মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে শ’শ’ বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা

ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় দু’টি নৌকা থেকে প্রায় ছয়শ’ জনকে উদ্ধারের পরদিন ফের ৪ শতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মালয়েশিয়াও সোমবার এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাকে আটক করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 May 2015, 03:44 PM
Updated : 11 May 2015, 03:45 PM

ওদিকে, থাইল্যান্ডের জলসীমায় আরো ৮ হাজার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা শরণার্থী সমুদ্রে আটকা পড়ে আছে বলে বিবিসি’কে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইওএম)।

সংস্থাটি বলছে, সম্প্রতি মানবপাচার রোধে থাইল্যান্ড সরকারের কড়াকড়ির কারণে পাচারকারীরা নৌকা নিয়ে ভূমিতে প্রবেশ করতে চাইছে না। ফলে অভিবাসীরা এখন সমুদ্রে নৌকায় ভাসছে।

থাইল্যান্ডের মানবপাচার বিরোধী অভিযানের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি দেয়া শরণার্থীর সংখ্যাও অনেক বেড়েছে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের আশেপাশে সমুদ্রে ভেসে থাকা ১শ’র বেশি শরণার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়। পাচারকারীরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে সটকে পড়ে বলে পুলিশের ধারণা।

সোমবার মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, ১০১৮ জন বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা শরণার্থী অবৈধভাবে মালয়েশিয়া উপকূলের লাংঙ্কাউই দ্বীপে প্রবেশ করেছে। খুব সম্ভবত মানবপাচারকারীরা তাদের ছেড়ে  চলে গেছে। তাদেরকে লাঙ্কাউই হয়ে থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় নেয়া হচ্ছিল বলেই ধারণা কর্তৃপক্ষের।

লাংঙ্কাউই পুলিশ জানায়, সোমবার ভোররাতের দিকে দ্বীপের অগভীর পানিতে তিনটি নৌকা এসে পৌঁছায় এবং শরণার্থীরা মাটিতে নেমে আসে।

“খুব সম্ভবত তিনটি নৌকায় ১০১৮ জন অভিবাসী ছিল। তাদের মধ্যে ৫৫৫ জন বাংলাদেশি এবং ৪৬৩ জন রোহিঙ্গা। ওই দলে ৯৯জন নারী ও ৫৪টি শিশুও রয়েছে।” ওই এলাকা দিয়ে আরো অভিবাসী বোঝাই নৌকা আসবে বলে ধারণা কৃর্তপক্ষের।

ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষ রোববার আচেহ উপকূল থেকে ৬০০ অভিবাসী এবং সোমবার সকালে আরো চারশ’র বেশি অভিবাসীকে উদ্ধার করে। তাদেরকে আশ্রয়শিবিরে নিয়ে খাবার এবং চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি থাইল্যান্ডের জঙ্গলে অভিবাসীদের গণকবরের খোঁজ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সমুদ্রপথে মানব পাচার নিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়।

আইওএম’র এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের প্রধান জেফ লাবভিতাজ বলেন, “মানবপাচার নিয়ে হৈচৈ শুরু হওয়ার পর গত সপ্তাহ থেকে থাইল্যান্ড সরকার দেশ জুড়ে ব্যাপক পুলিশী অভিযান শুরু করে। যে কারণে মানবপাচারকরীরা তাদের নৌকা নিয়ে সমুদ্রেই অবস্থান করছে।”

“মনে হচ্ছে অভিবাসী বোঝাই নৌকা আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। হয়ত কেউ পথে আছে এবং কেউ উপকূল থেকে কিছুটা দূরে সমুদ্রে অবস্থান করছে। পাচারকারীরা আগে লোকজনকে দূর্গম এলাকায় আটকে রেখে অর্থ আদায় করত। এখন সে কাজটা তারা সমুদ্রে অবস্থান করে করছে। অনেক মানুষ সমুদ্রে ভাসছে। এতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। অভিবাসীদের এখন কোথাও যাওয়ার উপায় নেই।”