তুষ্টিকে নির্যাতন: হাই কোর্টের আদেশ আরও চার সপ্তাহ স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত জাহান তুষ্টিকে নির্যাতনের ঘটনায় তার স্বামী মেজর নাজির উদ্দিনের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিতের মেয়াদ চার সপ্তাহ বাড়িয়ে এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে বলেছে আপিল বিভাগ।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2015, 06:04 PM
Updated : 25 August 2015, 05:20 AM

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

নারী নির্যাতন আইনে করা অভিযোগের বিচার কোর্ট মার্শালে চলতে পারে কি না, এ নিয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১২ অগাস্ট হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ তুষ্টিকে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলা এবং ওই মামলার নথি কোর্ট মার্শালে বিচারের জন্য পাঠাতে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া সেনা সদর দপ্তরের চিঠির কার্যকারিতাও স্থগিত করেছিল।

তুষ্টির বাবা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম ভূঁইয়ার করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট রুলসহ এ আদেশ দেয়।

এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন নিয়ে যায়। আদালত হাই কোর্টের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার বিষয়টি কার্যতালিকায় আসে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল একরামুল হক টুটুল। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান। সঙ্গে ছিলেন  ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

একরামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাই কোর্টে মামলার কার্য্ক্র ম ও নথি তলবের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে। এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদনটি করে। হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার বিচারপতির দেওয়া স্থগিতাদেশের মেয়াদ চার সপ্তাহ বাড়িয়েছে আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।”

টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে গত ৩০ মার্চ তুষ্টির শ্বশুরবাড়িতে তার উপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ’র শিক্ষার্থী তুষ্টিকে বেঁধে নির্মমভাবে পেটায় তার স্বামী মেজর নাজির উদ্দিন।

এ বিষয়ে ২ এপ্রিল টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা হয়।

নুসরাতকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার বাবা নুরুল ইসলাম, মা শাহনাজ আক্তার ও ভাই মুঈদ হাসান তড়িতও মারধরের শিকার হন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

ওই সময় নাজির উদ্দিন চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

হাই কোর্টের আদেশের পর অনীক আর হক জানিয়েছিলেন, সেনা কর্মকর্তা হওয়ায় কোর্ট মার্শালে নাজির উদ্দিনের বিচার করার জন্য তুষ্টির পরিবারের করা মামলাটির নথিপত্র চায় সেনা সদরদপ্তর।

সেনা সদর দপ্তরের এরিয়া কমান্ডার (লজিস্টিকস) মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান গত ১১ মে এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি চিঠি দেন।

ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেই  ৯ অগাস্ট হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন তুষ্টির বাবা নূরুল ইসলাম।

তার যুক্তি, বিশেষ আইনের আওতাভুক্ত কোনো অপরাধের বিচার কেবল ওই বিশেষ আইনেই বিচারযোগ্য; তা কোর্ট মার্শালে বিচারের এখতিয়ারভুক্ত নয়।