গ্লিটজ

চলে গেলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকন

Byনিউজ ডেস্ক

সোমবার সকালে ঢাকার উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ইউএএমসি) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ হাসপাতালের চিকিৎসক মোশাররফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মোটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত খোকনকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে শহীদুল ইসলাম খোকনের সিনেমা মুক্তি পাওয়া মানেই ছিল, প্রেক্ষাগৃহের টিকিট কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইন। মার্শল আর্ট নির্ভর অ্যাকশন, নটকীয়তায় ভরপুর চিত্রনাট্য আর গানের কারণে তার নির্মিত বহু সিনেমা দর্শকপ্রিয় হয় সে সময়। 

আধুনিক মেডিকেলের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) চিকিৎসকরা জানান, মোটর নিউরন ডিজিজের কারণে তার শহীদুল ইসলাম খোকনের স্নায়ুতন্ত্র অকার্যকর হয়ে যাচ্ছিল। পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

২০১৫ সালে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন পরিচালক খোকন। কিন্তু মোটর নিউরনের কোনো চিকিৎসা  না থাকায় বেলভিউ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে দেশে পাঠিয়ে দেন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও পরিবেশক এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে এই নির্মাতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

শহীদুল ইসলাম খোকনের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১৫ মে। সোহেল রানার সঙ্গে পরিচয় ও সখ্যতার সূত্রে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। ঢাকার চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন অভিনেতা ও প্রযোজক সোহেল রানার সহকারী হিসেবে। খোকনের নিজের বানানো প্রথম সিনেমা ছিল ‘রক্তের বন্দি’।

শুরুর দিকে খোকনের ছবি ভালো ব্যবসা করতে না পারলেও চিত্রনায়ক রুবেলকে নিয়ে খোকনের ‘লড়াকু’ বক্স অফিসে দারুণ সাফল্য পায়।

এরপর ‘পালাবি কোথায়’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘ভণ্ড’, ‘ঘাতক’, ‘লড়াকু’, ‘বীরপুরুষ’, ‘লাল সবুজ’, ‘বজ্রমুষ্ঠি’, ‘সতর্ক শয়তান’, ‘বিষদাঁত’, ‘উত্থান পতন’ ও ‘টপ রংবাজ’-এর মতো বহু দর্শকপ্রিয় সিনেমা এসেছে তার হাত দিয়ে। নির্মাণ করেছেন প্রায় ৪০টির মতো সিনেমা। অভিনয় করেছেন অনন্ত দুটি সিনেমায়।

ড্যানি সিডাক, ইলিয়াস কোবরার মতো অ্যাকশন সিনেমার অনেক অভিনেতাই ঢাকাই সিনেমায় এসেছেন শহীদুল ইসলাম খোকনের হাত ধরে।     

তার চলচ্চিত্রে মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর, অপরাধীর বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিকের লড়াই এসেছে বার বার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাও তার চলচ্চিত্রকে ছুঁয়ে গেছে।

খোকন স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন। বিকালে তার মরদেহ নেওয়া হবে সাবেক কর্মক্ষেত্র এফডিসিতে।

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, “খোকন ভাইয়ের লাশ বতর্মানে তার উত্তরার বাসায় রয়েছে। দুপুরে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টর মসজিদে এবং বিকালে এফডিসি প্রাঙ্গণে উনার জানাজা হবে। রাতে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে সিটি করপোরেশন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।”

SCROLL FOR NEXT