের লেখক মাজহার সরকারের নাম ঘোষণা করেন পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য কবি আসাদ চৌধুরী। বইয়ের কিছু অংশ পড়ে শোনান বন্যা মির্জা আর সম্মাননা স্মারক পড়েন রোকেয়া প্রাচী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র মাজহারকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন কবি আসাদ চৌধুরী। তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার।

১৯৮৬ সালের ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্ম নেওয়া মাজহার সরকার স্কুল-কলেজের পাঠ চুকিয়েছেন কুমিল্লা জিলা স্কুল ও কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে।

তার প্রথম কবিতার বই ‘সোনালী রোদের সাঁকো’ এর আগে সিটি-আনন্দ আলো পুরস্কার পায়। ‘শরতের বাস টার্মিনাল’, ‘শূন্য সত্য একমাত্র’, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী নিঃসঙ্গতা’ ও ‘প্রেরিত পুরুষ’ রয়েছে তার অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে।

তার একমাত্র গল্পগ্রন্থ ‘আগ্নেয় আশ্বিনের তামুক’।

এক সময় বিতর্কের সঙ্গে জড়িত মাজহার চট্টগ্রাম বিভাগে শ্রেষ্ঠ ইংরেজি বিতার্কিক হিসাবে পুরস্কার পেয়েছিলেন।

পুরস্কার গ্রহণ করে মাজহার সরকার বলেন, “আমি নিজে একজন বিশৃঙ্খল মানুষ, যদি তা না হতাম তাহলে আজকে আমার এখানে দাঁড়ানো হত না। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র। কিন্তু অর্থনীতি পড়ে আমি ব্যাংকে যাইনি, আমলা হইনি, আমি উপন্যাস লিখেছি।”

তিনি বলেন, “আজকে আমি যে বিষয়ে বেশি গৌরব বোধ করছি, আমি এখন যে জায়গায় চাকরি করি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী নিজেই এখানে উপস্থিত হয়েছেন।

“একজন লেখক হিসাবে আমি মনে করি, যখন তার সহকর্মীরা প্রাপ্তির দিনে উপস্থিত হন এর চেয়ে গৌরবের আর কিছু হতে পারে না।”

এর আগে অন্য একটি পত্রিকা অফিসে কাজ করে আসা মাজহার সরকার বলেন, “সেখানে বই নিয়ে যাওয়ার কারণে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল এবং সেই চাকরি আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম।

“আমি আনন্দিত। এ পুরস্কার যতটা না আমার কাছে মূল্যবান, তার চেয়ে এটা অনেক বড় অঙ্গীকার। আমি বুঝে গেছি, আমাকে লেখালেখি করতে হবে, আমি লেখালেখি করতে পারব। মানুষের কথা বলতে পারব।”

প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ শাখায় পুরস্কার বিজয়ী ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিকের নাম ঘোষণা করেন জুরি বোর্ডের সদস্য প্রাবন্ধিক হায়াৎ মামুদ।

তার ‘একুশের দিনলিপি’ বইয়ের কিছু অংশ পড়ে শোনান অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। সম্মাননা স্মারক পড়ে শোনান আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার পর ক্রেস্ট তুলে দেন হায়াৎ মামুদ। সম্মাননা স্মারক তুলে দেন কবি আসাদ চৌধুরী।

পুরস্কারের প্রতিক্রিয়ায় আহমদ রফিক বলেন, “পুরস্কার যে কোনো লেখকের জন্য আনন্দের বিষয়, সন্দেহ নাই। কিন্তু আমি মনে করি, সে সঙ্গে তার দায়িত্বও বেড়ে যায়।”

সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই আজীবন কলম ধরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “লেখার ক্ষেত্রে বিনোদনের যে ভিত্তি, সেটা লেখকের আত্মবিনোদনের জন্য, তেমনি পাঠকের পক্ষেও বিনোদন। নিজেদের বক্তব্যটি, সেটা যে ধরনেরই হোক, তা পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

“এই সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রকাশ ঘটিয়ে লেখক তার সমস্ত চিন্তা-ভাবনা, দার্শনিকবোধ, সমাজ, রাজনীতি ও সংস্কৃতিসহ সবক্ষেত্রে যে বিচার বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছান, তার প্রকাশ ঘটে এই সাহিত্যে বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে।”

১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া আহমদ রফিক ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে গবেষণায় কৃতিত্বের জন্য রবীন্দ্র আচার্য ভূষিত হন টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে।

ব্যক্তি জীবনে চিকিৎসক হলেও সাহিত্য চিন্তা নিয়েই জীবনজুড়ে মগ্ন আহমদ রফিক রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলা একাডেমির ফেলো।

তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘নির্বাসিত নায়ক’, ‘বাউল মাটিতে মন’, ‘রক্তে নিসর্গে স্বদেশ’, ‘বিপ্লব ফেরারি তরুণ’, ‘নির্বাচিত কবিতা’ প্রভৃতি। তার ছোটগল্পের বই ‘অনেক রঙের আকাশ’।

‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’, ‘নজরুল কাব্যে জীবন সাধনা’, ‘আরেক কালান্তর’, ‘বুদ্ধিজীবীর সংস্কৃতি’, ‘রবীন্দ্রনাথের রাষ্ট্র চিন্তা ও বাংলাদেশ’, ‘একুশের ইতিহাস আমাদের ইতিহাস’, ‘এই অস্থির সময়’, ‘রবীন্দ্র ভুবনে প্রতিসন’, ‘বাংলাদেশের জাতীয়তা ও জাতিরাষ্ট্রের সমস্যা’, ‘রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্প’ প্রভৃতি রয়েছে তার প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে।

জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের হাতে পুরস্কারের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন

দক্ষ অনুবাদক ও সম্পাদক আহমদ রফিক সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন বাংলা একাডেমির ‘চিকিৎসা বিজ্ঞান পরিভাষা কোষ’। সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার ও একুশে পদক পেয়েছেন তিনি।

কবিতা ও কথাসাহিত্য বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘স্বপ্নের সীমানায় পারাপার’ বইয়ের লেখক জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের নাম ঘোষণা করেন জুরি বোর্ডের সদস্য কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন।

এরপর বাচিকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ‘স্বপ্নের সীমানায় পারাপার’ থেকে কিছু অংশ পড়ে শোনানোর পর সম্মাননা স্মারকের বক্তব্য পাঠ করেন বন্যা মির্জা।

সমকাল প্রকাশক এ কে আজাদ জ্যোতিপ্রকাশ দত্তকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার পর পুরস্কারের ক্রেস্ট তুলে দেন কবি আসাদ চৌধুরী। তাকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন।

১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্ম নেওয়া জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘দূর্বীনিত কাল’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে।

ষাটের দশকে গল্প দিয়ে তার সাহিত্যিক জীবন শুরু হয়েছিল। তার গল্পে উঠে এসেছে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা, দর্শন, ভাষা আন্দোলন ও সমকালীন আধুনিক জীবনযাত্রা।

১৯৬৭ সালে লেখিকা পূরবী বসুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। কথাসাহিত্যিক পূরবী বসুকে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত।

তার উল্লেখযোগ্য ছোটগল্প গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘দুর্বীনিত কাল’, ‘বহে না সুবাতাস’, ‘সিতাংশু তোর সমস্ত কথা’, ‘দিন ফুরানোর খেলা’, ‘পূনরুদ্ধার’, ‘স্বদেশ দূরদেশ’, ‘আমৃত্যু আজীবন’ প্রভৃতি।

পুরস্কারপ্রাপ্ত বই ‘স্বপ্নের সীমানায় পারাপার’-এর সঙ্গে তার উপন্যাসের তালিকায় রয়েছে ‘শূন্য নভে ভ্রমি’ ও ‘উড়িয়ে নিয়ে যা কালোমেঘ’।

‘ভিন্ন নদী একই স্রোত’, ‘সময় অসময়ের মুক্তিযুদ্ধ’, ‘ছড়ানো জীবনের নানা লেখা’ এবং ‘বাংলাদেশ : সমাজ ও অর্থনীতি’ নামে প্রবন্ধগ্রন্থ লিখেছেন তিনি।

গল্পকার হিসাবে ১৯৭১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ২০১৬ সালে একুশে পদক পান।

পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত বলেন, “আপ্লুত হওয়ার, আনন্দিত হওয়ার দুটি কারণ আছে। আমি ‘স্বপ্নের সীমানায় পারাপার’ গ্রন্থটিকে বলেছি, এটি ছোট উপন্যাস। এটা ছোটগল্প নয়, নভেলা নয়, উপন্যাসও নয়; এটা নতুন শিল্পমাধ্যম। সেটা পাঠক কীভাবে গ্রহণ করবে সেটা নিয়ে সংশয় ছিল। এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমার সে সংশয় ঘুচিয়েছে। ভিন্নধর্মী রচনাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমি লিখেছি, সেভাবে পুরস্কার পাইনি। আমি সব সময় নতুন লিখতে চেষ্টা করেছি। নতুন না হলেও বেশ নতুনই ছিল বলা যায়।”

ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “লেখকদের স্বীকৃতি দেওয়া আজকের এই উৎসবের কারণ।

“তবে লেখক নিজের মনের তাগিদে লেখেন। আমারতো ভালো লাগে। আমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে লিখি। অন্য কাজ করি, তার মাঝে মাঝে গবেষণা করে লিখি এবং আগ্রহ আছে বলে বোধহয় ৩৪-৩৫টি বই লিখেছি। সেগুলোর জন্য কেউ কিন্তু আমাকে পয়সা দেয়নি।”

সম্প্রতি চন্দ্রাবতী একাডেমি থেকে বের হওয়া তার দুটি বই বেশ ব্যবসা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আহমদ রফিক মেডিকেলে পড় অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বের ধারবাহিকতায় লেখালেখিকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি ঠিক উল্টো। আমি পড়াশোনা শেষ করার পর চাকরিতে যোগ দিয়েছি। ২৫ বছর চাকরি করেছি বিভিন্ন জায়গায়-এই দেশে, পাকিস্তানে, ওয়াশিংটনে, ম্যানিলায়। তারপরে দেশে ফিরেছি অনেক বছর পরে।”

১৯৮১ সাল থেকে শুরু করে ২০০১ সাল পর্যন্ত কিছু লেখালেখির কথা জানিয়ে মুহিত বলেন, “কিন্তু এটা আমার পেশা ছিল না। রাজনীতি, অর্থনীতি বিভিন্ন বিষয়ে উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশে ঘুরে আমার জগৎটি বিস্তৃত হয়। সে জগতে বিচরণ করেছি এবং মাঝে মধ্যে লিখেছি।”

“আমি কখনো কবিতা লিখিনি। ছোটগল্প লিখেছি, কিন্তু এগুলো কখনো প্রকাশের উপযুক্ত মনে করিনি। আমি প্রবন্ধই লিখেছি আজীবন। প্রবন্ধ লিখতে সময় লাগে। সেজন্য গবেষণার প্রয়োজন। গবেষণা আমি মোটামুটিভাবে ভালোভাবে করতে পেরেছি। এটা আমার প্রিয় বিষয়।”

ব্রিটিশ লাইব্রেরি, নিউ ইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরিসহ বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত গ্রন্থাগারে গিয়ে ‘গবেষণার দীক্ষা’ পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা

নিজের সংগ্রহে থাকা ২৫ হাজার বই দিয়ে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথাও মুহিত।

অনুষ্ঠানে এই বছর পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনটি পৃথক বইয়ের মধ্যে যোগসূত্র পাওয়ার কথা জানিয়ে সেলিনা হোসেন বলেন, “প্রথমটি ‘একুশের দিনলিপি’ ভাষা আন্দোলনে আমাদের সাংস্কৃতিক বিবর্তনের সূচনা দিয়ে। দ্বিতীয়টিতে রাজনীতি, সামাজিক পরিস্থিতি ও ব্যক্তি জীবনের ধারাবাহিকতায় তৃতীয়টিতে বর্তমান রাজনৈতিক সময়ের মানুষের জীবন ফুটে উঠেছে।”

কাজী নজরুল ইসলামের অনামিকা কবিতার সঙ্গে ‘তুরঙ্গমী’ নৃত্যদলের ফিউশনধর্মী নাচ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

এরপর ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র দেখানোর পর সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার।

রবীন্দ্র সঙ্গীত ‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি’, নজরুল সঙ্গীত ‘ও কেন ভালোবাসা জানাতে আসে’, ‘ও গো তুমি পঞ্চদশী’, ‘আজি মম পূর্ণ হলো’, ‘তুমি কোন কাননের ফুল, কোন গগনের তারা’ ও ‘এই উদাসী হাওয়ার পথে পথে নতুন ধুলি ঝরে’ গেয়ে শোনান তিনি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১১ সাল থেকে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে ব্র্যাক ব্যাংক ও সমকাল। ২০১৩ সাল থেকে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্মরণে ‘হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার’ চালু হয়।

ছয় বছরের ধারাবাহিকতায় ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার উঠেছে সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক, দ্রাবিড় সৈকত, আনিসুজ্জামান, শুভাশিস সিনহা, বুলবুল চৌধুরী, মঈনুল আহসান সাবের, মাসরুর আরেফিন, হরিশংকর জলদাস, সুস্মিতা ইসলাম, নির্মলেন্দু গুণ ও রাজকুমার সিংহের হাতে।

এর আগে পুরস্কারপ্রাপ্ত তিন তরুণ সাহিত্যিক হলেন-বদরুন নাহার, মুজিব ইরম ও স্বকৃত নোমান।

এবারের পুরস্কারের জুরি বোর্ডে ছিলেন মুস্তাফা নূর উল ইসলাম, প্রাবন্ধিক হায়াৎ মামুদ, কবি আসাদ চৌধুরী ও কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন।