)
বিশ্ব

প্রধানমন্ত্রিত্ব শেষে ‘মা, বোনের দিন কাটাতে’ মুখিয়ে অরডার্ন

Byনিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাটানো শেষদিনে আবেগাপ্লুত এক ভাষণে তার প্রতি নিউ জিল্যান্ডবাসীর দেখানো উদারতা ও সহানুভূতির কথা উল্লেখ করে জেসিন্ডা অরডার্ন বলেছেন, তিনি এখন মা ও বোন হিসেবে দিন কাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

পাঁচ বছর সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন শেষে আচমকা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে সবাইকে হতভম্ব করে দেওয়ার কয়েকদিন পর ৪২ বছর বয়সী এ নারী মঙ্গলবার রাজধানী ওয়েলিংটনের উত্তরে ছোট্ট শহর রাতানায় রাজনীতিক ও মাউরি বয়োজ্যেষ্ঠদের এক জমায়েতে হাজির হন।

তাৎক্ষণিকভাবে ছবি তুলতে চাওয়া একদল সমর্থক তাকে ঘিরে ধরে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

সেখানে দেওয়া বক্তৃতায় অরডান্স নিউ জিল্যান্ডবাসীকে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুযোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ জানান।

বুধবারই তার আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করার কথা, এরপর লেবার পার্টির নতুন নেতা ক্রিস হিপকিন্স তার স্থলাভিষিক্ত হবেন।

হিপকিন্স ও বিরোধী অন্য রাজনীতিকদের সঙ্গে নিয়ে বার্ষিক সফরে অরডার্ন রাতানা যান; মাউরি নবী তাহুপোতিকি অয়ারেমু রাতানার জন্মদিন উপলক্ষে সেখানে সপ্তাহব্যাপী উৎসব চলে।

একাধিক বাদ্যযন্ত্রের সুরের মূর্ছনায় কালো পোশাক পরিহিত, কোরায়াই নামে পরিচিত ঐতিহ্যবাদী মাউরি চাদরে কাঁধ ঢাকা অরডার্ন দলের নেতাকর্মী নিয়ে কমিউনিটি গ্রাউন্ডে প্রবেশ করেন। এরপর ছিল বক্তৃতা আর গান-নাচের ছড়াছড়ি, তার মধ্যে মাউরি বয়োজ্যেষ্ঠদেরকে বারবারই অরডার্ন সম্পর্কে মজার ও আবেগঘন কথা বলতে দেখা যায়।

“দ্রুত ভালোবাসতে শেখানোয় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ,” অরডার্নকে বলেন এক বযোজ্যেষ্ঠ।

এর প্রত্যুত্তরে নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জানান, বক্তৃতা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আসেননি তিনি; কিন্তু উপস্থিত দর্শকরা তার কথা মানতে নারাজ। 

“নিউ জিল্যান্ডে এই দায়িত্বে আমার সামগ্রিক অভিজ্ঞতা ছিল ভালোবাসা, সহানুভূতি ও উদারতায় পরিপূর্ণ,” বলেছেন তিনি।

বাম ঘরানার এই প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের বৈঠক কয়েক মাস বয়সী শিশুসন্তানকে নিয়ে গিয়ে, মুসলিমদের লক্ষ্য করে ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর হিজাব পরে জনসমক্ষে এসে বিশ্ববাসীর মনোযোগ কেড়ে নিয়েছিলেন।

সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে উগ্র ডানপন্থিদের বিদ্বেষ ও ঘৃণারও মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। তবে অরডার্ন বলেছেন, তিনি হৃদয়ভর্তি ভালোবাসা নিয়েই দায়িত্ব ছাড়ছেন। 

“যখন শুরু করেছিলাম, দীর্ঘ সাদা মেঘের ভেলার দেশ নিউ জিল্যান্ড ও এর জনগণের জন্য তার চেয়ে বেশি ভালোবাসা ও মমতা নিয়ে যে আমি দায়িত্ব ছাড়ছি, তা জানিয়ে রাখতে চাই আপনাদের,” বলেছেন অরডার্ন।

কমিউনিটি গ্রাউন্ডে যাওয়ার আগে তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেও রাজনৈতিক কোসো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি। বলেন, এসবের ভার এখন পরবর্তী নেতার। 

“অনেক কিছুর জন্য প্রস্তুত হচ্ছি আমি। আমি সাংসদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত। বোন, মা হিসেবে দিন কাটনোর জন্যও প্রস্তুত,” বলেন অরডার্ন।

তার মেয়ে নেভে তে আরোহার বয়স এখন ৪; জুন থেকে তার স্কুলে যাওয়ার কথা।

নিউ জিল্যান্ডের সাবেক কোভিড-১৯ মন্ত্রী হিপকিন্স অরডার্নের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। তিনি ২০০৮ সালে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য হন। 

SCROLL FOR NEXT