পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

|

ছবি: পিআইডি

)<div class="paragraphs"><p>পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।</p></div>
রাজনীতি

আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করলেন শেখ হাসিনা

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় পতাকা ওড়ানোর পর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন হয়।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন শেখ হাসিনা, দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেই সঙ্গে ৭৮টি সাংগঠনিক ইউনিটের পক্ষ থেকেও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বক্তৃতামালা চলে বেলা ১টা পর্যন্ত। এরপর বিরতির ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমরা প্রথম অধিবেশনের মুলতবি করছি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় অধিবেশন বসবে। সেখানে নতুন নেতৃত্ব আসবে। আজকে থেকে আমাদের বিদায়। সবাই ভালো থাকবেন।”

বিকালের কাউন্সিল অধিবেশনেই ক্ষমতাসীন দলটির তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা এবং নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে ভোটের আগে দল গোছানো এবং বিরোধীদলের আন্দোলন মোকাবেলার জন্য দলকে শক্তিশালী করাকে লক্ষ্য ঠিক করেছে আওয়ামী লীগ।

সম্মেলনের স্লোগান ঠিক হয়েছে- ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’।

সম্মেলনস্থলে পদ্মা সেতুর উপরে নৌকার আদলে তৈরি করা মূল মঞ্চের মাঝখানের চেয়ারে বসেছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। মঞ্চে বসেছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।

মঞ্চের পেছনের ব্যানারে শোভা পাচ্ছে পদ্মা সেতু। তারপর রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ছবি। স্মৃতিসৌধের বাম পাশে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। তার বামে আছেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি। 

এছাড়া বামে আরও আছে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শামসুল হক ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ছবি।

কর্নারের বাউন্ডারির ব্যানারে শোভা পাচ্ছে কর্ণফুলী টানেল, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল, চট্টগ্রাম বন্দর, ফ্লাইওভার, পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, ভাঙ্গা চৌরাস্তা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছবি।

উদ্যানের লেকপাড়েও করা হয়েছে প্যান্ডেল। ওই প্যান্ডেলেও দেওয়া হয়েছে তিনটি বড় স্ক্রিন। সেখানে চেয়ারগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন পেছনের কারও কোনো অসুবিধা না হয় স্ক্রিন দেখতে। নিরাপত্তার জন্য পুরো এলাকায় প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য চারুকলার সামনের ছবির হাটের ফটক, টিএসসির ফটক, বাংলা একাডেমির সামনের ফটক, তিন নেতার মাজার সংলগ্ন ফটকে আর্চওয়ে বসানো হয়েছে৷ সেখানে তল্লাশি করে সবাইকে উদ্যানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মিছিল নিয়ে ঢুকেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা

সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি, রমনা কালী মন্দির গেট, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ, চারুকলার সামনের গেটে দেখা গেছে আনন্দমুখর পরিবেশ। ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় বসার পর আওয়ামী লীগের তিনটি সম্মেলন হয়; সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৯ সালে। তার আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে দলটি।

সম্মেলনে সারা দেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর ও সাড়ে সাত হাজার প্রতিনিধি যোগ দিতে পারলেও উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিতে গাড়ি-লঞ্চ ভর্তি হয়ে ঢাকায় এসেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

তারা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নামার পর মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রওনা হয়েছেন। কোনো কোনো জেলা থেকে নেতা-কর্মী এক দিন আগেই ঢাকায় পৌঁছান। তারাও সকাল থেকে ছুটছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

সকালে ঢাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার গাবতলীতে এক ঘণ্টায় সম্মেলনের ব্যানার সম্বলিত অন্তত ২০টি বাস ও মাইক্রোবাসকে ঢুকতে দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাবতলীতে মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইল থেকে আসা কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। তারা জানান, ভোরে রওনা হন তারা৷

গাবতলীতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা চিত্ত রঞ্জন বলেন, “সকাল থেকেই স্বাভাবিকের চাইতে বেশি গাড়ির বেশ চাপ লক্ষ্য করা গেছে৷ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে ঢাকায় লোকজন এসেছেন।”

এই মাইক্রোবাসের গন্তব্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সম্মেলন

মিরপুর ১ নম্বর গোলচত্বরে মাইক্রোবাস চড়ে সম্মেলন স্থলে যাওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বাচ্চু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যেন সামনের দিনেও দেশ থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দূর করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে পারে, তারুণ্যকে প্রাধান্য দিয়ে দলে নতুন নেতৃত্ব আসবে এই প্রত্যাশায় সম্মেলনস্থলে যাচ্ছি।”

যশোরের ঝিকরগাছা থেকে আসা কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, “শুক্রবারেই চলে এসেছিলাম। এখন সম্মেলনস্থলের দিকে যাচ্ছি।”

সম্মেলনে যোগ দিতে জয়পুরহাট থেকে আসা কাউন্সিলর আব্দুল মজিদ মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। চারদিকে মানুষের ঢল। মুখে একটাই দাবি, শেখ হাসিনা যতদিন বাঁচবেন, ততদিন দলের সভাপতি থাকবেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে।”

পটুয়াখালী থেকে আসা খায়রুন নাহার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৩ বছর বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়েছে। আগামী দিনে আরও উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আজকে আমরা এখানে এসেছি।”

SCROLL FOR NEXT