আইএস নেই: যুক্তরাষ্ট্রকে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বিষয়ক পরবর্তী আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যাননের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2015, 02:52 PM
Updated : 13 Dec 2015, 02:58 PM

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলো যারা ঘটিয়েছে তারা এদেশেরই লোক বলে জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত আন্ডার সেক্রেটারি শ্যানন রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এয়িশা বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল, উপ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানপ্রীত সিং আনন্দ এবং ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।

ব্লগার ও বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো সাফল্যের সঙ্গে বিদেশি নাগরিক এবং ব্লগার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।  

“এখন পর্যন্ত প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে, এরা অভ্যন্তরীণ।”

গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশানে ইতালীয় ত্রাণকর্মী চেজারে তাভেল্লা এবং এর কয়েক দিনের মাথায় রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি খুন হন।

এই দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ড এবং এরপর পুরান ঢাকায় শিয়া সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায় স্বীকার করে বার্তা দেয় বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’ জানায়।

এরপর কয়েকটি অনুষ্ঠানে আইএস দমনে বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট।

তবে কোনো ঘটনায়ই আইএসের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে তার সরকার।

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শ্যানন।

প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা তুলে ধরে বিমান পরিবহনে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলেন শ্যানন।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়।”

বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশ একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে বলে মন্তব্য করেন শ্যানন।

বৈঠকে তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব।

“শ্যানন বলেন, বাংলাদেশ এই অঞ্চলের গতিশীল অর্থনীতি,” বলেন তিনি।

দুই দেশের সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার আশা প্রকাশ করেন শ্যানন।

জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের অস্তিত্ব এর সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে অন্যতম।”

বাংলাদেশ জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়নের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনির যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শ্যানন দেশে ফিরে এই বিষয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন।

সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।