‘এখন জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে কালো টাকার মালিকদের সন্তানরা’

কালো টাকার মালিকদের সন্তানেরাই এখন জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2016, 01:29 PM
Updated : 12 July 2016, 01:29 PM

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমি এতো দিন মনে করেছিলাম… কিছুটা বিশ্বাসও করেছিলাম যে মাদ্রাসার ছাত্ররাই জঙ্গি হামলার সাথে জড়িত থাকে।

“কিন্তু মাদ্রাসা নয়, দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিস্থানে পড়ুয়া কালো টাকার মালিকদের সন্তানেরাই এখন জঙ্গিবাদে অংশগ্রহণ করছে।”

গত ১ জুলাই গুলশানের জঙ্গি হামলার পর সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানে নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করে আইএস। ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হন।

এই ছয়জনের মধ্যে চারজনই বিভিন্ন ব্যয়বহুল ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। তাদের দুইজন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন, একজন ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের।

সাম্প্রতিক সময়ের এই দুই হামলার পর ‘আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের’ সন্তানদের মধ্যে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে মঙ্গলবারে এক বৈঠকে পর্যবেক্ষণ দেন।

‘জঙ্গিবাদ ও জঙ্গি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের ব্যক্তিবর্গের এ মুহূর্তে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তি সংঘ ও বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ।

সভায় জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা মোকাবেলায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক বেশি সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে দাবি করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।

গুলশান হামলার প্রসঙ্গ টেনে বিদেশিদের উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে যারা জঙ্গি হামলা করেছে তারা সবাই মারা গেছে, আর বিদেশে যে জঙ্গিরা হামলা করে তাদের মারা তো দূরের কথা, তাদের ধরতেও পারে না। অথচ তারা অনেক বড় বড় কথা বলে আমাদেরকে নিয়ে।”

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীকে সমূলে নিষিদ্ধ করা হলে এ ধরনের জঙ্গি হামলার ঘটনা আর ঘটবে না বলে মনে করেন মোজাম্মেল হক।

“জামায়াতের যে সকল নেতাকর্মী বয়স্ক হয়ে গেছে, তাদের সন্তানদেরকে ট্রেনিং দিয়ে জেএমবিতে যোগ দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। জামায়াতকে সমূলে নিষিদ্ধ করা হলে এ ধরনের হামলার ঘটনা আর ঘটবে না।

“জামায়াত শিবিররা বাসা ভাড়া নিচ্ছে বাসার ছাদে, যেন নিচের কেউ জানতে না পারে তারা বাসার উপরে কি করছে।”

জামায়াত-শিবির দেশকে অকেজো রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় মন্তব্য করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “এরা বিদেশিদের হত্যা করছে; তারা মনে করছে বিদেশিদের হত্যা করলে এই দেশে বিদেশিরা বিনিয়োগ করবে না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তার উল্টোটা হচ্ছে, বিদেশিদের আমরা না ডাকতেই তারা এসে আমাদের সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে।”

বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ আহমেদ হোসেন মির্জার সভাপতিত্বতে আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধাকালীন সাব সেক্টর কমান্ডার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরীসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।