ছোটবেলা থেকেই রেডিও শোনা শুরু। যখন বাড়িতে ছিলাম তখন বাবার রেডিও নিয়ে সব ভাইবোন মিলে শুনতাম। ঘরবন্দি এই পরিস্থিতিতে রেডিও শোনার সেই অতীত মনে পড়ে গেল।
২০০৬ সাল। এসএসসি পাসের পর বাড়ি ছেড়ে নিজ উপজেলার কলেজে ভর্তি হই। তখন মেসে কেচিবো ১০ ব্যান্ডের একটা রেডিও কিনেছিলাম। রেডিওটা খুবই ভাল ছিল। আজও কেচিবো ১০ ব্যান্ড রেডিও খুঁজি।
নিজের রেডিও হলেও ওই সময় চুরি করে রেডিও শুনতাম। কারণ মেসে নিয়মিত বাড়ি থেকে আমার বড় ভাই আমার খোঁজ নিতে আসত। একদিন বড় ভাই রেডিওটা দেখে ফেলে। কিন্তু তখন রেডিওটা এক বন্ধুর কাছে ছিল।
বড় ভাই বন্ধুকে বলেন, সোহেলের জন্যও একটা কিনিও। ও কি রেডিও ছাড়া থাকতে পারবে?
পরে অবশ্য আমার বন্ধু বড় ভাইকে বলে দিয়েছিল, এটা সোহেলেরই রেডিও। শুনে বড় ভাই শুধু হেসেছিল।
২০০৮ সাল। কলেজের টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে রংপুর যাই কোচিং করার জন্য। রেডিওটা ব্যাগে যত্ন করেই রাখছিলাম, কিন্তু বাবার রেডিও সেই সময় নষ্ট হওয়ায় রেডিওটা বাড়িতেই রেখে যেতে হয়।
রংপুরে থাকার সময় আমার এক ভাই জাপান যায়। জাপান যাওয়ার সময় তার কাছে থাকা কেচিবো ১০ ব্যান্ড রেডিওটা আমাকে দিয়ে যায়। সেই রেডিওটা ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগ পর্যন্ত আমার কাছেই ছিল। পরে সম্ভবত ২০১০ সালে ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া রেডিওটাও দিয়ে যেতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রেডিও ছিল না সাথে। ওই সময় মোবাইল ফোনেই রেডিও শুনতে হয়েছে। তারপর ২০১৯ সালে দারাজ থেকে রোলটন টি৫০ রেডিও কিনেছি। এই রেডিওটা এখন কম্পিউটারের স্পিকার হিসেবে ব্যবহার করছি।
২০২০ সাল। এখন মোবাইল ফোনে অ্যাপ ইনস্টল দিয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বা ওয়াইফাই পেলে বাংলাদেশ বেতারসহ বেশ কয়েকটি স্টেশন মোবাইলেই শুনি। তবুও পুরনো দিনের কথা মনে করে স্বপ্ন দেখি একটা ভালমানের রেডিও সেটের। মোবাইলটা হাতের কাছে না রেখে বরং রেডিওটাই হাতে কাছে রাখতে ভালো লাগে।
আলিএক্সপ্রেসে থার্ড পার্টি দিয়ে টেকসুন পিএল৩৯৮এমপি রেডিও অর্ডার করেও রেখেছি। যদিও অবরুদ্ধ এই দশায় রেডিওটা হাতে পৌঁছাতে বেশ কিছু সময় লাগবে বলে ওরা জানাচ্ছে।