বাংলাদেশ

অভিজিৎ হত্যা: ১০ জনের তালিকা ডিবির হাতে

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে অভিজিৎকে যারা যারা হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন, সেই রকম ১০ জনের একটি তালিকা ধরে তাদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনাও চলছে। 

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম রোববার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, “ওরা (এফবিআই) তো কথা কম বলে। তারপরও জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমরা কী মনে কর, কারা এই হত্যায় জড়িত?

“তারা বললো, এটা যদিও প্রথমে বলা কঠিন, তারপরও প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটা কোনো এক্সট্রিমিস্ট গ্রুপের কাজ।”

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক-ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড তদন্তে যোগ দিয়ে এফবিআই কর্মকর্তারা গত শুক্রবার হত্যাকাণ্ডস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তারা অভিজিতের বাবা অজয় রায়ের কথাও শনিবার শুনেছেন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এফবিআই কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে মামলার তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশকে সহায়তা করছে।

তদন্তে এফবিআই কর্মকর্তারা

তদন্তে এফবিআই কর্মকর্তারা

মনিরুলও বলেন, এফবিআইয়ের সরাসরি অপারেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। তারা এই হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।

“এখনও তারা কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে হবে, এমন কোনো তথ্য দেননি। যদি কাউকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তারা রিকম্যান্ড করে, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”

মুক্তমনা ব্লগসাইটের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ফারাবী শফিউর রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইন্টারনেটে উগ্রবাদের প্রচারক ফারাবী লেখালেখির জন্য অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। 

ফারাবী ছাড়া আর কারা এভাবে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল বা ফেইসবুকে কমেন্ট করে হত্যায় উৎসাহিত করতে চেয়েছিল তাদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল জানান।

“১০ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা আছে।”

ফারাবী শফিউর রহমান

ফারাবী শফিউর রহমান

রিমান্ডে থাকা ফারাবী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও অভিজিৎকে হুমকিদাতা ‘কিছু লোকের’ নাম জানিয়েছেন বলে মনিরুল জানান।

অভিজিৎ হত্যার দায় স্বীকার করে ‘আনসার বাংলা ৭’ নামের একটি গ্রুপ টুইট করেছিল। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ।

মনিরুল দাবি করেন, এই হত্যারহস্যভেদে তাদের তদন্তের সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এফবিআই কর্মকর্তারা।

তিনি আরও বলেন, “অভিজিৎ রায় যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, ভবিষ্যতে এফবিআই চাইলে তাদের নিজ দেশেও এই ঘটনায় মামলা করতে পারে। তারা তখন যদি আমাদের সহায়তা চায়, আমরা করব।

“তাছাড়া এখন হত্যার কোনো আলামত তারা যদি বিদেশে নিয়ে পরীক্ষা করতে চায়, সেই সুযোগও রয়েছে।”

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এই হত্যাকাণ্ডে দুজন গ্রেপ্তারের যে তথ্য জানিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে মনিরুল বলেন, “আরেকজনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছিল। হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য প্রমাণ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ের কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে।

হামলায় আহত বন্যাকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামীর মতো তিনিও ওই দেশের নাগরিক।

SCROLL FOR NEXT