উইসকনসিনে ভোট পুনঃগণনা হচ্ছে

ফলাফল নিয়ে সৃষ্ট ধূম্রজালের অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের ভোট পুনরায় গণনা হচ্ছে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2016, 04:11 AM
Updated : 26 Nov 2016, 04:52 AM

এই রাজ‌্যে পুনঃগণনায় ফল হিলারি ক্লিনটনের পক্ষে গেলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পক্ষে তা বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।

১০টি ইলেকটোরাল ভোটের এই রাজ‌্যে ঘোষিত ফল অনুযায়ী ২৭ হাজার ভোটে জিতেছেন ট্রাম্প। পুনঃগণনায় তার এই ১০টি ইলেকটোরাল ভোট চলে গেলেও ফলাফলে হেরফের হবে না।

কেননা ২৯০ ইলেকটোরাল ভোট জিতে সুস্পষ্ট ব‌্যবধানে এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। হিলারির ইলেকটোরাল ভোট সংখ‌্যা ২৩২।

উইসকনসিনে চিত্র বদলালে ট্রাম্পের ভোট ১০টি কমে হিলারির ১০টি বাড়লেও প্রয়োজনীয় ২৭০টি থেকেই যাচ্ছে ট্রাম্পের।

উইসকনসিনে অন‌্য দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টাইন পেয়েছেন ৩১ হাজার ৬ ভোট, গ্যারি জনসন পেয়েছেন এক লাখ ৬ হাজার ভোট।

গ্রিন পার্টির প্রার্থী স্টাইনের আবেদনের ভিত্তিতে ২৫ নভেম্বর শুক্রবার নির্বাচন কমিশন পুনরায় ভোট গণনায় রাজি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রশাসক মাইকেল হ্যাস সাংবাদিকদের বলেছেন, “১৩ ডিসেম্বরের মধ্যেই পুনরায় গণনার কাজ সম্পন্ন হবে।”

উইসকনসিন রাজ্যের মতো পেনসিলভেনিয়া এবং মিশিগান রাজ‌্যের ভোট নিয়েও বিতর্ক উঠেছে। এ দুটি রাজ্যের ভোটও পুনরায় গণনার জন্যে প্রয়োজনীয় ফি সংগ্রহ করছেন স্টাইন।

নিজের কোনো সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও পুনঃগণনার আবেদন করার কারণ ব‌্যাখ‌্যা করে গ্রিন পার্টির এই প্রার্থী বলেছেন, “আমরা তেমন নির্বাচনে প্রত্যাশী, যার প্রতি আস্থা রাখতে পারি।”

সেই সঙ্গে পরাজিত ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারিকে সহযোগিতাও করতে চাইছেন তিনি।

পুনরায় ভোট গণনার ফি সংগ্রহের জন্যে অনলাইনে ঘোষণা আসার পর শুক্রবার সকালে নির্ধারিত ৫২ লাখ ডলার জমা দেন স্টাইন।

গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টাইন, উইসকনসিনে ভোট পুনঃগণনা হচ্ছে যার আবেদনে- ছবি: রয়টার্স

পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের ভোট পুনরায় গণনার আবেদন জানানোর শেষ সময় সোমবার এবং মিশিগান বুধবার। উইসকনসিনসহ ৩ অঙ্গরাজ্যে পুনরায় গণনায় মোট প্রয়োজন ৭০ লাখ ডলার। স্টেইন আশা করছেন, প্রয়োজনের চেয়েও বেশি তহবিল জমা হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।

১৬টি ইলেকটোরাল ভোটের মিশিগানের আনুষ্ঠানিক ফল এখনও ঘোষণা করা না হলে ট্রাম্পই জয়ী হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

পুনরায় গণনার সময় প্রতিটি ব্যালটে ভোটারের মনোভাবও পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান নির্বান কমিশনার মাইকেল হ্যাস। এই রাজ্যের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যাপারেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। সেটিরও পর্যালোচনা চলছে পৃথক আরেকটি গ্রুপের মাধ্যমে।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও নির্বাচন বিষয়ক আইনজীবী হিলারি শিবিরকে দোদুল্যমান তিনটি রাজ্য উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভেনিয়ার ভোট পুনঃগণনার দাবি তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

শুধু উইসকনসিনে পুনঃগণনায় ফল না বদলালেও যদি অন‌্য দুটি রাজ‌্যেও ভোট পুনঃগণনা হয় এবং তিনটিতে হিলারি জয় পান, তবে ফল উল্টে যাবে।

তখন ইলেকটোরাল কলেজে ২৭৮টি ভোট হয়ে যাবে হিলারির, অন‌্যদিকে ২৫৪টিতে নেমে আসবে ট্রাম্পের ভোট।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিরল সেই ঘটনাটি ঘটবে কি না, তা দেখতে পুনঃগণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

গত ৮ নভেম্বরের ভোটে জয়ী ইলেকটোরাল কলেজের সদস‌্যরা আগামী ১৯ ডিসেম্বর ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। বহু বিতর্কের পর জয়ী ট্রাম্প তার জয় ধরে রাখতে পারেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রবাসীর।