ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

|

ছবি: পিএমও

)<div class="paragraphs"><p>ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। </p></div>
বাংলাদেশ

সরকারও সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়: ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী

Byনিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন ‘যুক্তরাজ্যের মত অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চায়’ এবং সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

বাসস জানায়, শনিবার লন্ডনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলির সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমি সবার সহযোগিতা চাই।”

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আওয়ামী লীগ সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কেউ যাতে নির্বাচনে কারচুপি করতে না পারে, সেজন্য ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স তৈরি করা হয়েছে।

“সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট স্বাধীন ও শক্তিশালী করা হয়েছে।
আমরা ওয়েস্টমিনস্টারের আদলে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, যার অনুসরণে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করেছে।”

ব্রিটিশ রাজার অভিষেক উপলক্ষে যুক্তরাজ্য সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকছেন লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে। শনিবার সেখানেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এবং তার স্ত্রী সুজানা স্পার্কস।

প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পরে এক ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

তিনি জানান, ওই বৈঠকে বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের প্রসঙ্গ তোলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেভারলি।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সরকার চায় সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তার দল সব সময় দেশে গণতন্ত্র বজায় রেখেছে। দেশের গণতন্ত্রকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি দিয়েছে।

সরকার ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স তৈরি করলেও উল্টো বিএনপি ভোট কারচুপির জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার যুক্ত করে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল বলে বৈঠকে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন শেখ হাসিনা।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডনে এলে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জেমস ক্লিভারলি বলেন, বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর হয়েছে এবং দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে এ সম্পর্ক ততই জোরদার হচ্ছে।

মোমেন জানান, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন ক্লেভারলি।

আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভূয়সী প্রশংসা করেন। রানি সবসময় তার এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানার খোঁজ-খবর নিতেন, সে কথাও স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

বৈঠকে দেশের জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও রোহিঙ্গা সঙ্কট, জলবায়ু ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মত বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও জানান।

মোমেন বলেন, কমনওয়েলথ লিডারস ইভেন্টে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী রাজাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং রাজাও তাতে ইতিবাচক সাড়া দেন।

অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

নতুন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০০ জন নেতার সঙ্গে সরাসরি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে ছিল সেই রাজকীয় অনুষ্ঠান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ মে লন্ডনে পৌঁছান। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের ৫০ বছরের অংশীদারত্ব অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং তার আগে জাপানে দ্বিপক্ষীয় সফর করেন। ৯ মে তার দেশে ফেরার সূচি রয়েছে।

আরও পড়ুন-

SCROLL FOR NEXT