সমগ্র বাংলাদেশ

সজীব হত্যার বিচার দাবিতে খাগড়াছড়িতে হরতাল

Byখাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

পার্বত্য অধিকার ফোরাম ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের ডাকে এই হরতালে রোববার ভোর থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাগড়াছড়ি গেইট, গঞ্জপাড়া, বাস টার্মিনাল ও উপজেলা এলাকায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেন তারা।

বৃহস্পতিবার বাসা থেকে মোটরসাইকেলে করে উপজেলা পরিষদে নিজের কার্যালয়ে যাওয়ার রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।সে সময় তার সঙ্গে থাকা জেএসএস (এমএনলারমা) নানিয়ারচর উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রূপম চাকমাও গুলিবিদ্ধ হন।

এর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে শুক্রবার দুপুরে শক্তিমানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের বেতছড়ি এলাকায় একটি মাইক্রোবাসকে লক্ষ্য করে ‘ব্রাশফায়ার’ করা হয়। এতে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমাসহ পাঁচজন নিহত হন; যার মধ্যে গাড়ির চালক সজীবও রয়েছেন।   

নিহত বাকিরা হলেন- জনসংহতি সমিতির সহযোগী সংগঠন যুব সমিতির (এমএন লারমা) মহালছড়ি শাখার সভাপতি সুজন চাকমা, সদস্য তনয় চাকমা ও যুব সমিতির (এমএন লারমা) সদস্য রবিন চাকমা।

এছাড়া গত ১৬ই এপ্রিল খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙা উপজেলার তিন বাঙালী মো.সালাউদ্দীন, মো.বাহার মিয়া ও মহরম আলী কাঠ কেনার জন্য মহালছড়ির মাইসছড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এর ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও তাদের উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন।

সজীব হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, মহালছড়ি থেকে অপহৃত তিন বাঙালী ব্যবসায়ীকে উদ্ধারসহ পাহাড়ে বাঙ্গালীদের নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে পার্বত্য অধিকারফোরাম ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা করে।

হরতালের কারণে সকাল থেকে জেলা শহরের সব দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে; অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লা সড়কও কোনো যান ছেড়ে যায়নি।

এদিকে ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে’ পুলিশ বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন। এছাড়া রাতভর তাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে বলে অভিযোগ মাঈনের।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি সাহাদাত হোসেন বলেন, “খাগড়াছড়িতে কোনো হরতাল হচ্ছে না।”

খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাউদ্দীন জানান, হরতালের কারণে যে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে জেলার গুরুত্বপূর্ন স্থানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দুই দশক আগের শান্তিচুক্তি পাহাড়ে রক্তক্ষয় অবসানের প্রত্যাশা জাগালেও এরপর থেকে চলছে পাহাড়ি সংগঠনগুলোর নিজেদের কোন্দল, যার পরিণতিতে গত পাঁচ মাসে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

SCROLL FOR NEXT