যুক্তরাষ্ট্রে ভোট: কোন বিষয়ে কার কী অবস্থান

ডেমোক্রেট আর রিপাবলিকান- মুখোমুখি দুই শিবির। মুখোমুখি তাদের দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীও। জুলাইয়ে আনুষ্ঠানিক প্রার্থিতা ঘোষণা করার পর থেকেই প্রচারের আলো হিলারি আর ট্রাম্পের উপর। চলছে ঝগড়া-বিবাদ, বিতণ্ডা, টুইট যুদ্ধ। গাধা আর হাতি মার্কার লড়াইয়ে চলছে একে অপরকে ধরাশায়ী করার আপ্রাণ চেষ্টা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2016, 04:21 AM
Updated : 8 Nov 2016, 04:22 AM

তবে কেবলই তো যুদ্ধ নয়; এ দুজনের মধ্যে যিনি মঙ্গলবারের নির্বাচনে বিজয়ী হবেন তিনিই তো আগামী চার বছর পরিচালনা করবেন প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে। সামলাবেন পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সমরকৌশল। কেমন হবে তাদের বিবেচনা? কী নিয়েই বা তাদের মধ্যে ভেদ?

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে হিলারি ও ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি এবং অবস্থান জানিয়েছে বিবিসি।

অভিবাসন

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের প্রক্রিয়া কঠোর করার দাবি তুলে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনেকেই এবারের নির্বাচনে এ ইস্যুকে ‘তুরুপের তাস’ হিসেবেও বিবেচনা করছেন।

ট্রাম্প বৈধ অভিবাসন কমানোর কথা বলছেন। নথি বা কাগজপত্র নেই এমন অভিবাসীদের দ্রুত দেশে পাঠানোর পাশাপাশি রিপাবলিকান এই প্রার্থী অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করার পক্ষে। 

নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বলেছিলেন- আমেরিকার মাটিতে থাকা ১ কোটি ১০ লাখের বেশি নথিবিহীন অভিবাসীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হবে। তিনি মুসলমানদের আমেরিকায় ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এক পর‌্যায়ে এ বক্তব্য থেকে সরে যাওয়ার কথা বললেও অভিবাসন নিয়ে নীতি বদলাননি তিনি।

ট্রাম্প আমেরিকা ও মেক্সিকো সীমান্তে দু হাজার মাইলের বেশি দীর্ঘ দুর্ভেদ্য দেওয়াল তুলে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সমালোচকেরা একে অবাস্তব এবং ব্যয়সাপেক্ষ বললেও রিপাবলিকান দল এ প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে।

অন্যদিকে হিলারি অভিবাসন প্রক্রিয়াকে সহজ করার পক্ষে। তিনি নথিবিহীন অভিবাসীদের দ্রুত নাগরিকত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বেসরকারিভাবে পরিচালিত আটক কেন্দ্রের বিরোধী ডেমোক্রেট প্রার্থী বলেছেন- দেয়াল তুলে সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি ‘মূর্খ পদক্ষেপ’।

পররাষ্ট্র নীতি

ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে হিলারিকে কট্টরপন্থি হিসেবেই বিবেচনা করা হত। তিনি ইরাকে আমেরিকান যুদ্ধের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও এখন তিনি বলছেন- আগের ওই অবস্থানের জন্য তিনি অনুশোচনা করেন।

ওবামা প্রশাসনের যারা লিবিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা চালানোর পক্ষে ছিলেন হিলারি তাদের মধ্যেও একজন। নির্বাচনী প্রচারে সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমেরিকার বিস্তৃত ভূমিকা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে আছে- বিমান চলাচল নিষিদ্ধ এলাকা জারি ও সিরীয় বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া। সিরিয়ায় স্থল সৈন্য মোতায়েনেরও বিপক্ষে তিনি।

নিউ ইয়র্কের সাবেক এ সিনেটর এরই মধ্যে সিরিয়া যুদ্ধে কুর্দি পেশমেরগা যোদ্ধাদের সশস্ত্র অভিযানে সমর্থন জানিয়েছেন। নেটো জোটে আমেরিকান ভূমিকার ঘোর সমর্থক ডেমোক্রেট এই প্রার্থী আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বজায় রাখারও পক্ষে।

হিলারি মনে করেন, নেটো জোটে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইউরোপীয় মিত্রদের অবস্থান শক্ত করা এবং রুশ শক্তির বিরোধিতা করা।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান এক্ষেত্রে বেশ উদার। তিনি রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে জোর দিতে চান। নির্বাচনী প্রচারে তিনি বলেছেন- ইউরোপ ও এশিয়ায় মিত্র দরকার আমেরিকার।

আইএস-কে পরাজিত করতে সিরিয়ার মাটিতে কয়েক হাজার স্থল সেনা পাঠানোর প্রস্তাব রয়েছে তার। রিপাবলিকান এ প্রার্থী বলছেন- ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’ করতে সবসময়ই আমেরিকার স্বার্থকে সবার উপরে রাখতে হবে।

ট্রাম্প প্রথম থেকেই ইরাক যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক পদক্ষেপের সমালোচনা করে আসছেন। তবে সন্ত্রাস মোকাবিলায় নেটোর ভূমিকা বাড়ানোর বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারির সঙ্গে একমত তিনি। এসব ক্ষেত্রে মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে আরও বেশি পয়সা আশা করেন ট্রাম্প।

তিনি বলেছেন- নেটো জোটের ব্যয়ের একটা বড় অংশ দেয় আমেরিকা। এটা ঠিক নয়। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই জোটের সদস্যদের আরও অর্থ ব্যয় করা উচিত।

শরণার্থী

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো থেকে শরণার্থী নেওয়া আমেরিকার জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছে বলে মত ট্রাম্পের। এজন্য যতক্ষণ পর্যন্ত না ‘কঠোর বাছাই’ প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত শরণার্থী গ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে।

রিপাবলিকান এ প্রার্থীর ভাষ্য, যুদ্ধের সহিংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে যারা শরণার্থী হচ্ছে তাদের জন্য নিরাপদ এলাকা তৈরির দায়িত্ব মধ্যপ্রাচ্যেরই অন্য দেশগুলোর।

অন্যদিকে হিলারি আমেরিকায় সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা বছরে ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬৫ হাজারে উন্নীত করতে চান। নির্বাচনী সমাবেশগুলোতে হিলারি বলেছেন- সহিংসতা এবং দমনপীড়ন থেকে পালানো মানুষদের স্বাগত জানানো আমেরিকার ইতিহাসের অংশ। তিনি সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চান।

জলবায়ু পরিবর্তন

হিলারি মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তন আমেরিকার নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির কারণ; এজন্য জ্বালানি শিল্পে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পক্ষপাতী তিনি। আলাস্কায় তেলের জন্য অতিরিক্ত খনন এবং কানাডা থেকে তেল আনার পাইপলাইন নির্মাণেরও ঘোর বিরোধী এ ডেমোক্রেট। তবে তেল অনুসন্ধানে খনন বন্ধ রাখতে পরিবেশবাদীদের দাবির সঙ্গে একমত নন তিনি।

ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দলীয় নির্বাচনী মার্কা গাধা ও হাতি। ছবি: রয়টার্স

পরিবেশ নিয়ে পরিস্কার কোনো অবস্থান নেই ট্রাম্পের। বিভিন্ন ভাষণ এবং টেলিভিশন বিতর্কে তিনি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের’ জন্য পরিবেশের দোহাই দেয়ার ব‌্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। ট্রাম্প পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার পক্ষে থাকলেও কমাতে চান এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশান এজেন্সির তহবিল।

মানুষের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে এই ধারণাকেও ‘ভুয়া’ মনে করেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সই হওয়া প্যারিস চুক্তি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক চুক্তিতে মার্কিন স্বার্থ বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। ক্ষমতায় গেলে এসব চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুরও প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার ইশতেহারে।  

গর্ভপাত

গর্ভপাত বিষয়ে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের অবস্থান আগের মতই- দুই মেরুতে। ২০ সপ্তাহ পর গর্ভপাত ঘটানো যাবে না এমন নিয়ম চালুর বিরোধী হিলারি। পাশাপাশি গর্ভপাত ঘটানো নারীর ওপর বিধিনিষেধ আরোপেরও বিপক্ষে তিনি।

যুদ্ধের সময় ধর্ষণের শিকার নারীদের গর্ভপাতের ব্যবস্থা করছে যেসব বেসরকারি সংস্থা, তাদের কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে অনুদান দেওয়ারও পক্ষে হিলারি। সম্প্রতি প্ল্যানড পেরেন্টহুড নামে নারীদের স্বাস্থ্যসেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থসাহায্য কাটছাঁট করারও সমালোচনা করেছেন সাবেক এই সিনেটর।  

অন্যদিকে মার্চ মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘গর্ভপাত অবৈধ করা উচিত’ বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে যেসব নারী গর্ভপাত ঘটান তাদের ‘শাস্তি’ দিতে আইনও করতে চান তিনি। ট্রাম্পের এ বক্তব্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

এক পর‌্যায়ে রিপাবলিকান প্রচার দপ্তর ট্রাম্পের ওই বিবৃতি প্রত্যাহার করে নেয় এবং বলে- গর্ভপাতের বৈধতার প্রশ্নটি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। ট্রাম্প পরে বলেন ‘ধর্ষণ, অন্যায়জনিত কোনো কারণ ও প্রসূতির জীবনসঙ্কট’ এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি ব্যতিক্রম হিসেবে গর্ভপাতকে গ্রহণ করতে রাজি আছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যম জানাচ্ছে, ধনকুবের ট্রাম্প ২০০০ সাল পর্যন্ত গর্ভপাতকে সমর্থন করে আসছিলেন। ট্রাম্পের ভাষ্য, আগে সমর্থন করলেও সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগানের মত তিনিও এখন এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেন।

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, কর…

এবারের নির্বাচনের অন্যতম আলোচিত ইস্যু ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ’। ডেমোক্রেট পার্টির বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে হিলারিও মার্কিন জনগণের জন্য সহজলভ্য অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন করতে চান।

হিলারির ভাষ্য, কোনো মার্কিনিকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার আগে অবশ্যই তার অতীত ইতিহাস বিবেচনায় নিতে হবে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে তার নির্বাচনী ইশতেহারে। বলেছেন- হোয়াইট হাউজে গেলে বিপদের মুখে থাকা সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী খানিকটা বদলে দেবেন তিনি। এই দ্বিতীয় সংশোধনীতেই যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের অস্ত্র রাখার অধিকার দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ট্রাম্প দ্বিতীয় সংশোধনী বদলে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ঘোর বিরোধী, বরং সবার জন্য অস্ত্রের অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে তুলতে চার তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বিভিন্ন হামলায় হতাহতের ব্যাপারে তার ভাষ্য- অস্ত্রধারী জনগণ দুর্বৃত্তদের সহজে ঠেকাতে পারত এবং প্রাণহানির পরিমানও কমত। 

ট্রাম্প-হিলারির মধ্যে বিতর্ক চলছে কর ব্যবস্থা নিয়েও। দু’জনই বর্তমান প্রক্রিয়ার সংস্কার চান। হিলারি চান বছরে ৫ মিলিয়নের ‍উপর আয় করছে এমন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উপর অতিরিক্ত আরও ৪ শতাংশ ট্যাক্স যোগ করতে। তিনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও সম্পদশালী ব্যক্তিদের উপর আরও করের বোঝা চাপাতে চান। হিলারি বলছেন- এসব থেকে পাওয়া অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায়।

ট্রাম্প এ চাকা ঘোরাতে চান উল্টো পথে। তিনি সর্বনিম্ন করসীমার পরিমাণ ও সম্পদ করের মাত্রা কমাতে চান।

কর্পোরেট ট্যাক্সের পরিমাণ ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করে উদ্ধৃত অর্থ দিয়ে নির্মাণ শিল্পে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউজে গেলে ট্রাম্প ১০ বছরে ২ কোটি ৫ লাখ চাকরি সৃষ্টি করারও ওয়াদা দিয়েছেন। নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করতে উদ্যেক্তাদের উৎসাহ যোগাতে ট্রাম্প কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর পাশাপাশি নিয়মনীতিও শিথিল করার পক্ষে মত দিয়েছেন।

অন্যদিকে হিলারির ইশতেহারে প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে মার্কিনিদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের করা বিভিন্ন অর্থনৈতিক চুক্তি নিয়েও নাখোশ ট্রাম্প। তার মতে, এসব চুক্তির ক্ষেত্রে আমেরিকার স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হয়নি।

রিপাবলিকান এই প্রার্থী বহুল আলোচিত ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ চুক্তির বিরোধিতা করছেন। ক্ষমতায় গেলে সই হয়ে যাওয়া নর্থ আমেরিকা ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (নাফটা) চুক্তি নিয়ে নতুন করে দর কষাকষি করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

আমেরিকার সঙ্গে চীন এবং মেক্সিকোর মত ব্যবসায়িক অংশীদাররা অন্যায় করছে বলেও অভিযোগ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক ট্রাম্পের।  

ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারিও ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ চুক্তির বিরোধিতা করছেন। একসময় এই চুক্তির কড়া সমর্থক ছিলেন তিনি। তার স্বামী বিল ক্লিনটন প্রথমবার হোয়াইট হাউজে থাকার সময়ই এ চুক্তির প্রথম খসড়া অনুমোদিত হয়েছিল। যদিও জনমত ঘুরে যাওয়ায় হিলারিকে এখন ওই চুক্তির বিরোধিতা করতে হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার ক্ষেত্রে অবশ্য দুই প্রার্থী বেশ উদার। হিলারি বলছেন, তার নীতি বাস্তবায়িত হলে মার্কিন পরিবারগুলোকে কোনো অবস্থাতেই তাদের পারিবারিক আয়ের ১০ শতাংশের বেশি শিশুদের জন্য খরচ করতে হবে না। শিশুদের বেশিরভাগ দায়িত্ব রাষ্ট্রের ঘাড়েই বর্তাবে।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের দেড় মাস সবেতন মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হবে। এ সুযোগ অবশ্য বাবারা পাবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে লবিস্টদের দৌরাত্ম‌্য কমানোরও অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প। চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর সরকারি কর্মকর্তাদের লাইসেন্সধারী ‘লবিস্ট’ হতে হলে অন্ততপক্ষে ৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে, এমন আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তার মতে, চাকরি ছেড়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা কোনো প্রতিষ্ঠানের ‘উপদেষ্টা’ বা ‘পরামর্শকারী’ হলে, তা সমগ্র সিস্টেমকে প্রভাবিত করে।

একইসঙ্গে বিদেশি সরকারের হয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের ‘লবিস্ট’ হওয়ার পথও বন্ধ করতে চান তিনি।

হিলারি ক্লিনটনও রাজনীতিতে ‘লবিস্ট’দের প্রভাব কমাতে চান। যদিও এজন্য আইন করার পক্ষে নন তিনি। বলছেন, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে এদের বিকাশ থামিয়ে দিতে হবে।

লবিস্টদের বিরুদ্ধে এ বিষোদগার করলেও, লবিস্ট ফার্মের সহায়তায় হিলারির নির্বাচনী তহবিল ‘আকাশ ছুঁয়েছে’। উইকিলিকসের ফাঁস করা এক ইমেইলে হিলারিকে বিদেশি সরকারের হয়ে কাজ করছে এমন লবিস্ট ফার্মের কাছ থেকেও অর্থ নিতে দেখা গেছে।